তন্ত্র সাধনায় দশমহাবিদ্যায় কামাখ্যা মায়ের সাধক নাগা সন্ন্যাসী  থানাপ্রতি মোহন্ত নিত্যানন্দ গিরি 

 মৃত্যুঞ্জয় সরদার: প্রতিদিন আমরা খবরের কাগজের পাতা উল্টে রাজনৈতিক হিংসা ও সমাজের বিভিন্ন অত্যাচারের খবর পড়তে পড়তে বোরিং হয়ে যায়! তবে সমাজে ছাড়া ধারক এবং বাহক তাদের কথায় আমরা সাধারণত কোন ভাবে তুলে ধরার মানসিকতা তৈরি নেই। মানুষ অর্থসংকট নিজের স্বার্থ ভাবতে ভাবতেই কেমন যেন একটা স্বার্থনেশি হয়ে উঠেছি। তবে বহু কষ্টের মধ্যে দিয়েও সবকিছুই উপলব্ধি করার নেশা আমার জীবনে প্রবল আছে। বহুকাল আগে থেকে ঈশ্বরের প্রতি ধ্যান ধারণা আর প্রকৃতি সাধু  সন্ন্যাস খুঁজে পাওয়ার নেশা আমার মধ্যে গোপনীয় ভাবে সাজাগছিল। তবে তারাপীঠে জগতের মঙ্গল কামনায় যজ্ঞ করার পরে। এক মহা নাগা সন্ন্যাসীর সন্ধান মাতারা মিলিয়েছিল। বন্ধু কাম দাদা  সাংবাদিক সুজিতের হাত ধরে। উত্তর ২৪ পরগনার কচুয়া গ্রামে যোগী লোকনাথ বাবার ইতিহাস অজানা কারণ নয়। আবার এক উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট টাকি সেই শৈশব জীবন নিতাই ভট্টাচার্য্য আজ আসাম কামাখ্যা মন্দিরের নাগা সন্ন্যসীদের নর্থ ইস্টার্ন জনের প্রেসিডেন্ট থানাপ্রতি মোহন্ত নিত্যানন্দ গিরি  । তবে সন্ন্যাস এর বাবার নামটা জানা সত্ত্বেও এখানে আমার লিখতে গিয়ে নাগা সন্ন্যাসী এর গুরু কথার উল্লেখ করতেই হচ্ছে, মোহন্ত শ্রী প্রজ্ঞানন্দ গিরি মহারাজ। দীক্ষা গুরুর কাছে দীক্ষা নিয়ে আর কঠোর তপস্যা করার পরে নিজের ১৬ পুরুষের পিন্ডদান ও নিজের পিন্ডদান করে মাথা মুন্ডন করার পরেই মহাপুরুষ সনাতন ধর্মের শ্রেষ্ঠ ধর্মের শেষ নাগা সন্ন্যাসী তিনি পরিণত হয়েছে থানাপ্রতি মোহন্ত নিত্যানন্দ গিরি ।তিনি সংসার জীবন থেকে অনেক দূরে, ঈশ্বর সাধনায় মগ্ন এবং শীত-গ্রীষ্ম সব ঋতুতেই শরীর থাকে উদোম- এমন হুলিয়া বলে দেয় যে এরা নাগা সন্ন্যাসী বা নাগা সাধু। উপমহাদেশে সনাতন ধর্মীয় বিভিন্ন তীর্থকেন্দ্রের আশপাশে বিশেষ করে কুম্ভ মেলায় প্রায়ই তাদের দেখা মেলে। চুলে জটাধারী, গায়ে ছাইভষ্ম মাখা এই সন্ন্যাসীরা লোকালয়ে কমই আসে। কেউ কেউ এদের যোদ্ধা সন্ন্যাসী বলেন।

অনেকেই মনে করেন, তাদের কামবাসনা চরিতার্থ করার মাধ্যম অর্থাৎ লিঙ্গ যেহেতু অকেজো করে দেওয়া হয় সেহেতু তাদের শারীরিক শক্তি প্রবল হয়। তাই নাগা সন্ন্যাসীরা বেশ শক্তসমর্থ হয়ে থাকে। তবে এই সাধু সন্ন্যাসী সন্নিকটে অনেকে আসতে পারে না এখন ভন্ড সাধু সংখ্যা অনেক বেশি ছাড়া ভারতবর্ষজুড়ে। তবে বসিরহাটের নিতাই ভট্টাচার্য আজ থানাপ্রতি মোহন্ত নিত্যানন্দ গিরি আসাম কামাখ্যা সাধু সন্ন্যাসীদের মাথা। একুশটা বছর মা বগলা দেবী কামাক্ষা দেবীর সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছে আসাম কামাখ্যাতে, এদিকে আস্তে আস্তে তারাপীঠ মহাপীঠ সিদ্ধ পিঠে নাগা সন্নাসীদের আশ্রম গড়ে তুলছে নদীর ধারে। 13 বছরের শিশুটি এলাকায় জঙ্গল সাধুসঙ্গ যেখানে হতো সেখানে তার স্থান ছিল, শিশু কালে  এক সাধুর সাথে অমরনাথের পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সাধু তাকে অমরনাথ ছেড়ে চলে এসেছিলেন হতাশ হয়ে ঘুরতে ঘুরতে ঘুরতে ঘুরতে মায়ের লীলাখেলায় তিনি আবার থানার জন্মস্থানের বসিরহাট টাকি তে পৌঁছে যায়। তারপর বাবা-মা জোরজবস্তি নাগা সন্ন্যাসীনী প্রাইভেট এ মাধ্যমিক পরীক্ষা তে পৌঁছায় পরীক্ষা চলাকালীন আবার আইসক্রিম খেতে গিয়ে আর এক সাধুর সঙ্গে আলাপ সেই সময়ে তিনি আবার চলে গেলেন অমরনাথে সেই ছিল 15 বছর, ১৯ নভেম্বর  ১৯৮০ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন থানাপ্রতি মোহন্ত নিত্যানন্দ গিরি  । সাধু হয়ে আবার জন্মস্থানের টানে ছুটে এসেছিলেন ২১ বছর বয়সে তাকে! সেখান থেকে আবার তন্ত্রসাধনার জন্য চলে যান তিনি! এরপরে  কাশি সে বেদনাথা সাথে তন্ত্র শিক্ষা ও পূজা-পার্বণ শিক্ষা নিয়েছিলেন তিনি।  চার ভাই এক বোন এই সাধু  জন্মস্থান   বসিরহাট টাকি গ্রামের। তিনি সাতটা গুরু নিয়ে মায়ের সাধনা করে নাগা সন্ন্যাসী উপাধি নিয়ে কামাখ্যায় তিনি বহু বছর ধরে সাধন ভজন পূজন এবং তন্ত্র সাধনা করছে।এই সাধক সারাদিনে গাঁজা এবং চড়স খেয়ে বেঁচে থাকেন। সারা দিনের শেষে একবার ডাবের জল বা সবজি সিদ্ধ খেয়ে জীবন ধারণ করছে।থানাপ্রতি মোহন্ত নিত্যানন্দ গিরি নাগা সাধুরা লোভ, কাম, ক্রোধ ও মোহ থেকে মুক্ত। তাই তারা পৃথিবীর কোনো মায়া তাদের স্পর্শ করে না। তাদের উদ্দেশ্য সারাক্ষণ সত্যের সন্ধান। নাগারা শরীরে ভষ্ম মাখেন। তেল ও সাবান মাখা নিষিদ্ধ। তাদের কোনো যৌনবাসনা নেই। বিশেষ প্রক্রিয়ায় নষ্ট করে দেয়া হয় তাদের যৌনাঙ্গ। আট বছর বয়স থেকে শুরু হয় নাগা সাধু হওয়ার প্রশিক্ষণ। একজন নাগা সাধু হতে প্রশিক্ষণের শুরু থেকে সময় লাগে বিশ বছর।

প্রতিবছর কুম্ভেমেলায় আসে লাখ লাখ নাগা সাধু। অনেকের বিশ্বাস—তাঁরা থাকেন হিমালয়ের গহীনে। কুম্ভে দর্শন দেন। কিন্তু এই ধারণার বাস্তব ভিত্তি নেই। পুণ্য স্নানের জন্য নাগা সন্ন্যাসীরা এ বছরে তিন হাজার  আসবে গঙ্গাসাগরে থানাপ্রতি মোহন্ত নিত্যানন্দ গিরি সাথে।এই সাধুর কথা লিখতে গিয়ে।  নাগা সাধুর ইতিহাস বলতে চাই।নাগা সাধু সহজে কেউ হতে পারে না। কারণ, নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার প্রক্রিয়া খুব কঠিন। খুব গোপনীয়। সন্ন্যাসী হওয়ার জন্য বেশ কিছু কঠিন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ১৫ বছর পর্যন্ত চলে কঠোর প্রশিক্ষণ। এই সময় নিজেদের খাদ্য নিজেই তৈরি করতে হয়। করতে হয় গুরুর সেবা।প্রশিক্ষণ চলাকালীন কোনো ভুল হলে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। একজন মানুষের নাগা সন্ন্যাসী হতে ২০ বছর সময় লাগে। আট বছর বয়স হলে প্রতিষ্ঠানের মহাত্মারা নাগা সাধু হতে ইচ্ছুক শিশুদের কাছে লাখ লাখ টাকার দায়িত্ব দিয়ে পরীক্ষা করেন। এই পরীক্ষায় পাশ করলে ওইসব শিশুদের একটা ছোট্ট মন্ত্র দেওয়া হয়।এরপর ১২ বছর বয়সে তার আসল প্রশিক্ষণ শুরু হয়। বাল নাগাদের প্রশিক্ষণ অনেকটা সেনা বাহিনীর জওয়ানদের মতো। যে কোনও পরিস্থিতিতে তাদের থাকতে হবে অটল। প্রয়োজনে মাতৃভূমি এবং সমাজের জন্য অস্ত্র ধারণ করতে হবে। নাগা সন্ন্যাসীরা মনে করেন সন্ন্যাসীদের নিজের কোনো সংসার থাকে না। তাই তারা নিঃস্বার্থভাবে মাতৃভূমি ও সমাজের সেবা করেন এই থানাপ্রতি মোহন্ত নিত্যানন্দ গিরি । তবে সংস্কৃত ভাষায় নাগা অর্থ পর্বত। পাহাড় এবং আশেপাশে বসবাসকারীরা পাহাড়ি বা নাগা নামে পরিচিত। তবে নাগা সাধুদের দ্বারা বিশেষ শ্রেণির মানুষদেরকে বোঝায়। নাগা সাধুদের ইতিহাস অনেক পুরাতন। প্রাচীন মহেঞ্জাদারো জনপদের মুদ্রার চিত্রে নাগা সাধুদের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলে। এই চিত্রগুলোতে দেখা যায়, নাগা সাধুরা পশুপতিনাথ রূপে ভগবান শিবের উপাসনা করছে।

আলেকজান্ডার এবং তার সৈন্যরাও নাগা সাধুদের মুখোমুখি হয়েছিল। বুদ্ধ এবং মহাবীর নাগাদের তপস্যা, মানুষ এবং মাতৃভূমির প্রতি নিষ্ঠা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। জানা যায়, ভারতে যখন বকধার্মিকদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গিয়েছিল তখন গুরু শংকরাচার্য তাদের রুখতে একটি খারু গঠন করেন। এই সঙ্ঘের মাধ্যমেই নাগা সাধুদের বর্তমান ধারার উৎপত্তি ঘটে। নাগারা বরাবরই শাস্ত্রজ্ঞান ও অস্ত্রজ্ঞান উভয় বিষয়েই সমান দক্ষ ছিল।একসময় তারা এ দুটির সমন্বয়ে সনাতন ধর্ম রক্ষার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছিল। জানা যায়, ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসন প্রচলিত হওয়ার পর বিভিন্ন সময় নাগা সাধুরা স্ব-ধর্ম রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ইংরেজদের বিরুদ্ধে তারা অনেক আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল। এর মধ্যে ১৭৬০ এর দশকে ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহে তাদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য। অনেক জমিদারের পক্ষ নিয়েও তারা ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।

 

,নাগা সন্ন্যাসীদের নিজেদের কোনো সংসার থাকে না। তারা শুধু নিঃস্বার্থভাবে মাতৃভূমি এবং সমাজের সেবা করতে প্রস্তুত থাকে। কয়েকটি কঠিন ধাপ অতিক্রম করে নাগা সন্ন্যাসীদের মূল প্রশিক্ষণ শুরু হয়। অনেকের বিশ্বাস, তাদের আধ্যাত্মিক জগতের ধারে কাছে অন্য কেউ পৌঁছতে পারে না।

চারটি কুম্ভের পর ব্রম্ভচারি বালকদের নাগা সন্ন্যাসের মূল দীক্ষা দেয়া হয়। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে শুধু কি পুরুষই নাগা সন্ন্যাসী হতে পারে? নাকি নারীরাও নাগা সাধু হতে পারে? প্রকৃতপক্ষে নারীরাও নাগা সন্ন্যাসী হতে পারে। কোনো নারী নাগা সাধু হতে চাইলে, আগে তাকে ৬ থেকে ১২ বছর ধরে কঠিন ব্রহ্মচার্য অনুসরণ করতে হয়। এসময় তাকে ব্রাহ্মচর্যের যাবতীয় নিয়ম মেনে চলতে হয়।

নাগা হতে নারীরা যা করে

নারী নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার জন্য তার গুরুকে আশ্বস্ত করতে হয়। সে চাইলে নারী ব্রাহ্মচার্য অনুসরণ করতে পারেন। এরপর সেই নারী তার গুরু নাগার কাছ থেকে দীক্ষা নিতে পারে। গুরু একজন নারীকে নাগা সন্ন্যাসে দীক্ষা দেয়ার পূর্বে তার অতীত জীবন এবং পরিবার সম্পর্কে যাবতীয় খোঁজ খবর নিয়ে থাকেন।

 

নাগা নারীরা

নারী সাধু হিসেবে দীক্ষা নেয়ার পর তার মাথা ন্যাড়া করা হয় এবং নদীতে গোসল করানো হয়। নারী নাগা সাধুর পরিবারের মায়া ত্যাগ করার দীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের মায়া ত্যাগ করে সে নিজেকে ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করে। সাধু হিসেবে দীক্ষা নেয়ার পর সবাই তাকে মা বলে ডাকে।পুরুষ নাগা সাধু বস্ত্রহীন থাকলেও নারী নাগা সাধু এক টুকরো সেলাইহীন গেরুয়া-হলুদ রঙের কাপড় পরে থাকেন। এই একই পোষাক পরে তারা সমস্ত কাজ কর্ম করেন। পুরুষ এবং নারী নাগা সন্ন্যাসীদের মর্যাদা সমান। নারী নাগা সন্ন্যাসী কপালে টিকা লাগান।

শরীরে ছাই মাখার কারণ

তাদের শরীরে মাখা ছাইও একটি বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি বলে জানা যায়। যজ্ঞের ভস্মের সঙ্গে গোবর, কলাপাতা, বেলপাতা, কাঁচা দুধ, কলা এবং ঘি দিয়ে এই মিশ্রেণ তৈরি করা হয়। এই ভস্ম গায়ে মাখলে বিষাক্ত পোকামাকড়, সাপ, মশা কিছু কাছে আসে না বলে জানা যায়। পাহাড় কিংবা আশেপাশের অঞ্চলেই থাকে এরা সব সময়।

 

লোকালয়ে খুবই কম বের হয়। কুম্ভ মেলার সময়ই বেশি বের হয়। জীবন ধারণের মত সামান্য খাদ্য গ্রহণ করে বেঁচে থাকে তারা। প্রকৃতিতে অনেক খাদ্য আছে যা শরীর উত্তেজিত করে তোলে। নাগারা এই সব খাদ্য এড়িয়ে চলে। তারা সিদ্ধি লাভ করে কাম, ক্রোধ, লোভের উর্ধ্বে অবস্থান করে। একজন নাগা সাধু হয়ে ওঠেন বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রকৃত সত্য সন্ধানী।নগ্ন থাকার কারণ

অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে নাগারা নগ্ন থাকেন, তাদের কি কামবাসনা নেই? নাগা সাধুদের প্রশিক্ষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে ব্রহ্মমুহূর্তে তাদের মন্ত্রদান করা হয়। যে মন্ত্র এক কঠিন সাধনা লব্ধ। তারা কাম বাসনার উর্ধ্বে থাকার জন্য যৌন আকাঙ্ক্ষা মুক্ত হয়। বিশেষ প্রক্রিয়ায় তাদের যৌনাঙ্গ নষ্ট করে দেয়া হয়।

যৌন কামনার প্রবল বেগকে সামলে একজন প্রকৃত নাগা হয়ে ওঠে। তাদের শরীর এবং মনে কোনো কাম বাসনা এবং জাগতিক চিন্তা ভাবনা থাকেনা। নাগা সাধুদের সাধনায় যাতে পার্থিব কোনো কিছু স্পর্শ না করে সেজন্য তারা বস্ত্রও পরিত্যাগ করে।তাই

এবার আলোচনা করা যাক বাল নাগা সন্ন্যাসীদের নিয়ে। কি এই মায়াবী জগত? কোন দুনিয়া থেকে এরা মাঝে মাঝে সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা দেয়? আমরা নাগা সন্ন্যাসীদের তো দেখেছি, যারা ভয়ঙ্কর ঠান্ডার মধ্যেও উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু তাদের অলৌকিক আশ্চর্য জগত সম্পর্কে কতটাই বা জানি ? প্রচন্ড গরমের মধ্যেও যারা সারা শরীরে ভস্ম মেঝে মাথায় জ্বলন্ত হাড়ি নিয়ে তপস্যা করেন, কি এই সন্ন্যাসীদের জীবনের রহস্য? কুম্ভ মেলাতে আমরা অস্ত্রধারী উলঙ্গ এই সাধুদের দেখলেও বালক নাগা সন্ন্যাসীদের সেই অর্থে দেখা মেলে না।বালক নাগাদের অদ্ভুত জগতের কিছু তথ্য এবার তুলে ধরবো। আমাদের মনে বহু প্রশ্ন জাগে, নাগা সন্ন্যাসীদের এই আশ্চর্য জগতে কি করে প্রবেশ হয় এই সব বাল নাগাদের ? নিরীহ শিশুরা কি করে নাগা সন্ন্যাসীদের মতন তপস্যা করে ? মোমের মতন নরম শরীরকে কি করে ইন্দ্রের বজ্রের মতন তৈরি করে এইসব নাগারা ? নাগা সন্ন্যাসীদের কাছ থেকে কোন পরিবার উপকৃত হলে তারা অনেক সময় মানত করেন যে তাদের প্রথম সন্তান তারা এই সন্ন্যাসীদের দান করবেন। সেই ক্ষেত্রে শিশুর জন্মের পর সেই শিশুকে নাগা সন্ন্যাসীদের হাতে দিয়ে দেওয়া হয় এবং তারা সেই শিশুটির পালন পোষণ করেন। এই সব শিশুদের শৈশব থেকেই শাস্ত্র এবং অস্ত্র শিক্ষা শুরু হয়ে যায়। সেই সাথে থাকে ত্যাগ ও কঠোর তপস্যার শিক্ষা। এরা অস্ত্রচালনায় পারদর্শী হন। তারা দুই হাতে তলোয়ার, ত্রিশূল এক সাথে নিয়ে যুদ্ধ করতে পারে, শুধু তাই না লাঠি-চালনায় এরা পারদর্শী হয়।

বাল নাগাদের তৈরির প্রক্রিয়া খুব গোপনীয় হয়। কিন্তু নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার জন্য বেশ কিছু কঠিন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ১২ বছর অব্দি কঠোর প্রশিক্ষণ চলে, এই সময় নিজেদের খাদ্য নিজেদের তৈরি করতে হয়। তাছাড়া নিজের গুরুর সেবা তাদের করতে হয়। প্রশিক্ষণ চলাকালীন কোন ভুল হলে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। একজন মানুষের নাগা সন্ন্যাসী হতে ২০ বছর সময় লাগে। আট বছর বয়স হলে প্রতিষ্ঠানের মহাত্মারা এই সব শিশুদের কাছে লাখ লাখ টাকার দায়িত্ব দিয়ে পরীক্ষা করেন। এই পরীক্ষায় পাশ করলে তাঁকে একটা ছোট্ট মন্ত্র দেওয়া হয়। এরপর ১২ বছর বয়সে তার আসল প্রশিক্ষণ শুরু হয়। বাল নাগাদের প্রশিক্ষণ অনেকটা সেনার জবানদের মতন হয়। যেকোনো পরিস্থিতিতে তাদের অটল থাকতে সবে এবং প্রয়োজনে মাতৃভূমি এবং সমাজের জন্য অস্ত্র ধারণ করতে হবে। নাগা সন্ন্যাসীরা মনে করেন সন্ন্যাসীদের নিজের কোন সংসার থাকে না, তাই তারা নিঃস্বার্থভাবে মাতৃভূমি এবং সমাজের সেবা করতে পারেন। কিন্তু সব সন্ন্যাসীরা নাগা নয়। এদের মধ্যে ভাগ আছে। এদের তিনটি ভাগ আছে, নাগা, তান্তোরা এবং নির্বাণ। বাল নাগা সাধু এই তিন শ্রেণীর যেকোনো একটির দীক্ষা নিতে পারে। এ এমন এক আধ্যাত্মিক জগত যার ধারের কাছে সাধারণ মানুষ পৌঁছতে পারে না। চারটি কুম্ভের পর ব্রম্ভচারি বালকদের নাগা সন্ন্যাসের দীক্ষা দেওয়া হয়, তারপর তাদের যৌনাঙ্গকে বিশেষ উপায়ে নষ্ট করে দেওয়া হয়। এরা সারা জীবন তেল আর সাবান লাগাতে পারেন না। এরা সারা শরীরে ভস্ম মেখে রাখে। যেকোনো খাদ্য যা শরীরে উত্তেজনা তৈরি করে, এইসব খাদ্য থেকে এরা দূরে থাকেন। ব্রহ্মমুহুর্তে তাদের মন্ত্রদান করা হয়। এই মন্ত্র এক সাধনা।বলা হয় এই সন্ন্যাসীরা যে ভস্ম শরীরে মেখে রাখে, এই ভস্ম তাদের বিষাক্ত সাপ, মশা এসবের হাত থেকে রক্ষা করে। কিন্তু এই ছাইয়ের মধ্যে গোবর,বেলপাতা, কলা সহ আরও অনেক কিছু মেশানো থাকে। এর মধ্যে কাচা দুধ মিশিয়ে এক মিশ্রণ তৈরি করে তা তারা শরীরে মাখে। এরা ব্রহ্ম মুহূর্তে ঘুম থেকে ওঠেন। তারপর হবন, ধ্যান,বজ্রোলি, প্রানায়ম, কপাল ক্রিয়া আর নৌলি ক্রিয়া করেন।
নাগা সাধু দিগম্বর অখিলেশপুরী বলেন বলেন, আমাদের লিঙ্গ অকেজো করে দেওয়া হয়। আমাদের কোনো কামনা-বাসনা থাকে না। যারা যৌন কামনার প্রবল বেগকে সামলে নিতে পারে তারাই নাগা।কাম, ক্রোধ, লোভ সেই সিদ্ধি লাভ করে যে যৌন বাসনার বিরুদ্ধে জয়ী হয়।

Back to top button