পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে একশো দিনের কাজ দিচ্ছে ভাবতা গ্রাম পঞ্চায়েত
অপরিকল্পিত লক ডাউন। কাজ হারিয়ে একরাশ হতাশা নিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকরা। যখন নানা রকম ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করে বাড়ি ফিরে, গৃহকর্তার কপালে দেখা দেয় এক লম্বা ভাঁজ। একমাত্র ভরসা সরকারের রেশনে দেওয়া চাল ডাল, আটা। একদিকে কর্মহীন হয়ে বাড়িতে বসে থাকা। অন্যদিকে সংসার চালানোর সঞ্চিত টাকা ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। ফলে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। সমস্যায় আছে সাধারণ গরিব থেকে মধ্যবিত্ত সকলেই। সেই কথা ভেবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে খালের মাটি কাটছেন শ্রমিকরা। স্বস্তি পেলেন একশো দিনের কাজ শুরু হওয়ায়। খানিকটা হলেও আসার আলো দেখছেন তারা। একদিকে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক, অপরদিকে লকডাউন। আর এই দুই পরিস্থিতির মধ্যে আটকে আছে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা। এরইমধ্যে একশো দিনের কাজ শুরু হলো মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা ব্লকের বিভিন্ন অঞ্চলে। তবে মাস্ক পরে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাটি কাটার কাজ করছেন শ্রমিকরা। একদিকে কাজ বন্ধ। অপরদিকে অনাহারে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষজন। তাদের একটাই চিন্তা এই পরিস্থিতিতে কিভাবে তাদের খাদ্য জোটাবেন। তাই এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ভরসা যুগিয়েছে এই একশো দিনের কাজ। বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ভাবতা – -১ অঞ্চলে পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করতে দেখা গিয়েছে। অনেক পরিযায়ী শ্রমিক তাদের এই কাজ পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছে।বেলডাঙা বিডিও বিরুপাক্ষ মিত্র বলেন,” বেলডাঙার বহু পরিযায়ী শ্রমিক বাহির রাজ্য থেকে কাজ হারিয়ে এসেছেন। আমাদের প্রথম কর্তব্য এই সময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো। পরিযায়ী শ্রমিকদের ১৪ দিনে রাখার পর, পঞ্চায়েতের প্রধান ও অন্যান্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার করেন যে, কাজের প্রয়োজন থাকলে ৪ নম্বর ফরম ফিলাপ করতে। সেইমতো অনেকে ফর্ম ফিলাপ করেন। একদিনের মজুরি ২০৪ টাকা। আমরা অনেককে আনতে পেরেছি এই একশো দিনের কাজে। মির্জাপুর ১, মির্জাপুর ২, ভাবতা ১, ভাবতা ২, মহুলা ১, প্রায় সমস্ত গ্রাম অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে মাঠ পুকুর খনন করা হয়েছে এবং খনন চলছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে থাকার জন্য রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা অনুসারে তাদেরকে একশো দিনের কাজের আওতায় আনতে হবে। সেটা আমরা আগেও যেমন করেছি এখনো চেষ্টা করছি। বহু মানুষ আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন বা করে চলেছেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজ পাওয়ার জন্য বেলডাঙা ব্লকে আজকের দিনে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ শ্রমদিবস তৈরি করতে পেরেছি। তবে লক্ষ্যমাত্রা জুলাই মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে প্রায় সাড়ে ছয় লক্ষ করতে পারি অর্থাৎ আরও আড়াই লক্ষ শ্রমদিবস”।
বেলডাঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, “পরিযায়ী শ্রমিকরা যাতে কোন ভাবেই কাজ না হারায় এবং প্রত্যেককে যাতে কাজ পায়, শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশ মেনে আমরা এই কাজ ঠিকঠাক করে চলেছি। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, কেন্দ্র সরকার গরিব কল্যাণ যোজনা নামে একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। আমরা দুঃখের সঙ্গে বলছি পশ্চিম বঙ্গের ১১৬ টার জেলার মধ্যে একটিও জেলার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যদিও মুর্শিদাবাদ জেলা একটি অনুন্নত জেলা হওয়া সত্ত্বেও। আমরা মনে করি এটা দ্বিমাত্রিক সুলভ বা রাজনৈতিক আচরণ “
ভাবতা ১ অঞ্চলের প্রধান সাহেবা সাফিনা বলেন, ভাবতায় সব থেকে বেশি কাজ হয়েছে। বেলডাঙ্গা ব্লকের লক্ষ্যমাত্রার অধিক পরিবারকে কাজ দেওয়া হয় । আগামী দিনে আমরা আরও বেশি পরিবারকে কাজ দিতে পারি সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।