স্বেচ্ছায় মানুষের পাশে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ।
করোনা ভাইরাসের কারণে আজ বিশ্ব বিপর্যস্ত । বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে একের পর এক দেশ। পুরো বিশ্ব আজ অসহায় করোনার কাছে । তার উপর চলছে লকডাউন। এর ফলে সমস্যায় পড়েতে হচ্ছে সাধারণ গরীব মানুষ থেকে মধ্যবিত্ত সকলেই। সাধারণ মানুষ আজ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। পরিবারের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, খাবার, সব কিছু আজ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে তাদের মধ্যে। এই রকম পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । প্রত্যেক জেলা শাসক, জেলা পুলিশ সুপারদেরও নির্দেশ দিয়েছেন গরীব, অসহায় পরিবারের পাশে থাকার জন্য। কেউ যাতে না খেয়ে মারা না যায়, একটি উল্টোটাই ঘটে চলেছে রাজ্যের নিম্নমধ্যবিত্ত ন প্রায় অনাহারে দিন যাচ্ছে। কিন্তু সেই মানুষ গুলো আজ কোথায়! যারা নিজেদের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও অন্যকে আহার করায়। সেই সব মানুষ গুলো আজ কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে গরীবের কাছে সাহায্য করা সেই মানুষ গুলো যেন চোর পুলিশের খেলার মতো হারিয়ে গেছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অসহায় পরিবারের পাশে অনেকেই দাড়িয়েছেন। কারণ লক ডাউন চলছে । না আছে মানুষের আয়, না পারছে ঘরের বাইরে যেতে। যাবে কোথায়? কিছু চালের জন্য কোথাও লাইনের খোজ করতে হচ্ছে তাদের। সেটাও সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে। যেভাবে চাল, ডাল ছবি তুলে, মিডিয়া ডেকে লাইনে দেওয়া হচ্ছে , দেখলে মন ভরে যায় কিন্তু বাস্তবে তো সে কথা বলেনা। বাস্তব বলছে বিশ্ব জুড়ে মনে হচ্ছে একটি সিনেমার শুটিং চলছে। অনেক সাধারণ মানুষ যারা আজ লজ্জায় বাধ্য হয়ে লাইনে দাড়াতে হচ্ছে। কেউকি ভেবেছে কেন তারা লাইনে আসবে? তাদেরও তো সম্মান আছে। কারণ তাদের ঘরে ছোট বড়ো ছেলেমেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে। যদি অনাহারে মারা যায়! কিন্তু এই পর্যন্ত কাউকে দেখা মিললো না বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের স্বসম্মানে খাবার দিতে। পুলিশের কাজ তো দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা। তাহলে কেন পুলিশ কে বাড়ি বাড়ি যেতে হচ্ছে এই সব লোকদের সাহায্য করার জন্য। এটা বুঝতে কাউরির অসুবিধে নেই। অসুবিধা তার যে ঠিকমতো সাহায্য পাচ্ছে না। তাহলে পুলিশ কি পারে আর পারেনা, সেটা চোখ বুঝে বুঝিয়ে দিলেন আমার, আপনার, সবার প্রিয় মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ শুপার শ্রী অজিত শিং যাদব। প্রশংসা না করলেও পুলিশ শুপারের সাধারণ পরিষেবা গুলো দাড়িয়ে দেখার মতো। তিনি জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় সাধারণ গরীবদের এই লক ডাউন এর সময়, থানায় কিংবা সবার সামনে রাস্তায় লাইন না দিয়েও সাহায্য করা যায়, তার প্রমান রেখে গেলেন। জেলা পুলিশ সুপার অজিত শিং যাদব এই অসহায় পরিবারের সাহায্য করার জন্য কোনো রকম অপচয় করেন নি। অনেক জায়গায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য সাহায্যের সময় রাস্তায় আঁকছে চুন দিয়ে বৃত্তাকার, তুলছে ছবি, ভিডিও। তাহলে জেলা পুলিশ শুপার তো এগুলো কিছুই করেনি। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠে আসে তাহলে পুলিশ কি সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখছে না? সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখেই সাহায্য করছে? কে বলছে সাহায্যের জন্য সব সময় এটা প্রয়োজন! সম্প্রীতি মুর্শিদাবাদ জেলার খড়্গ্রাম, ভরতপুর সহ একাধিক থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকগন পুলিশ সুপারের নির্দেশ মতো সেই কাজ করে বুঝিয়ে দিলেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল,ডাল, আলু, লবণ, সর্ষের তেল, সয়াবিন, সাবান, মুড়ি, মাস্ক ইত্যাদি বিতরন করলেন। প্রয়োজন হয়নি সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য চুনের বৃত্তাকার, ডাকেনি কোনো মিডিয়া ।লাইনে দাড়াতে হয়নি কাউকেই। হয়নি কোনো অনুষ্ঠানের উদ্বোধন। কিন্তু কিছু সময়ের মধ্যেই গরিবের ঘরে পৌছে গেল খাবার, এ কেমন যেন মনে হচ্ছে যে মেঘ না চাইতে জল অসহায় পরিবারের কাছে।
এই মহান মানবিকতার পাশাপাশি চলছে জেলা জুড়ে পুলিশের নাকা চেকিং, ফুট পেট্রোলিং, অবৈধ মদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ। এতে জেলাবাসীর কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছেন জেলা পুলিশ শুপার অজিত শিং যাদব। সাহায্য করতে গেলে লাগে না উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, লাগে শুধু একটা পবিত্র মন।