রামনগর বিধানসভার প্রাক্তন বামফ্রন্টের বিধায়কের বিজেপিতে যোগ
আজ মহাঅষ্টমী, মহাষ্টমীর দিনে রাজনৈতিক নেতারা সব কিছু ফেলে রেখে, তাদের রাজনীতির পালাবদল এর খেলায় মেতে উঠেছে।সর্বদায় নিজের স্বার্থের জন্য বাংলার রাজনীতি নেতারা কেন ভারতবর্ষের রাজনৈতিক নেতারা এক দল থেকে অন্য দলে চলে যায়। তার উদাহরণ পূর্ব মেদিনীপুরে ।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য দপ্তরে গিয়ে দিলীপ ঘোষের হাত ধরে সম্প্রতিক বিজেপিতে যোগ দিল ২১৭ রামনগর বিধানসভার প্রাক্তন বাম বিধায়ক স্বদেশ রঞ্জন নায়ক। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ রাজ্যে
বিজেপির কর্মকান্ডে মুগ্ধ হয় বাম ছেড়ে রামে যোগ দিলেন রামনগরের রঞ্জন নায়ক। চাষির দারিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন রঞ্জন বাবু, ১৯৭২ সালে তিনি কলকাতা পুলিশে যোগ দেন ।কিন্তু তিনি মৎসবন্দরে ব্যবসার কাজেও নিযুক্ত থাকেন।এবং হঠাৎ ১৯৯৬ সালে পুলিশের চাকরি থেকে রিজাইন দিয়ে বাড়ি ফিরে বাবার কেনা লঞ্চে মাছের ব্যবসায় হাত লাগাতেন তিনি। দারিদ্রতা তাঁর পেছনে ধাওয়া করে বেড়াত, যাঁর ফলে গরীবদের দুঃখ তিনি বুঝতেন, সে ক্ষেত্রে তিনি গরীব অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন সামর্থ অনুযায়ী।
এভাবে ধীরে ধীরে তাঁর জীবন গড়ে ওঠে। তাঁর মাঝে তাঁর পরিবার রাজনীতিহীন থাকলেও স্বদেশবাবু বামফ্রন্ট সরকারকে সাপোর্ট করতেন, সেই সুবাদে ২০০৩ সালে জেলা পরিষদে সিপিএম প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়ে জয়লাভ করেন তিনি, তাঁরপরই জেলা পরিষদের মেম্বার থাকাকালীন তাঁকে বিধানসভার টিকিটে দাঁড় করিয়ে বাম বিধায়কের আসনে বসানো হয়েছিল। ২০০৮ সালে কিডনি সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন তিনি, দীর্ঘ সময় যাবত ডায়ালোসিস হওয়ার পর ২০১৯ সালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর কিডনি পরিবর্তন করা হলে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন তৎকালীন বাম বিধায়ক।
তাঁর পরই বিজেপির পক্ষ থেকে তাঁকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আবেদন করলে তিনি বিজেপির মেন্বারসিপ হয়ে যান, এবং চারশো সিটু কর্মীকে বিজেপিতে যোগদান করিয়েছেন। বিজেপিতে যোগ দেওয়া বেশিরভাগ মানুষ বামফ্রন্ট থেকে এসেছে বলে দাবি করেন তিনি। এমনকি তৃণমূলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বহু মানুষ ঘরছাড়া , কর্মহীন হয়ে পড়েন অনেকে, বামফ্রন্টে সেল্টার না পেয়ে তাঁরা বিজেপির নীতি আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে, তাঁদের প্রতিবাদী রূপ দেখে নিজেদের তৃণমূলের হার্মাদের থেকে বাঁচাতে তাঁরা বিজেপিতে যোগদান করেন। এমনকি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির জয় নিশ্চিত বলে মনে করছেন তিনি।
তৃণমূলের অত্যাচারের ভয়ে মানুষ প্রকাশ্য রাজনীতির সামনের সারিতে আসতে পারছে না, তবে গোপনে প্রত্যেকেই বিজেপির সাথে যোগসাজশ করে চলেছে, সে কারনে ২০২১ এর নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি সরকার আসছে বলে নিশ্চিত হচ্ছেন স্বদেশ রঞ্জন নায়ক। ২০০৬ সালে রামনগরের তৃণমূল প্রার্থী অখিল গিরিকে পরাজিত করে জয়লাভ করেছিলেন স্বদেশ বাবু, কিন্তু তাঁর পরই পর পর ২০১১এবং ২০১৬ সালে দুইবার তিনি পরাজিত হন তৃণমূলের বিধায়ক অখিল গিরির কাছে। কারণ তৎকালীন চৌত্রিশ বছরের জগদ্দল বামফ্রন্ট সরকারের জমি নিগ্রহ নিয়ে রাজ্যে যেভাবে মানুষের মৃত্যু মিছিল শুরু হয়েছিল সেকারনে মানুষ বাঁচার তাগিদে সরকার বদল করে মমতা ব্যানার্জীকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসান। তখন তৃনমুলের স্লোগান ছিল “বদলা নয় বদল চাই” সেই দিক থেকে লক্ষ্য করলে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে শিক্ষা ,স্বাস্থ্য, কর্ম সংস্থান থেকে শুরু করে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সবদিকে ব্যর্থ।
যেভাবে বর্তমান সরকার মানুষকে কথা দিয়েছিলেন পাশে থাকার জন্য তাতে ব্যর্থ হয়ে উল্টে খারাপ কাজে, দাঙ্গা হাঙ্গামায় এগিয়ে তৃণমূল সরকার। এমনকি স্বদেশ বাবু বিস্ফোরক দাবি করে বলেন তৃণমূল রাজনীতিকে ব্যবসায় পরিনত করেছে। এমনকি রামনগর বিধানসভাতেও উন্নয়নের নামে ব্যবসা চলছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন যাঁরা ভাঙ্গা সাইকেল চালাতেন তাঁরা আজ চারচাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সেই কারনে তৃণমূলের নেতাদের লক্ষ্য করে বহু সাধারণ মানুষ ভোটে দাঁড়ানোর জন্য উৎসুক হয়ে পড়বে, কারণ সাধারণ মানুষ তৃণমূল নেতাদের থেকে শিখে যাচ্ছে ভোটে দাঁড়ালেই ভাঙ্গা সাইকেল থেকে রাতারাতি দামী চারচাকা গাড়ি কিনে চড়তে পারবেন বলে মন্তব্য করেন রামনগর বিধানসভার বামফ্রন্টের প্রাক্তন বিধায়ক সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া স্বদেশ রঞ্জন নায়ক।