ভাইরাসের আতঙ্কে থানাতে ফোন।
করোনা নিয়ে আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দিনের যে কোনও সময়ে ঘনঘন হাঁচি বা কাশি হলে পড়শিরা থানায় ফোন করছেন। যেমনটা ঘটেছে জলপাইগুড়িতে। শুক্রবার থেকে পরের পর ফোন আসতে শুরু করেছে কোতোয়ালি থানায়। এসব হচ্ছেটা কি, কোন কিছু বোঝার উপায় নেই। মানুষের তো ভয় রাখার জায়গায় নেই,অসহায় মানুষগুলো পুলিশের উপরে ভরসা রাখতে শুরু করেছে।করোনাভাইরাস নিয়ে পুলিশের ঘুম ছুটে চলেছে বিভিন্ন জেলায়। এইতো সেদিন নাগরাকাটায় থানায় এসে হাজির এক আদিবাসী মহিলা। তিনি হরিয়ানা থেকে ফিরেছেন বলে দাবি করে জানান জ্বরে আক্রান্ত, শ্বাসকষ্টও রয়েছে। থানায় এসে সাহায্য চান তিনি। পুলিশ তাঁকে শুল্কাপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করায়। রাত তাঁকে হোম কোয়রান্টিনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর জেলা জুড়েই বিভিন্ন থানায় এমন বহু ফোন আসছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, “সন্দেহভাজন করোনা রোগীর খবর দিয়ে অনেকেই ফোন করছেন, থানায় জানাচ্ছেন। বিষয়গুলি আমরা গুরুত্ব দিয়েই দেখছি। সন্দেহভাজন রোগীকে গিয়ে সরকারি নির্দেশ মতো পদক্ষেপ করতে বলছি। নজরও রাখছি।” তবেই এক পুলিশ অফিসারের কথায়, “এতদিন থানার ফোন তুলে চুরি হওয়া, বাড়িতে ডাকাত পড়ার কথাই শুনে এসেছি। এখন ফোন করে লোক বলছে, অমুকে খুব কাশছে, করোনা হতে পারে স্যার। ধরে নিয়ে যান।” খানিকটা বিরক্ত হয়েই ওই অফিসার বললেন, “যেতেও হচ্ছে। না হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখে দিচ্ছে পুলিশ কাজ করে না।”বুধবার সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় ফোন আসে, শহরের আনন্দপাড়ার এক আবাসনে আমেরিকা ফেরত দু’জন রয়েছেন। পুলিশ পৌঁছতে খানিকটা দেরি হওয়ায় এলাকার বাসিন্দাদের কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখালেখি শুরু করেন। শেষে পুলিশ পৌঁছয়। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার ওই দুই বাসিন্দাকে বাড়ি থেকে কোনওভাবেই বের না হতে নির্দেশ দিয়ে আসেন। আনন্দপাড়া থেকে অফিসারেরা ফিরতে না ফিরতেই পুলিশকে জানানো হয় পোস্ট অফিস মোড় লাগোয়া এক ব্যবসায়ীর নাক দিয়ে সমানে জল গড়াচ্ছে। চিকিৎসকের কাছে যেতে বললেও তিনি যাচ্ছেন না। বৃহস্পতিবার সকালে থানায় ফোন আসে নেতাজিপাড়ায় এক ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত। থানার ল্যান্ড লাইনে ফোন করে বলা হয়, “জলদি কিছু করুন।” খবর পেয়েই পুলিশ রওনা দেয়।