কোরনার আতঙ্কে গ্রাস করছে শ্রমিকদের জীবন ।
নিউজ সারাদিনের দূরদৃষ্টি পেজটি পাঠকের নিজস্ব মতামতের জন্য ,পাঠকের মতামত কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।
ঝুম্পা দেবনাথ-:সারা বিশ্ব জুড়ে যখন অতিমারীর থাবা বসিয়েছে করোনা৷কোরনার গ্রাস থেকে বাদ যান নি পরিযায়ী শ্রমিকরাও। কাজের আশায় পেটের দায়ে তারা ছুটে যায় ভিন রাজ্যে কাজ করতে। লকডাউনে কাজের অভাবে আর্থিক সংকটে ভুগছেন তারা। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের চিন্তায় তারা বাড়ি ফেরার জন্য দাবী জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশের দাবি বাংলার সরকার তাদের কথা ভাবছেন না। অর্থকষ্টে অবসাদকে ঘিরেই ২২ বছরের আশিক ইকবাল নামক এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তিনি ছিলেন মুর্শিদাবাদের ডোমকলের বাসিন্দা। কেরালায় গিয়েছিল তিনি কাজের জন্য। করোনায় কাজ বন্ধ থাকায় তিনি অবসাদে আত্মহত্যা করেন।
আবার কোথাও বিহার থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা পায়ে হেঁটেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন।প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৪৬ জন পরিযায়ী শ্রমিককে বীরভূম থেকে ঝাড়খণ্ডে পাঠানো জন্য দুটি বাস ঠিক করা হয়েছিল এবং এই পরিযায়ী শ্রমিকদের খাবার ও জলের ও ব্যাবস্থা করা হয়েছিল।পরিযায়ী শ্রমিকদেরকে ঘিরে সরকারের সমালোচনায় মুখরিত হয়েছে বিরোধীমহল। গত ৩ রা এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী জানান পরিযায়ী শ্রমিকদের ভালো মন্দের খবর রাখছেন তিনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অভিযোগ জানান,” পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যার সমাধানে রাজ্যের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাহায্য পাচ্ছে না কেন্দ্র”। রাজ্যের শাসকগোষ্ঠীর মতে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সব দিকেই নজর রাখছেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে পৌঁছে দিতে রেলের পক্ষ থেকে ‘শ্রমিক স্পেশাল’ ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু দেশের বিভিন্ন জায়গায় আটকে থাকা বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অবিচার করছেন বাংলাই , এমনই দাবি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। বিরোধীমহলও অমিত শাহের সাথে একমত। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী জানান, বাংলার সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ট্রেন নিতে রাজি হচ্ছেন না। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী জানান, বাংলার সরকারের কাছে বাংলা থেকে বিভিন্ন জায়গায় কাজের জন্য যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের কোনো নামের তালিকা নেই। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা জানান,মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন মানুষের পাশে আছেন তিনি। কিন্তু কেন্দ্র সহায়তায় বিনামূল্যে ট্রেনের মাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে আসার পর কেন মুখ্যমন্ত্রী চুপ? রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ট্রেনের কোন আবেদন নেই বলেই দাবি রাহুল সিনহার। কিন্তু সম্প্রতি রাজস্থান থেকে একটি ট্রেন ডানকুনিতে এবং কেরাল থেকে একটি ট্রেন বহরমপুরে পৌঁচ্ছে। রাজ্যসরকারের এই প্রয়াস সম্পর্কে রাজ্যের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন , রাজ্যসরকার কোনো সহযোগিতা করেন নি, মাত্র দুটি ট্রেন চালিয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের দাবি, রাজ্যসরকার কোন সহযোগিতা করেননি, রাজস্থান সরকার ও প্রদেশ কংগ্রেস সরকারের সহযোগিতায় চলছে এই দুটি ট্রেন। সমালোচনার ঝড় উঠতেই রাজ্য সরকার চালু করেছেন ই-পাস। যার ব্যয় অনেক বেশি বলে দাবি করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী।