পুনরায় লক ডাউন!আরো কঠোরতা জারি হওয়ার আশঙ্কা
দূরদৃষ্টি পাতাটি পাঠকের নিজস্ব মতামত জন্য, পাঠকের নিজস্ব মতামতের জন্য নিউ সারাদিন কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।
শুভাশিস ঘোষ: করোনা মহামাড়ীতে জেরবার পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ভয়নক সন্ধীক্ষণ বুঝি আমাদের শেষ পর্যন্ত অকাল পতনের দিনকেই নিশ্চিত করতে চলেছে। বিশেষ করে এই ভয়নক ভাইরাসের সবচেয়ে বড় পটভুমি এবার হয়ে উঠতে চলেছে আমাদের দেশ ভারতবর্ষ। যেখানে দেশের মহারক্ষকরা যদি আনপার গাওড়া হয় তাহলে সেই দেশের নাগরিকদের কপালে যে অসীম দুর্ভোগ লেখা থাকে তা আর বলে বোঝানোর প্রয়োজন পড়ে না। সম্পুর্ণ অযোগ্য অপদার্থ একটি রাজনৈতিক দল যাদের তৃর্ণে শুধু আলগা দেশপ্রেম আর ধর্মীয় উন্মাদনা ছাড়া আর কিছু নেই।আর আছে অজস্র তঞ্চকতা, প্রবঞ্চনা আর ভুরি ভুরি মিথ্যাচার। গ্যাসের বড়ি গিলিয়ে দেশবাসীকে কিভাবে অন্ধকারের দিকে প্রতিনিয়ত ঠেলে দেওয়া যায় তারই এক বিরল নজির গড়েছেন নরেন্দ্র মোদী এন্ড অমিত শা কোম্পানি।কথা হল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মত কেন জানুয়ারির গোড়া থেকেই এই প্যান্ডামিক ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাদের সজাগ করা হল না। সেক্ষেত্রে”হু”যখন জানুয়ারী তেই এই মহামাড়ির সম্পর্কে সতর্ক বার্তা জারি করেছিল।এবিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্র মন্ত্রী জভেরকার নিজেই স্বীকার করে বলেছিলেন যে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে নাকি “হু”অনেক আগেই এই সম্পর্কে বারবার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল যা নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী তিনি তার ক্যাবিনেট মিনিটে আলোচনাও করেছিলেন। সুতরাং জাভেরকারের কথা অনুয়ায়ী প্রশ্ন হল যদি এটা সত্যি হয় তাহলে কেন প্রধানমন্ত্রী আদ্ভুতভাবে তিনি এবিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেননি? একশো সাঁইত্রিশ কোটি মানুষের এই দেশের প্রধানমন্ত্রী কিভাবে করোনা ভাইরাসের মারাত্মক প্রভাব সম্পর্কে নিঃশ্চুপডঠুগেঊঈএঐ¶ থেকে দেশবাসীকে এই মারাত্মক বিপদের মধ্যে ঠেলে দিলেন।উচিত ছিল এই ভাইরাসকে আটকাতে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে একটি মাষ্টার প্ল্যান রচনা করা।যার প্রথম শর্তই হত আন্তর্জাতিক উড়ানগুলো বন্ধ করে দেওয়া। এবং ধাপে ধাপে দেশকে লক ডাউনের পথে নিয়ে যাওয়া।আজ যেটা করে উপকার পেয়েছে নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের অনেক গুলো দেশ।৩১ জানুয়ারি কেরোলে প্রথম যখন করোনা আক্রান্ত মানুষের সন্ধান পাওয়া গেল তখন থেকেই আমাদের সাবধনতা অবলম্বন করা উচিত ছিল।উচিত ছিল যে কোন বড় বড় জমায়েত এড়িয়ে চলা। কিন্তু আমরা সেখানে কি দেখলাম না জানুয়ারিতে দিল্লির নির্বাচনে জেতার জন্য বিপুল অর্থে দেশভক্তির পাঠ।”দেশ কি গদ্দারোকো গোলি মারো শালো কো”র ন্যাড়াবাজি,তারপর সেই নির্বাচনে গো-হারা হারার পর দেশে এন আর সি সিএএ এনপি আর নিয়ে হনুমানের নিত্য।প্রতিবাদে বসা সাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের দেশদ্রোহী তকমা দিয়ে জেলে ভরা, সমাবেশে হিন্দুত্ববাদী উগ্রবাদী ঢুকিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে চাওয়া তারপর ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রম্পকে নিয়ে তীব্র আদিখ্যেতা।লক্ষ মানুষের জমায়েত করে গুজরাটের আহমেদাবাদে করোনা ভাইরাসকে আরো ছড়িয়ে দেওয়া হল। এখানেই শেষ নয়।মহামাড়ীর এই কোপের আশঙ্কাকে তুড়ি দিয়ে দিল্লিতে সংগঠিত দাঙ্গা লাগানো হল।প্রায় হাজার খানেক মানুষের সম্পদ লুট ও পঞ্চাশ জনের মৃত্যু মিছিল দিয়ে সফল ভারতকে তুলে ধরার চেষ্টা হল।অন্যদিকে একইভাবে মধ্য প্রদেশের কংগ্রেস সরকারের পতন ঘটাতে গিয়ে কোভিড-১৯নিয়ে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়াতে আরো বেশ খানিকটা দেরি করা হল।অথচ এই সময়কালে নির্ধারিত আচরণ বিধি না মানায় কিভাবে ইউরোপীয় দেশগুলোতে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে মানুষের মৃত্যু মিছিল শুরু হয়ে গিয়েছিল তা আমাদের জানা আছে।যে কারণে বলবো এক অতি গুরুত্বপূর্ণ মুল্যবান সময় আমরা দিনের পর দিন নষ্ট করেছি।সে শুধু আমাদের দেশের কিছু ক্ষমতা লোভী অদুরদর্শি নেতাদের অপদার্থার কারণে।যারই কারনে ভারত আজ করোনা সংক্রমণে প্রায় প্রথম হতে চলেছে বলা যায়।যেখানে লক ডাউনের কারনে দেশের সাতেরো কোটি পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার চিত্র আজ আমাদের সবার জানা।যেটা বলার এতবড় প্যান্ডামিককে যারা খুব পরিকল্পিতভাবে অবজ্ঞা করেছেন যাদের অপদার্থার কারনে দেশে এই মুহূর্তে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাটা প্রায় চার লক্ষ ছিড়িয়েছে মৃত্যুও সমান তালে বাড়ছে যেখানে ইতিমধ্যেই ভারতে করোনায় মৃতের সংখ্যা হল সাড়ে আট হাজার।কথায় বলে শিক্ষিতের সঙ্গে স্বর্গবাস ঘটে আর অশিক্ষিত মুর্খের সঙ্গে থাকলে নরক বাস হয়।যেটাই এখন আমাদের ভাবাচ্ছে বলা যায়।একজন একশো সাঁইত্রিশ কোটি দেশের প্রধানমন্ত্রী আর একজন নধরকান্তি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দুজনের কাজই হল রোজ মানুষকে বুজরুকি আর মিথ্যা ভাষনে ভুলিয়ে রাখা।বিপদে পড়লেই তার থেকে নজর ঘোরাতে দেশপ্রেমের টনিক গেলানো যা আজ ওদের কাছেই বুমেরাং বলা যায়।কারণ এবারে বৈদেশিক শত্রুতার চরম শিখরে নেপাল পৌঁছে গেছে বলা যায়। যেখানে ভারতের তুলনায় পুঁচকে এই দেশ এখন রোজ চোখ রাঙাছে।একটা হিন্দুরাষ্টের মাত্র আড়াই কোটি জণগন কিভাবে ভারতের মত সুবিশাল রাষ্ট্রকে হুমকি দিতে পারে সেটা নিয়ে গবেষণা করা গেলেও আশ্চর্য হওয়ার কোন কারন নেই।এশিয়া উপমহাদেশের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্পের পা ছুঁয়ে যদি কেউ মনে করেন তিনি এক বিশাল হুণু হয়ে গিয়েছেন যার জেরে পড়শি ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলোকে সম্মান দেওয়ার বদলে রোজ অসম্মান দেখানো যায় তাহলে সেটা আরো বড় ভুল।মনে রাখতে হবে ১৯৯০ সালে আমেরিকা কয়েত দখল করলে তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইরাক যুদ্ধ করে।যদিও আমেরিকার তুলনায় কম ক্ষমতাধর ইরাকের হার হলেও এক্ষেত্রে নেপালের পিছনে চীনের মদত আছে।যাদের নিয়ে ভারত বিলাশী স্বপ্ন দেখলেও যুদ্ধ বাধলে ভারতকে কঠিন লড়াইয়ের মুখেই পড়তে হবে। বিশেষ করে যে দেশ বিগত ছয় বছর ধরে এক চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে চলছে।যেখানে আমাদের বর্তমান বিকাশ সূচক প্রায় শুন্য বলা যায়। লক ডাউনে দেশের অর্থনীতি আজ কতটা খারাপ তা এক ক্লাস ফাইভের ছেলেও বলে দেবে।যদিও এই চরম সত্যটা আমাদের দেশের দুই জগাই মাধাই বুঝতে পারছেন না।তারা এখন পি এম কেয়ারের তহবিলের অর্থে ভার্চুয়াল জণসভা করছেন। লজ্জা হয় এটা ভেবে এতবড় নির্দয় নির্মম হৃদয়হীন সরকার এর আগে কখনো মানুষ দেখেনি।যাদের কাছে ভোটই হচ্ছে একমাত্র বালাই।