প্রদীপ কুমার মাইতি,পূর্ব মেদিনীপুর:- ফের খবরের শিরোনামে মনসুরা বিবি। বৃহস্পতিবার সকালে নন্দীগ্রামের কেন্দামারি জালপাই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মুনসুরা বিবির বাড়ির গ্যারেজ থেকে উদ্ধার হলো জোড়া বোমা।
ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ তুলে এলাকায় বেশ কিছুক্ষণ পথ অবরোধ করে রাখে মনসুরার স্বামী সাহউদ্দিনের অনুগামীরা।
ঘটনায় স্থানীয় নন্দীগ্রাম থানার খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বোমা উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তৃণমূলের অন্দরেই শুরু হয়েছে গোষ্ঠী কোন্দল। পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী দল বিজেপি।
সাম্প্রতিক কয়েক দিন আগে আমফান দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়ে ছিলেন নন্দীগ্রামের কেন্দামারি জালপাই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনসুরা বিবি। দলের নির্দেশে তাকে প্রধান পদ ছাড়তে হয়েছিল। এরপর ফের প্রধান নির্বাচনের সময় আবারো প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন মনসুরা।
এরপরই দলের নির্দেশ অমান্য করাতে দল থেকে বহিষ্কার করা প্রধান মুনসুরা বিবি ও তার স্বামী তথা এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা সেক সাহউদ্দিনকে। এরপর থেকে বারবার বোমা-গুলিতে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে নন্দীগ্রাম। রাতের অন্ধকারে নন্দীগ্রামের একাধিক জায়গায় চলছে বোমাবাজি।
এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে তৃণমূল বহিস্কৃত অঞ্চল প্রধান মনসুরা বিবির বাড়ির পাশে থাকা গাড়ির গ্যারেজ থেকে উদ্ধার হয় তাজা দুটি বোমা। ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় নন্দীগ্রাম থানার খবর দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ জোড়া বোমা উদ্ধার করে নিয়ে যায় এবং পরে তা নিষ্ক্রিয় করে। এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে সাহউদ্দিনের অনুগামীরা বেশ কিছুক্ষণ নন্দীগ্রামের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
তাদের দাবি এভাবে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হচ্ছে সাহউদ্দিনকে। বেশ কিছুক্ষণ অবরোধ-বিক্ষোভ চলার পর স্থানীয় নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষোভ কারীদের দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়।
তবে গোটা ঘটনায় শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূল বহিস্কৃত অঞ্চল প্রধান মনসুরা বিবি ও তার স্বামী সাহউদ্দিন বলেন, রাজনৈতিক ভাবে কেউ পেরে উঠছে না।
তাই এভাবে আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার জন্য চক্রান্ত করছে। তৃণমূলেরও লোকজন এই ঘটনা ঘটতে পারে। এই ঘটনায় আমাদের কোনো হাত নেই। গোটা ঘটনায় আমি তদন্তের জন্য নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ জানাবো।
বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, যার বাড়ি থেকে বোমা উদ্ধার হয়েছে তাকে পুলিশ এখনো কেনো গ্রেফতার করেনি সেটাই মূল বিষয়। তৃণমূল- কংগ্রেস প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়েই ভোটের আগে বোম বন্ধুক জমা করছে নন্দীগ্রামে। যাতে নন্দীগ্রামকে খাগড়াগড় বানানো যায়।
এবিষয়ে নন্দীগ্রাম থানার ওসি অজিত কুমার ঝাঁ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে যাই এবং বোমা উদ্ধার করি। ইতিমধ্যে ঐ বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় তদন্ত শুরু করা হয়েছে।