প্রতি মাসের বাংলা নাটকের মেলা ও নতুন পৃথিবীর উদ্যোগে নাট্য সহযোগী কর্মীদের আর্থিক সহযোগিতা।
কৃষ্টি-কালচার ও সংস্কৃতি মধ্যে লুকিয়ে ছিল বাংলার নিত্য, নাট্য। প্রাচীন যুগের নাট্য আজও বাংলায় চর্চা হয়ে থাকে।সেইসব নাট্যকর্মীরা আজ যেন কেমন অসহায় হয়ে পড়েছে, করোনাভাইরাস এর মোকাবিলা করতে গিয়ে লকডাউন শুরু হয়ে যায়। সেই থেকে নাট্যকর্মী আজ অনাহারে জীবন যাপন করার মতন পরিস্থিতি পরিবেশ তৈরি হয়েছে অনেকেরই। এই সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে গিয়েই প্রতিমাসে বাংলা নাটকের মেলার উদ্যোগে নতুন পৃথিবীর সহযোগিতায় নাট্য সহযোগী কর্মীদের বাঁচিয়ে রাখার পথ দেখিয়েছে আজ । নাটকের সেই চিরাচরিত প্রাচীন ইতিহাসের কথা না লিখলে হয়তো এই লেখাটি অসম্পূর্ণ থেকে যেতে পারে।প্রাচীন যুগ খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকে বাংলার বৃহদংশ গুপ্ত সাম্রাজ্যের অন্তর্গত হলে উত্তর গাঙ্গেয় আর্যসংস্কৃতি এ অঞ্চলে প্রবেশ করে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের কারণে গড়ে ওঠা নগরকেন্দ্রগুলিতে এ সময় শিল্প-সংস্কৃতি ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে। এর ফলে উল্লিখিত নগরকেন্দ্রগুলিতে ধ্রুপদী সংস্কৃতি নাট্যচর্চা বিশেষভাবে বিত্তবান শ্রেণির সাংস্কৃতিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পুথিগত সাক্ষ্য থেকেও এর জোরালো সমর্থন পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ বাংলার বিখ্যাত বৈয়াকরণ চন্দ্রগোমি (৬ষ্ঠ শতক) রচিত সংস্কৃত নাটক লোকানন্দ-এর নাম উল্লেখ করা যায়। প্রস্তাবনাসহ এ নাটকটি চার অঙ্কে রচিত। লোকানন্দ সম্পর্কে ই-ৎসিঙ মন্তব্য করেন, ভারতবর্ষের পাঁচটি রাজ্যের সকল মানুষ গীত ও নিত্যসহযোগে নাটকটি পরিবেশন করেন। এ থেকে নাটকটির জনপ্রিয়তা অনুমেয়।প্রাচীন যুগের সিরিজ প্রাইস কে ধরে রাখতে এই দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ালেন সৃজিত ঘোষের মতন নাট্য সংস্থার ব্যক্তিত্বরা।নাট্যকর্মীদের জীবনে বেঁচে থাকার লড়াই এর পাশে সহযোগিতা করেছেন ২৫ জন নাট্য সহযোগী কর্মীদের পরিবারের হাতে এক মাসের খাদ্যদ্রব্য নগদ দুই হাজার টাকা করে তুলে দিলেন প্রতি মাসের বাংলা নাটকের মেলা ও নতুন পৃথিবীর উদ্যোগে।আজকের দিনে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হলো বাংলা একাডেমী কলকাতাতে।উদ্যোগী সহযোগী হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পার্থ প্রতিম দেব, বিব্লদল চাটার্জী, রিয়া মজুমদার ,কৌশিক ভট্টাচার্য, চিত্র প্রযোজক সাধন তালুকদার।তবে এখানে শেষ নয় এমনই বিষয় চলতে থাকবে, যতদিন নাট্য সংস্থায় উদ্দীপ্ত হবে।সেই কারণে বাংলার স্মরণীয় কিছু কথা তুলে ধরছি এই লেখাতে।খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাংলা অথবা তার অংশবিশেষের সঙ্গে আর্যসংস্কৃতির ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। এ সময় উত্তর ভারতের সম্রাট হর্ষবর্ধন, কামরূপরাজ ভাস্করবর্মা, কনৌজরাজ যশোবর্মা এবং কাশ্মীররাজ ললিতাদিত্য বাংলার অঞ্চলবিশেষের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেন। বিখ্যাত সংস্কৃত নাট্যকার হর্ষবধ©র্নর নাগানন্দ এবং যশোবর্মার সভাকবি ভবভূতির মালতীমাধব নাটক এ সময় রচিত হয়। হয়তো রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই তখন এ সকল নাটক বাংলার প্রশাসনিক নগরকেন্দ্রগুলিতে অভিনীত হয়েছিল। এ ছাড়া কাশ্মীরী কবি কলহন রচিত রাজতরঙ্গিণী থেকে জানা যায় যে, কাশ্মীররাজ ললিতাদিত্যের পৌত্র জয়াপীড় পৌন্ড্রনগরে কার্তিকেয়ের মন্দিরে কমলা নামের সুন্দরী ও দক্ষ নৃত্যশিল্পীর অভিনয় প্রত্যক্ষ করেছিলেন। এ অভিনয় ভরতমুনিকৃত নাট্যশাস্ত্র (খ্রিষ্টপূর্বাব্দ-খ্রিষ্টীয় ৩য় শতক) অনুসৃত ছিল। পালযুগের নাট্যচর্চা সম্পর্কে যে কয়েকটি পুথিগত সাক্ষ্য মেলে, তন্মধ্যে সতেরো শতকের তিববতি ঐতিহাসিক তারনাথের বিবরণ সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য: (বিক্রমপুর) নগরে তিনি (আচার্য অনুপম সাগর) একটি উৎসবে নাট্য প্রদর্শনী প্রত্যক্ষ করেছিলেন। এর ফলে তিনি সমাধি লাভ করেন এবং উপলব্ধি করেন ইহজগতে সব কিছুই মায়া। আর অভিরাম মায়ার এ জগতে জড়িয়ে রয়েছে নাট্য সহযোগী কর্মীরা নাট্য সংস্থার অভিনেতা, পরিচালক ও সংস্থার কর্ণধার। এমনই উদ্যোগের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন 600 নাট্য সংস্থা কর্ণধর, কর্মী অভিনেতা-অভিনেত্রীরা প্রযোজক-পরিচালক সহ একাধিক ব্যক্তিবর্গরা। এছাড়াও নাট্যকর্মীর বাইরে থেকে এগিয়ে এসেছেন চিত্র প্রযোজক কবিতা নস্কর, পলাশ কুমার, সাধন তালুকদার এবং ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট এন্ড অল এডিটর অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী সম্পাদক প্রসেনজিৎ দোলুই।নাট্যকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে ইন্ডিয়া মোশন পিকচার এন্ড কালচার কনফেডারেশন এর জাতীয় সম্পাদক সাধন তালুকদার কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর এর নাট্যকর্মী বিভাগের কাছে দাবী রেখেছেন সরকারিভাবে নাট্যকর্মীদের যাতে মাসিক ভাতা দেওয়া যায় ,সকল নাট্যকর্মী ও কলাকুশলীদের।