রাজ্য

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় পুলিশের ভূমিকায় সন্তুষ্ট থাকা দরকার সাধারণ মানুষের।

মৃত্যুঞ্জয় সরদার:ভারতের মাটিতে নিজের আধিপত্য বিস্তার করেই চলেছে নোভেল করোনা ভাইরাস। বাড়ছে আক্রান্ত, মৃত্যুর সংখ্যা। সংক্রমণ রুখতে দেশের সর্বত্র লকডাউন ঘোষণা ফলে পুলিশ সক্রিয় হয়ে এই বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নিজের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে।রাজ্যের সর্বত্র জায়গাতে কোথাও পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে ,কোথাও কিছু ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।এ নিয়েই পুলিশ সম্পর্কে মানুষের কোথাও ভুল ব্যাখ্যা, কোথাও প্রশ্নচিহ্নের মুখে, কোথাও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আঙ্গুল তুলেছে সাধারণ মানুষ। পাগল তার নিজের ভালোটা বোঝে,আজকের যুগের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তিরা তাদের নিজেদের ভালোটা বুঝতে পারছেনা। আর সেই কারণেই পুলিশকে ভুলবুজে জনসাধারণ। পুলিশ তো আপনার আমার কারোর না কারোর বাড়ীর সন্তান। আমাদের মতন একজন মানুষ, তাহাদের পরিবার আছে , তাদের কথা আপনারা একবার ভেবেছেন। করুণা ভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেও, এমনি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে তারা নিজের পরিবারকে ছেড়ে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নেমেছে আপনার আমার জন্য।আর সেই কারণে আপনারা ভুল বুঝছেন এটা সত্যি বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাজ নয়। সারা পৃথিবীর কোটি সংকটময় পরিস্থিতি করোনাভাইরাস কে নিয়ে, এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ এটা করতে বাধ্য হয়েছে। কারন মানুষ বাঁচানো ছিল তাদের আসল উদ্দেশ্য।মানুষের তার নিজের ভুলটা নিজে বুঝতে পারছে না। কোন কারন ছাড়াই লকডাউন এর পরে কেন বাইরে বেরোচ্ছেন অকারণে,আর সেই কারণেই তো বাধ্য হয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করছে এবং গ্রেফতার করতে হচ্ছে। পুলিশ তো পারতো তার জীবন বাঁচানোর জন্য নিজেদেরকে ঘর বন্ধ করে রাখতে। পুলিশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অপরের জীবন বাঁচাতে জন্য বাধ্য হয়ে পথে নামতে হচ্ছে, আর পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য লাঠিচার্জ তো করতেই হয়েছে, সেটা সকল মানুষের ভালোর জন্য। আর এতে মানুষ কেনইবা পুলিশের ভুল বুঝছে, এভাবে ভুল বুঝবেন না সকলের উচিত পুলিশকে এই সময়ে সাহায্য করা। ইতিমধ্যে লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩১ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত করার কথা ঘোষণা করেন তিনি। কিন্তু বাড়তি চার দিনের জন্য তৈরি হওয়ার আগেই রাত আটটায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়ে দিলেন, মঙ্গলবার রাত বারোটা থেকে ২১ দিনের জন্য ঘরবন্দি থাকতে হবে গোটা দেশকে। অর্থাৎ, ১৪ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বেরোতে পারবেন না। ঘরের কোণে নববর্ষ কাটাবে বাঙালি! তার চেয়েও বড় কথা, বিপদে পড়বেন দিন-আনা দিন-খাওয়া মানুষেরা। একা থাকেন এমন বয়স্ক মানুষ বা অসুস্থদের সঙ্কটও কম নয়। তাঁদের জন্য কোনও আশ্বাসবাণী নেই মোদীর বক্তৃতায়। এর ফলে বহু মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে, অনাহারে মারা যাবে এমনই পরিস্থিতি! ঝড়খালি গৌতম মন্ডল তেমনই পরিস্থিতিতে অনাহারে বেঁচে থাকার থেকেই আত্মহত্যা করাই ভালো! ছেলে মেয়েদের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার মত টাকা তার কাছে নেই, ব্যাংকে তো যাওয়ার কথা ভাবতেই পারেনা তারা! সুন্দরবনের জঙ্গলে মধু ও মাছ সংগ্রহ করে তাদের জীবন-জীবিকা চলত। অন্যদিকে সুন্দরবনের বোর্ড মালিকরা অবস্থা আরো করুণ হতে চলেছে,এইসব পরিবারগুলো আজকের সময় দাঁড়িয়ে ভয়ঙ্কর সংকটের মধ্যে পড়ে গিয়েছে।কেউ কে উ বলছে জীবন বাঁচাবো কিভাবে ,এর থেকে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর উপায় নেই তাদের কাছে।যাদের কাছে টাকা পয়সা আছে, তাদের পরিস্থিতি তো তেমনই খারাপ হওয়ার মতো নয়। দিন আনে দিন খায় মানুষগুলোর অবস্থা বুঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাজার টাকা মাসিক দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে, সেটা কার পৃথিবীতে তো অনেক মানুষ আত্মহত্যা করে বসবে।ইতিমধ্যে সরকারি ভাবে এইসব মানুষের হাতে কিছু টাকা পৌঁছে দিলে হয়তো এদের জীবনটা বেঁচে থাকবে এমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও। তবে সুন্দরবন সহ রাজ্যের বিভিন্ন গ্রাম গঞ্জের পরিস্থিতি ঠিক একই রকম।এর হাত থেকে রেহাই করতে পারেন একবার তো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুলিশ প্রশাসন। অন্যদিকে সুন্দরবনসহ রাজ্যের প্রতিটি গ্রামের চিত্র একটু বেপরোয়া। যুবক ছেলেরা অকারণ রাস্তায় ঘোরাঘুরি, আড্ডা, বাইকে চড়ে হাওয়া খাওয়া চলছিল। পুলিশ, প্রশাসন তৎপর হওয়ার পর হুঁশ ফেরে জনতার। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে এমনটা করতে হয়েছে, সেটা সোমবার বিকেলেও বোঝেননি কিছু মানুষ। মঙ্গলবার লকডাউনের দ্বিতীয় দিনও ছবিটা কার্যত একই থাকল জেলার বিভিন্ন অংশে। এটা ছুটির মেজাজে থাকার সময় নয়, মারণ ভাইরাস কোভিড-১৯ রুখতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নিজেদের গৃহবন্দি রাখা আবশ্যিক, সেটা কিছু মানুষকে বোঝাতে পুলিশকে শক্তি প্রয়োগের রাস্তায় হাঁটতে হল। কিছু লোককে কার্যত তাড়িয়ে বে়ড়াতে হল দিনভর।লক-ডাউন’-এর সময় ওষুধ, মুদিখানা, আনাজ দোকান, ফল, মাছ, মাংস, পাউরুটি এবং দুধের দোকান ছাড়া বাকি সব ধরনের দোকান বন্ধ থাকার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু, গোটা জেলা জুড়ে এর বাইরেও সকাল থেকে বেশ কিছু দোকান খোলা ছিল। প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহের নামে বাজারগুলিতে ভিড় জমানো তো ছিলই। রাস্তার ধারে চায়ের দোকানে পাড়ার মোড়ে, রক, নাটমন্দির, পার্কের পাঁচিলে ক্লাবের দাওয়ায় আড্ডা জমল। অকারণ বাইকে চড়ে কেমন বনধ হল, দেখার হিড়িকও ছিল। তাঁদের বোঝায় কে, নিজের, পরিবারের ও প্রতিবেশীর সুরক্ষার জন্যই বাড়িতে থাকতে হবে। এত ভাবে মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করার পরেও রাস্তায় নেমেছে একশ্রেণীর মানুষ।তাদেরকে সচেতন করতে পুলিশের কঠোর ভূমিকা পালন করতে হলো। কেন জানেন?
করোনার আতঙ্ক রয়েছে সারা ভারতবর্ষের মানুষ। শুধু পেটের দায় ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ছে কিছু মানুষ, ঝড়খালি সুন্দরবন অসহায় গরীব মানুষগুলো তাদের জীবন জীবিকা নির্ভর করবে কিভাবে।সুন্দরবনের নদী থেকে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে, চাল, ডাল, সবজি ,কিনলে তাদের খাওয়া জোটে, তো তারা অসহায় চাল ,ডাল কেনার পয়সা ঘরে নেই, এদের জন্য সরকারের কোন ব্যবস্থা আছে কি? লকডাউন এর ফলে এরা সুন্দরবন নদীতে মাছ ধরতে যেতে পারছে না, অন্যদিকে দুবেলা-দুমুঠো খাবার জন্য টাকা পয়সা জোগাড় করার মত সামর্থ্য নেই, এই অসহায় মানুষেরা আত্মহত্যা ছাড়া উপায় নেই! কিন্তু তা সত্ত্বেও লকডাউনের সরকারি নির্দেশ মানতে বহু লোকের আপত্তি। কোচবিহার, কার্শিয়াং, শিলিগুড়ি, সোনারপুর, বারাইপুর, বাসন্তী, গোসোবা, ক্যানিং এমনকী কলকাতা— সর্বত্র রাস্তায় দেখা গেল এক শ্রেণির মানুষকে। আর তাঁদের বাগে আনতে রাস্তায় নামল পুলিশ।করোনা ভাইরাসের কবল থেকে বাঁচতে হবে! তাই মানুষের স্বার্থেই আর সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। কার্যকর হয়েছে লকডাউন। কিন্তু নিজের ভালটাও বুঝলেন না অনেকেই। লকডাউন উপেক্ষা করে রাস্তায় বার হলেন বহু মানুষ। তাঁদের ঘরে ফেরানোর কাজ করল পুলিশ। তবে কোথাও আবার বেপরোয়াদের বাগে আনতে চালাতে হল লাঠিও!পুলিশের অনেক বোঝানো সত্ত্বেও রাস্তা থেকে সরতে রাজি ছিলেন না কেউ কেউ। যেরকমটা দেখা গেল শিলিগুড়ির ভেনাস মোড়ে। এরপরই লাঠি চালাতে শুরু করে পুলিশ,একইভাবে রাজ্য স্তরের সর্বোচ্চ জায়গায় পুলিশের লাঠিচার্জ সে নিয়ে অনেকেই বিরোধিতা করছে কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য পুলিশ এই ভূমিকা পালন করছে, এটা আপনার আমার সবার ভালো হবে। নামানো হয় আধা সেনাও। দার্জিলিং জেলার কার্শিয়ঙেও সরকারি নির্দেশ অমান্য করে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন অনেকে। সেখানে তাঁদের বুঝিয়ে বাড়ি পাঠায় পুলিশ। দিঘায় অবশ্য আলাদা ছবি। কয়েকদিন আগেও যেখানে পর্যটকদের ভিড় দেখে অনেকে সংক্রমণের আশঙ্কাকরছিলেন, আজ সেই সৈকত ছিল কার্যত খালি। কিন্তু দিঘার আশপাশের কিছু দোকানপাট খোলা ছিল। পরে বন্ধ করে দেয় পুলিশ। রাস্তায় বার হওয়ায় কোথাও আবার খুলে দেওয়া হল অটো রিক্সার চাকার হাওয়া।পূর্ব মেদিনীপুরের এগরাতেও লকডাউন উপেক্ষা করে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন অনেকে। কিন্তু সেখানে প্রশাসনের ভূমিকা নজরে পড়েনি।কোচবিহারের বিভিন্ন জায়গায় মানুষজন রাস্তায় নামলেও, তাঁদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। তেমনি চিত্র রাজ্যের প্রতিটা গ্রাম ও শহরের।পুলিশের আরও কঠোর হলে হয়তো একদিন করোনা এভাবে নির্মূল করা যাবে। একমাত্র ঘরবন্দি ছাড়াই কোনো রাস্তা নেই। তাই আগামী দিনে কার্ফু জারি হতে চলেছে ভারতবর্ষজুড়ে , তেমনি কথা ঘোষণা করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।তিন সপ্তাহ লকডাউনের কারণ ব্যাখ্যা করে আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  ‘‘করোনা সংক্রমিত অন্যান্য উন্নত দেশের উদাহরণ দেখে এই পদক্ষেপ করা ছাড়া অন্য কোনও রাস্তা খোলা ছিল না। এই  ২১ দিন সময় ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তা না-হলে দেশ ২১ বছর পিছিয়ে যাবে।’’ মোদীর বক্তৃতার পরেই  জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ২০০৫-এর আওতায় লকডাউনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ফলে রাজ্যগুলিকেও তা মেনে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা জারি করতে হবে। তবে রাজ্য চাইলে ছাড়ের আওতায় থাকা জরুরি পরিষেবার তালিকা রদবদল করতে পারে। নবান্নের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, বুধবার প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা করে নির্দেশিকা জারি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
গত বৃহস্পতিবার তাঁর বক্তৃতায় দেশের মানুষের কাছে ১৪ ঘণ্টা সময় চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। জনতা কার্ফুর ডাক দিয়েছিলেন রবিবার সকাল সাতটা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত। কিন্তু রবিবারের পর থেকে ধীরে ধীরে লকডাউন শুরু হয় বি‌ভিন্ন রাজ্যে। বন্ধ করে দেওয়া রেল চলাচল। শাসক শিবির সূত্রে বলা হয়েছে, রাজ্যগুলিতে লকডাউন হলেও, যে ভাবে লোকে রাস্তায় ঘুরতে বেরিয়েছেন, দোকানের সামনে অহেতুক ভিড় করেছেন, তাতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা। তাই কড়া সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সরকার।  মোদী বলেন, ‘‘এর ফলে আমাদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে ঠিকই, কিন্তু মানুষের প্রাণ আগে। তাই আজ রাত বারোটা থেকে ঘরের বাইরে লক্ষ্মণরেখা টেনে দেওয়া হল। যার বাইরে গেলেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ কেন ২১ দিনের লকডাউন? স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস কোনও ব্যক্তির শরীরে প্রবেশের  পর দু’সপ্তাহ পর্যন্ত তার উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এই সময়ে কারও শরীরে উপসর্গ দেখা যায়। কারও দেখা যায় না। বিশেষজ্ঞদের মতে, যাঁদের দেখা যায় না, তাঁদের নিয়েই বেশি ভয়। মোদীর কথায়, ‘‘এমন ব্যক্তিরা সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে হাজারের বেশি লোককে সংক্রমিত করতে সক্ষম।’’স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, যে হেতু  এই ভাইরাস মাঝে মধ্যেই মিউটেশনের মাধ্যমে চরিত্র বদলাচ্ছে, তাই ঝুঁকি না-নিয়ে দু’সপ্তাহের পরিবর্তে একবারে তিন সপ্তাহ লকডাউনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশা, এই লকডাউনের ফলে লোকে রাস্তায় কম বার হবে। সামাজিক দূরত্ব বাড়বে। তাতে এক দিকে যেমন সংক্রমণ রোখা  সম্ভব হবে, তেমনই আক্রান্তদের ভাল করে চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যাবে। কিন্তু মোদী যে রকম একতরফা ভাবে লকডাউনের কথা ঘোষণা করেছেন, তাতে অসন্তুষ্ট বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা না-করে লকডাউন ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত। রাতে অবশ্য লকডাউন নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্র, ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা এবং স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। 
প্রশ্ন উঠেছে চার ঘণ্টারও কম সময় দিয়ে ২১ দিনের জন্য লকডাউন জারি করার যৌক্তিকতা নিয়েও। অনেকেই বলছেন, ধাপে ধাপে লকডাউনের সময়সীমা বাড়ালেই ভাল হত। তাতে মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়াত কম। গরিব মানুষেরা এত দিন লকডাউনের ধাক্কা কী ভাবে সামলাবেন, প্রশ্ন সেটাই। তাঁদের সুরাহা নিয়ে একটি শব্দও নেই প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায়। অন্যদিকে রাজ্যের সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে নিজের জীবন ঝুঁকি রেখেও পথে নামলেন!করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি চিকিৎসক-সহ স্বাস্থ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের মনোবল বাড়াতে মঙ্গলবার শহরের প্রায় সব ক’টি মেডিক্যাল কলেজ, রাজারহাট কোয়রান্টিন কেন্দ্র এবং আইডি হাসপাতাল ঘুরে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকের শেষে প্রথমে আর জি কর হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই সেখানে করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। আগামী দিনে রাত্রি-আবাসে শয্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পরিকাঠামোগত কী সমস্যা রয়েছে, তা নিয়ে উপাধ্যক্ষ মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। জানান, লকডাউনের জেরে হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতে অসুবিধার কথা মাথায় রেখে হোটেলে থাকা এবং গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পর মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের দু’টি বাক্স কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, এর সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের সম্পর্ক নেই। এটা আলাদা ভাবে দেওয়া হল।মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরবর্তী গন্তব্য ছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। সেখানে ছিলেন স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। এই হাসপাতালকে করোনা হাসপাতালে পরিণত করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সে বিষয়ে দেবাশিসবাবুর পাশাপাশি অধ্যক্ষা মঞ্জুশ্রী রায়ের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পর এনআরএসে পৌঁছে অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায় এবং উপাধ্যক্ষ সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন। করোনায় রাজ্যের প্রথম মৃতের সহকর্মী এনআরএসের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজ নেন মমতা। তবে আজকের দিনেও আরো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি পরিনিতি হচ্ছে, সমস্ত সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকদেরও ঘরবন্দি থাকতে হচ্ছে লকডাউন এর ফলে,এমনই পরিস্থিতিতে পুলিশ প্রশাসন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও দেশের প্রধানমন্ত্রী এদের পাশে থাকা খুব প্রয়োজন। তা না হলে এই সঙ্কট–‌সময়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা এবং ঠিক সময়ে ঠিক খবরটি পৌঁছে দেওয়ার কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই কাজের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর মধ্যে পড়ে:‌
‌ছাপাখানা এবং খবরের কাগজ ও পত্রিকা পৌঁছোনোর পরিকাঠামো।
সব টিভি চ্যানেল, ডিজিটাল মিডিয়া, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, সোশ্যাল মিডিয়া, টেলিপোর্ট ও ডিএসএনজি।ডিটিএইচ ও এইচআইটিএস, সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম ও তার দেখভাল।এফএম/সিআরএস নেটওয়ার্ক।এমএসও নেটওয়ার্ক ও কেব্‌ল অপারেটররা।সংবাদ সংস্থাগুলি।কোভিড–‌১৯ ঠেকাতে বিধিনিষেধ জারির কথা বিবেচনা করা হলে, নীচের পরিষেবাগুলি যাতে চালু থাকে, সেজন্য রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে:‌যে–‌সব সংস্থা এই পরিষেবা দিচ্ছে, তাদের ব্যবস্থা পুরোপুরি সচল রাখার অনুমতি চাই।
সরবরাহ ও বণ্টনে যাতে বাধা না পড়ে, নিশ্চিত করতে হবে।পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার কর্মীরাই যাতে সব কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।
পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার শংসাপত্র পাওয়া। কর্মীদের যাতায়াতে অনুমতি প্রদান।
সংবাদমাধ্যম, ডিএসএনজি এবং অন্য সব পরিষেবা প্রদানকারী কর্মীদের যানবাহনের যাতায়াত অনায়াস করতে হবে।তবে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠতে পারে কী কারণে এই লকডাউন? কোনও দেশ খুব জরুরী পরিস্থিতির  সম্মুখীন হলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে ও সেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতেই লকডাউন ঘোষণা করা হয়। তবে লকডাউনের জেরে পরিবর্তন হতে পারে জনসাধারণের জীবনযাত্রা। এর জেরে দেশের প্রতিটি রাজ্যে ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি পুরোপুরিস্তব্ধ। জরুরি পরিষেবা ছাড়া এই সময় আর কিছুই পাওয়া যাবে।সেই কারণেই পুলিশ রাজ্যজুড়ে কঠোর ভূমিকা পালন করছে,কোন উপায় করোনাভাইরাস কে আটকাতে পারে তেমনি ব্যবস্থা বা পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার।ফলে সাধারণ মানুষ অনেকেই মনে করছে এতে তাদের বিপদ আরো বাড়ছে, কিন্তু এছাড়া তো আর কোন উপায় নেই করোনা ভাইরাস আর আটকাতে।যাদের সত্যিকারে আর্থিক অনটনের মধ্যে রয়েছে, তাদের খাবার পয়সা টুকু নেই তাদের জন্য উপায় কি?অসহায় সাধারন মানুষগুলো সব কিছুতেই কেমন যেন একটা ভ্যাবাচ্যাকা মেরে গেছে।করোনাভাইরাস আটকাতে পুলিশ যেমন কঠোর থেকে কঠোর হওয়া উচিত,তেমনি অসহায় গরীব মানুষের কথা ভেবে, তাহাদের কাছে কিছু অর্থ পৌঁছে দেওয়া উচিত বলে মনে করছে এক শ্রেণীর রাজনৈতিক নেতারা। বিলাসবহুল রাজনৈতিক নেতা কোন দিনের জন্য অসহায় মানুষের কথা ভাবার সময় পায়নি, এমনই পরিস্থিতি কি ভাবার মত কেউ আছে। এতদিনে যাদেরকে পায়ের তলায় রেখে রাজনীতির দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তারা যদি দুবেলা-দুমুঠো না খেতে পেয়ে মরে এদের একটুও কষ্ট হবে না।সারা ভারতবর্ষে তথা রাজ্যজুড়ে গরীব মানুষের জন্য এত কিছু করার পরেও মানুষ কেন আজ দিন আনে দিন খায়,কেন বা মানুষের কলকাতার ফুটপাতে বসবাস করতে হয়। কেন বা গ্রামের অনেক মানুষের ঘরে মাথার উপরে ছাউনি নেই,সেই বসবাস করতে হচ্ছে,এতদিন তো এদের পাশে কেউ ছিল না ।আজ অতি সংকটময় পরিস্থিতি সত্যিই কি এদের পাশে কেউ আছে, এটা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করতে পারছে না অনেকেই।একদিকে করনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা যেভাবে দেশে বেড়ে চলেছে, অন্যদিকে অনাহারে থাকার ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা। এবং অনেকেই আত্মহত্যা করবে তেমনি কথা উঠে আসছে রাজ্যের বিভিন্ন স্তর ।তেমনি পরিস্থিতি পড়তে হবে আগে কোনোদিন ভাবতে পারিনি সাধারণ অসহায় মানুষগুলো। তেমনি পরিস্থিতি রয়েছেন শহরবাসীরা।দৈনিক ছবিটা যেন মুহূর্তের মধ্যে পাল্টে দিচ্ছে পুলিশ প্রশাসন।শহরবাসীর চেনা অভ্যাস বদলাতে বহু ক্ষেত্রেই কড়া হতে হয়েছে পুলিশকে। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ১০০৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মোটামুটি চার জনের বেশি লোকের ভিড় দেখলেই ব্যবস্থা নিতে হবে— এই নীতি নিয়েই শহরবাসীকে সামলাতে পথে নেমেছিল পুলিশ। সিএএ-বিরোধী ধর্নায় আর স্লোগানে স্লোগানে সরগরম পার্ক সার্কাসের মাঠের ছবিটাও অন্য রকম ছিল এ দিন সকালে। পার্ক সার্কাসের মাঠের তিনটি গেট ছিল বন্ধ। সামনের গেটে পাহারায় ছিল পুলিশ। ভিতরে কার্যত জনশূন্য ধর্না মঞ্চে অবস্থানকারীরা অনেকে নিজেদের নাম লিখে গিয়েছেন। সকালের দিকে অবশ্য শহরের বেশ কয়েকটি পাড়ায় বাজার খুলেছিল। কয়েকটি এলাকায় চা-জলখাবারের দোকানগুলিকে কিছু ক্ষণ ছাড় দেয় পুলিশ। অ্যাপের মাধ্যমে খাবার সরবরাহকারী ডেলিভারি বয়দেরও বিক্ষিপ্ত ভাবে দেখা গিয়েছে। পুলিশের দাবি, খাবার কেনা বা বাজার করার মতো প্রয়োজন মিটিয়ে মানুষ যাতে তাড়াতাড়ি সরে যান, সে দিকেই খেয়াল রাখা হয়েছিল।এতকিছু করার পরে কি পর্নো ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পাবে দেশবাসী। এ প্রশ্নের উত্তর নেই আজও সাধারণ মানুষের কাছে। কেউ কেউ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অবান্তর সমালোচনা করছে,কিন্তু করো না ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচানোর উপায় ছাড়া অন্য কিছু নেই পুলিশের কাছে।আর সে কারণেই লকডাউন মারতে বাধ্য করছে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের একাংশ।কেন্দ্র তথা রাজ্যের সাধারণ মানুষের একাধিক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে সংবাদ জগতকে,তাদের বক্তব্য হয়তো আমরা তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছিনা। তবে যতটুকু আভাস মিলেছে সেটুকু আজ আমার কলমে বলে শেষ করতে চাইছে। লকডাউন মেনে চলার পরও সকলের মনে হতে পারে এই রোগের প্রভাব কমবে কিনা? সেই উত্তরে চিকিৎসক-সহ বিশেষজ্ঞরা জানান, এই রোগ নিরাময়ে এখনও কোনও ওষুধের আবিষ্কার না হওয়ায় রোগের সংক্রমণ কমাতে বাড়িতেই থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এতে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভবনা কম, ফলে দিনে দিনে কমবে আক্রান্তের সংখ্যাও।তাই সরকার থেকে নিয়ম করে বাড়িতে থাকার জন্য এই লকডাউন ঘোষণা।
এই মুহূর্তে ভারতে মৃতের সংখ্যা ১৩। আক্রান্ত ৬০০’র পেরিয়েছে। এ রাজ্যে নতুন করে দু’জনের শরীরে COVID-19 জীবাণু পাওয়ায়, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই সংকটের মোকাবিলা করছে রাজ্য সরকার। এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্যে গিয়ে এলেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার এক সংবাদসংস্থাকে সৌরভ বলেন, “সরকার যদি চায় তাহলে আমরা ইডেনের সব সুযোগ সুবিধা তাঁদের হাতে তুলে দিতে পারি। এতে অসুবিধার কিছু নেই। এই মুহূর্তে যেটা দরকার, সেটাই আমরা করব।” এর আগেই অবশ্য সৌরভ সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশবাসীর উদ্যেশ্যে সতর্কবার্তা দেন। তিনি বলেন, “আমরা খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। প্রত্যেক রাজ্যের সরকার এবং কেন্দ্র যে নির্দেশিকা দিচ্ছে, তা পালন করুন। এই সময় বাড়িতে থাকাটা খুব জরুরি। দয়া করে বাড়িতে থাকুন, এমন ভাববেন না যে আপনার কিছু হবে না। কারণ, এটা একবার চলে এলে আর কোনও রাস্তা থাকবে না।”

Related Articles

Back to top button