প্রতি বছর ৩রা মে পালিত হয় বিশ্ব গনমাধ্যম স্বাধীনতা দিবস।
প্রতি বছর ৩রা মে পালিত হয় বিশ্ব গনমাধ্যম স্বাধীনতা দিবস। নানা ধরনের প্রতিকুল পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার প্রবনতা বাড়ছে গোটা বিশ্বের সাংবাদিক সমাজের সামনে। কেনো মুক্ত গনমাধ্যম প্রয়োজন তা বিশ্লেষণ করেছেন ভয়েস অব আমেরিকার সহকর্মী জেসুসেহমেহ, তার রিপোর্টে। ভয়েস অব আমেরিকার কন্ট্রিবিউটর গ্রেটা ভ্যান সাস্টারেনের এ সপ্তাহের প্লাগড ইনে বিষয়টি উঠে আসে। তবেই সাংবাদিকতার যথোপযুক্ত নিয়মের ধারণা ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কিছু দেশে, সংবাদ মাধ্যমে সরকারি হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রিত হয় এবং পুরোপুরি স্বাধীন সত্তা নয়। অন্যান্য দেশে, সংবাদ মাধ্যম সরকার থেকে স্বাধীন কিন্তু লাভ-লোকসান সাংবিধানিক নিরাপত্তার আওতায় থাকে। স্বাধীন ও প্রতিযোগিতামূলক সাংবাদিকতার মাধ্যমে সংগ্রহ করার মুক্ত উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যে প্রবেশাধিকার জনগণকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে সাহায্য করে।সাংবাদিকথা কিছুই করতে পারেনি, তবে সরাসরি পরিশ্রমের স্বীকৃতি। যা শুধু ব্যক্তি মৃত্যুঞ্জয় সরদার উন্নীত করেনি। উন্নীত করেছে গোটা দেশকে ও রাজ্যেকে। সাহসী এবং নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার জন্য সবার কাছে খারাপ । দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সাংবাদিকতার জগতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে জায়গা করেছেন মৃত্যুঞ্জয় । বিভিন্ন সংবাদ পত্রিকায় সাংবাদিকতায় তাঁর শ্রোতার সংখ্যা অনেক। আর তাই এশিয়ার সেরা সাংবাদিকের স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কারে করা উচিৎ। এ-ই মৃত্যুঞ্জয় সরদার ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট এন্ড অল এডিটর এসোসিয়েশন জন্ম দাতা। তিনি আর্থিক লিপি কায্যকারী সম্পাদক দেবাংশু চক্রবর্তী পাশে আছেন, যদি জীবন চলে যাই যাক তাও মৃত্যুঞ্জয় সরদারের দেবাংশু পাশে অছেন। কলকাতার রাজপথে আন্দোলন করেছে দেবাংশু জন্যে । মৃত্যুঞ্জয় সরদারের কথায় যা প্রকাশ পাচ্ছে! আমি যে অবক্ষয়ের কথা বলেছি, সেটার শিকার কিছু সংখ্যক সাংবাদিক হতে পারেন৷ কিন্তু এই পেশার শাশ্বত একটা চরিত্র আছে৷ বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সময় সাংবাদিকতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে৷ প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ, কর্পোরেট চ্যালেঞ্জ, রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে৷ তারপরও কিন্তু সাধারণ মানুষ সাংবাদিকদের উপর নির্ভর করতে চান৷ এটাই সাংবাদিকতার বড় শক্তি৷সবকিছু মিলিয়েই৷ সাংবাদিকতা তো বিচ্ছিন্ন কোন অংশ না৷ সমাজেরই একটা প্রতিচ্ছবি৷ টোটাল ব্যবস্থার একটি পার্ট হলাম আমরা৷ আয়না যদি ভালো না হয় তাহলে প্রতিচ্ছবি ভালো হবে না৷ সমাজ, রাষ্ট্র যদি আয়না হয় তাহলে সাংবাদিকরা প্রতিচ্ছবি৷ কর্পোরেট কালচারে মালিকেরা অনেক সময় সাংবাদিকদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন৷আর যাইহোক আমরা যখন শুরু করেছি, তখন আমাদের যারা পূর্বসূরি ছিলেন তারা ছিলেন আমাদের আদর্শ৷ বর্তমানে সেই সুযোগটা কমে গেছে৷ এখন মিডিয়ার বিস্তৃতি ঘটেছে৷ সাংবাদিকদের পরিবার অনেক বড় হয়েছে৷ এখন প্রযুক্তির কারণে অত বেশি তথ্য রাখতে হয় না৷ আগে তথ্য নিতে যেতে হতো৷ আর এখন আপনি চাইলে গুগলে গিয়ে বা ইন্টারনেটে গিয়ে সব তথ্যই পাচ্ছেন৷ সেটা শুধু দেশি না, বিদেশী রেফারেন্সও আপনি পাচ্ছেন৷ ফলে সাংবাদিকতায় এখন পরিশ্রমের প্রবণতা কমে গেছে৷ নীতি নৈতিকতা বা বস্তুনিষ্ঠতাও এখন সংখ্যার কারণে কমে যাচ্ছে৷ আগে মালিকেরা একটা ভিশন নিয়ে সংবাদপত্র বের করতেন৷ এখন কর্পোরেট কালচারের কারণে এটা পেশার মতো না হয়ে চাকরির মতো হয়ে যাচ্ছে৷ ফলে নীতি নৈতিকতায়ও একটা কম্প্রোমাইজের ভাব চলে এসেছে৷ যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে সাংবাদিকতার বিবর্তন ও লক্ষনীয়। এ জন্য লেখক উল্লেখ করেছেন সাংবাদিকতা এখন শুধু মুদ্রণ সাংবাদিকতায় সীমাবদ্ধ নেই। সাংবাদিকতায় যুক্ত হয়েছে রেডিও, টেলিভিশন, অনলাইন, সিনেমা ইত্যাদি। এ গুলো এখন শক্তিশালী গণমাধ্যম। এ গনমাধ্যমে যারা কাজ করেন তাদেরকে সাংবাদিক বলা হয়। তাদের সাংবাদিকতাকে তিনি শল্য চিকিৎসার সাথে তুলনা করেছেন এবং বলেছেন শল্য চিকিৎসকেরা যেভাবে রোগ নিরাময় করে থাকেন, ঠিক তেমনিভাবে সাংবাদিকতা পেশার মাধ্যমে সামাজিক চিকিৎসা তথা রাষ্ট্রের অর্থনীতি রাজনীতি, সমস্যা, উন্নয়ন, সম্ভাবনা, খেলাধুলা এবং অপরাধ ইত্যাদি বিষয়ে ভালমন্দ তুলে ধরা যায়। এসব বিষয়ে লিখিত প্রতিবেদনই হচ্ছে ব্যবস্থাপত্র।যাতে জাতির জন্য দিক নির্দেশনা থাকে। এ জন্য লেখক সাংবাদিকদেরকে সামাজিক চিকিৎসক হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। এ সামাজিক চিকিৎসককে সৎ, তীক্ষ্ম বুদ্ধিসম্পন্ন, দুরদৃষ্টি সম্পন্ন, জ্ঞানী ও দক্ষ সাহসী প্রভৃতিগুনের অধিকারী হওয়ায় বাঞ্চনীয় বলে লেখক অভিমত প্রকাশ করেছেন। কারণ অন্যান্য পেশার তুলনায় সাংবাদিকতা পেশা খুবই স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ। একজন প্রখ্যাত সাংবাদিকের উক্তি হচ্ছে যে একজন অদক্ষ চিকিৎসকের ভুলের কারণে একজন রোগীর মৃত্যু হতে পারে, একজন আইনজ্ঞের ভুলের কারণে বিধিসম্মত প্রমাণ পত্র বাতিল হয়ে যেতে পারে। কিন্তু একজন সাংবাদিকের ভুলের মাশুল হচ্ছে আগুনে ভষ্মীভূত ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সমান। এজন্য সামাজিক চিকিৎসক সাংবাদিককে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে দায়িত্ব পালন করার জন্য লেখক পরামর্শ দিয়েছন।“সাংবাদিকদের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু পরিভাষা শীর্ষক প্রবন্ধে ২০(বিশ) টি শব্দ সংযোজন করেছেন, পাশাপাশি শব্দগুলোর ব্যবহার বিধি ও অত্যন্ত চমৎকারভাবে লেখক উল্লেখ করেছেন। সংবাদপত্র শিল্পের সাথে যারা জড়িত তাদের জন্য এ শব্দগুলো সর্ম্পকে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। অন্যদিকে সংবাদের উপাদান শীর্ষক প্রবন্ধটি সাংবাদিকদের পেশাগত উৎকর্ষের জন্য মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। কারণ এ বিষয়টি সাংবাদিকতার মূল বিষয়। যারা নবীন সাংবাদিক যাদের পেশাগত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও নেই বা সাংবাদিকতা বিষয়ে কোন প্রশিক্ষণ ও গ্রহণ করেননি তাদের জন্য প্রতিপাদ্য বিষয়টির মূল্য ঐতিহাসিক। কোনটা সংবাদ, কোনটা সংবাদ নয় এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ধারণা বা জ্ঞান থাকা অপরিহার্য বলে লেখক যে অভিমত ব্যক্ত করেছেন তাতে দ্বিমত করার কোন উপায় নেই।লেখক প্রবন্ধে সংবাদের ১৭টি উপাদানের কথা উল্লেখ করেছেন। বলা বাহুল্য এটি লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা-প্রসূত। বোধ হয় সেজন্যই সংবাদের উপাদানগুলো বহুদিক থেকে গভীরভাবে আলোচিত হয়েছে। এর পরের বিষয়টি হলো সংবাদিকদের গুনাবলী। সংবাদপত্র প্রকাশনা প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত তাদের ভূমিকা ও দায়িত্ব সর্ম্পকে যথাযথভাবে আলোকপাত করেছেন। বলা হয়েছে প্রতিবেদক যে সংবাদ লেখেন তা সম্পাদনা ও সংশোধন করার দায়িত্ব বার্তা বিভাগের সহ-সম্পাদকগণের। প্রতিবেদনকে সম্পাদনা কৌশল ও ভাষার যথাযথ ব্যবহার ও নৈপুণ্য দ্বারা উৎকর্ষসাধন করাই তাদের কাজ এবং তারাই সংবাদপত্রকে চুড়ান্ত রূপদান করেন। এ জন্য সংবাদপত্র প্রকাশনায় সহ-সম্পাদকদের দায়িত্ব ও ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ বলে লেখক উল্লেখ করেছেন।তার পাশাপাশি যারা সাংবাদিকতায় জড়িত তাদের কেও সংবাদপত্রের এডিটিং সহ সাংবাদিকতা সংক্রান্ত বিষয়ে পারর্দশী এবং প্রকন্ধে উল্লেখিত ১৮টি গুনাবলীর অধিকারী হওয়া আবশ্যক বলে লেখক অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বর্তমানে সাংবাদিকতা জগতে নীতি নৈতিকতার যে ধস নেমেছে তা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন দক্ষ প্রশিক্ষিত, সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ সাংবাদিক এটা যে সময়ের দাবী তা লেখক ও উপলদ্ধি করেছেন বলে প্রতিয়মান হয়।তবে সংবাদপত্র জগতে তিন ধরনের সাংবাদিক কর্মরত। এদের মধ্যে সরকারী সাংবাদিক- যারা রাজ্যের সংবাদ সংস্থা ও টিভিতে কর্মরত, আরেকটি হল- ওয়েজবোর্ডপ্রাপ্ত, যারা চিহ্নিত কয়েকটি পত্রিকায় কর্মরত এবং বেশিরভাগ সাংবাদিক হল- যারা ওয়েজবোর্ড বঞ্চিত। যারা দেশ সংবাদ সংস্থায় কর্মরত, তারা সরকারী সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছে। ওয়েজবোর্ড বঞ্চিত সাংবাদিকরা সকল সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত থাকার কারণে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। বড়ই দুর্ভাগ্য তাদের কান্না যেনো কেউ শুনতে পাচ্ছেন না।এই মুহুর্তে অতি প্রয়োজন সরকারী সাংবাদিকদের জন্য একটি ইউনিয়ন এবং বেসরকারী সাংবাদিকদের জন্য আর একটি ইউনিয়নের। ওয়েজবোর্ড বঞ্চিত সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট এন্ড অল এডিটর এসোসিয়েশন সভাপতি বাসিরুল হক । আশা করছি ওয়েজবোর্ড বঞ্চিত সাংবাদিকরা আমার এ প্রস্তাবের ব্যাপারে জনমত সৃষ্টি করে নতুন ইউনিয়ন গঠনের ব্যাপারে এগিয়ে আসবেন।তাই দুনিয়া জুড়ে সংবাদকর্মীরা নানারকম ঝুঁকির মুখে কাজ করে যাচ্ছেন। ১৯৯২ সাল থেকে কয়েক হাজারের বেশি সাংবাদিক মারা গেছেন, হাজার হাজার সাংবাদিক ভয়ভীতি, হামলা, নিগ্রহ ও কারাভোগের শিকার হয়েছেন । যারা বিপদগ্রস্ত সাংবাদিকদের জরুরি সাহায্য দিয়ে থাকে। সাহায্য নানা ধরনের হতে পারে, যেমন মেডিক্যাল বা আইনি সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছে । ক্ষেত্রবিশেষে ঝুঁকিতে থাকা সাংবাদিককে দেশের বাইরেও নিয়ে যাওয়া পরিকল্পনা করছে । অতএব বিপদে পড়লে, আপনিও সাহায্য পেতে পারেন ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট এন্ড অল এডিটর এসোসিয়েশন পাশে!