ধর্ষণের অত্যাচারের একেকটি লম্বা ইতিহাস
কামদুনি থেকে হাথরাস মাঝে প্রিয়াংকা, ধর্ষক কুলদীপ সেনগল,ধর্ষণের অত্যাচারের একেকটি লম্বা ইতিহাস,আমাদের এই পচন ধরা সমাজের গায়ে দগদগে ঘায়ের মত।যাকে ঘৃণা করেও বলতে দ্বিধা নেই ভারতীয় নারীদের জন্য এটা এক প্রকার ভবিতব্য।আপনি কি জানেন আপনার ঘরের সদ্য যৌবনা ফুটফুটে ফুলের মত সুন্দর মেয়েটিকে কেউ ধর্ষণ করেনি?বলবেন তো! কি বলছেন আবল তাবল? জানেন আমাদের মেয়ের উপর এরকম কুকর্ম করা তো দুর ছোঁয়ার চেষ্টা করলে কেটে ফেলব।হ্যা অবশ্যই আপনি তা পারেন কারণ আপনার ঘরের মহিলাদের কঠোর অনুশাসনে রাখেন বলে।কিন্তু বাস্তবে তাতেও আপনি আমার পরিবারের সবচেয়ে কাছের আদরের মেয়েটিকে রক্ষা করতে পারছেন না।কেন বুঝতে পারছেন না যে ও রোজ রোজ আপনার চোখের সামনেই ধর্ষিত হচ্ছে।সেটা শারীরিক ভাবে না হলেও মানসিক ভাবে হচ্ছে।আপনি সকাল বেলা চা য়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে যখন খুব যত্নসহকারে দৈনিকের প্রথম পাতায় নজর রাখছেন তখন সেই তাতে হেড লাইন কিন্তু কামদুনি,নয়তো পার্কস্ট্রীট,নয়তো হাথরাস,নয়তো হায়দারের সেই ধর্ষিতা তরুণীর কান্না ভেসে ওঠছে।যার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে আপনার পাশে আপনার গলা জরিয়ে বসে থাকা ছোট্ট আরাধ্যা,নয়তো আরসী,নয়তো উমা।আপনি জানেন না জানতেও চান না এই দেশে এভাবেই প্রায় সব মা বোনেরা রোজ রোজ খবরের কাগজের পাতায় নয়তো টিভির সামনে বসে সবার চোখের সামনেই ধর্ষিত হন।আর সেই যন্ত্রণা নিয়েই তারা হাসি খুশীতে ভরিয়ে রাখেন আমার আপনার পরিবার পরিজনদের।যেটাকে আদৌ আপনি কোন ধর্ষণ বলে মনে করাতো দুর অপরাধ বলেই মনে করতে রাজি নন।আসলে আপনি জানেনই না যে এটাও কোন অপরাধ হতে পারে।কারণ রাষ্ট্র তা শেখায় নি শেখাবে না।রাষ্ট্র আপনাকে সেই ইতিহাস পড়াবে যে ইতিহাস শিক্ষা দেয় মহাভারতে কৌরবদের কাছে পাশা খেলায় হেরে গিয়ে কিভাবে পান্ডবরা দ্রৌপদীকে বাজি রাখে।আমাদের কখনো এই প্রশ্ন করতে শেখায়নি কেন কিছু পুরুষ মানুষের জুয়ার আড্ডায় একজন অবলা নাদান রমণীকে এই বর্বরতার মধ্যে সেদিন ঠেলে দেওয়া হয়েছিল?আর সেই বর্বরতার মহাকাব্য কেন আমরা দিনের পর দিন অনুশীলন করব?যেখানে নারী লঞ্ছনার এক বেদনাদয়ক ইতিহাসকে আমাদের হিন্দুরা বেদবাক্য বলেই এখনো জেনে আসছি।কি অপরাধে অর্জুনের বিবাহিত স্ত্রীকে তার সহ ভ্রাতাদেরও শষ্যাসঙ্গীনি হতে বাধ্য করা হয়েছিল।আমরা তো রামের ভক্ত।হারামি রাম কেন রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করে আনার পরেও আবার চোদ্দ বছরের জন্য বনবাসে পাঠিয়ে ছিল?কেন তার আবাল প্রজাদের আবদার রক্ষা করতে গিয়ে সীতা মাকে অগ্নিপরীক্ষার সামনে ঠেলে দিয়েছিল?যার অপমান শেষ পর্যন্ত সহ্য করতে না পেরে সীতাকে ধরণীর বুকেই আশ্রয় নিতে হয়।হিন্দু ধর্মের সব উপন্যাসেই তো বারং বার নারী লাঞ্ছনা,নারীদের অপমানকেই বড় করে দেখানো হয়েছে একমাত্র বাঙালী সমাজের ধর্মীয় আচরণেই মহিলারা জায়গা পেয়েছেন মাতৃত্বের উচ্চাসনে।তাই আমরা বাঙালীরাতো মাকে সাধনা করি,অকর্মণ্য রামকে নয়।রামের থেকেও অনেক প্রিয় আমাদের পাগলা ঠাকুর পরমহংস শ্রী শ্রী রামকৃষ্ন।অনেকেই বলবেন আরে এরা তো সব একই শক্তির মাহামানব।একদম ভুল।বাজে কথা।কাজের মধ্যেই মানুষের চরিত্রের বিশ্লেষণ হয়।যাকে কোনদিন দেখেননি তাকে বিশ্বাস করার থেকে যে বাস্তবের মাটিতে তার কর্ম প্রয়াসের অস্হিত্ব স্হাপন করে গেছেন আসুন আমরা তার উপাসনা করি।যদি পৃথিবীতে নারী লাঞ্ছনা,নারী অত্যাচার,নারী নির্যাতন সত্যি সত্যি বন্ধ করতে হয় তাহলে আমাদের পাঠ্য থেকে আগে রামায়ণ মহাভারতের পাঠ বন্ধ করুন।যেখানে শিশু মনে দৌপ্রদীর বস্ত হরণ কি প্রভাব ফেলে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।আপনি মহাকাব্যের অনন্তকাল অন্তস্বার শুণ্য
মহাত্ম সম্পর্কে যতই বোঝান ,সদ্য যৌবনের সুরসরি তার লোমেলোমে একজন নারীর উলঙ্গ দেহই স্পর্শ করতে চাইবে। সে তার ঘরের মা হোক দিদি হোক বোন হক।দুপুর বেলা ওবাড়ির ফুল পিসির বাথরুমে উঁকি মেরে তার বস্ত্রহীন সুঠাম শরীর যদি এক নবযৌবনের শরীরে হিল্লোল তোলে তখন তাকে কি বলবেন?বোঝাবেন তো এটা অন্যায়,এটা অপরাধ।কিন্তু কখনোই তাকে এটা বলে সচেতন করবো না যে এটা একটা দন্ডনীয় অপরাধ।যার জন্য তার জেল,এমনকি আরো বড় কোন শাস্তি হতে পারে।আর এখানেই রাষ্ট্রের খেলা।দিনের পর দিন গাছ বাঁচিয়ে ফল খাওয়ার মত আমরা গোটা সিস্টেমটাকে বাঁচিয়ে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তকে শাস্তি দিতে চাইছি।আইন করেছি যা আই ওয়াশ।এনকাউন্টার করেছি যা আরো বড় নাটক।কখনও বলছি ওর লিঙ্গ কেটে নাও কখনো বলছি ওকে বাঘের খাঁচায় ছুড়ে ফেলে দাও।কিন্তু একবারের জন্য বলছি না এই রোগের উৎসে আঘাত হানার কথা।যে ধর্মের দলিলদস্তাভেজ নারীকে সর্বসমখ্যে উলঙ্গের নিদান দেয় আর সেই নির্যাতিতেকে উদ্ধার করতে লাগে আরো এক পুরুষকে যে নিজেই পুস্করনীতে উলঙ্গ স্নানরত মহিলাদের কাপড় লুকিয়ে রেখে মজা পায় আর অসহায় পুস্করের জলে স্নানরত মহিলারা তাদের নিরাভরণ শরীরের ইজ্জত রক্ষা করতে কাতর ভাবে তা ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান করে,আর এটাই নাকি বাল গোপালের লীলাখেলা।যাকেই হাজার হাজার বছর বুকের গভীরে লালনপালন করে, সযত্নে নতমস্তকে আমরা পুজো করি।তাই নারী লাঞ্ছনার ঔরষে জন্ম নেওয়া একটা জাতের হাতে মহিলারা যে কখনোই নিরাপদ থাকবে না এটা হলপ করেই বলে দেওয়া যায়।যেখানে আমাদের শশ্বতঃ ধর্মগ্রন্হই শিখিয়েছে এদেশে নারী নির্যাতন,নারী লাঞ্ছনা, দেশের পুরুষদের জন্মগত অধিকার।বাকি থাকল দেশের আইন আদালত,বিচার ব্যবস্হা।ওগুলো তো ছেলে ভোলানো গল্প।যার নানারূপ রং রস দেখেই তো আমরা ছাগলের তৃতীয় সন্তান হয়ে লাফালাফি করি।আত্মতুষ্টি অনুভব করি।