রাজ্য

ফোন করলেই পৌছে দিচ্ছেন অসহায় পরিবারকে খাবার এবং ওষুধ, OC রানিনগর।

মুর্শিদাবাদ : সারা পৃথিবীতে থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস। এই ভাইরাস সংক্রমনকে রুখতে এখন একটাই রাস্তা লকডাউন। লক ডাউন এর জেরে চলছে রাজ্যজুড়ে কড়া আইন। আর সেই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অনেক জায়গায় চলছে অযথা ঘোরাঘুরি আবার কোথাও অবাধ মেলামেশা। এরইমধ্যে রাজ্যের পুলিশ চালিয়ে যাচ্ছে অক্লান্ত পরিশ্রম যাতে লকডাউন সফল হয়। যতদিন এগোচ্ছে লকডাউনে ততই যেন ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে একশ্রেণীর মানুষের মধ্যে। সুযোগ পেলেই বাড়ির বাহিরে অযথা বেরোচ্ছে তারা। চলছে বন্ধুদের সঙ্গে রাস্তার মোড়ে মোড়ে জমিয়ে আড্ডা। অযথা বাহির হচ্ছে গাড়ি, বাইক, এবং সাইকেল নিয়েও। অনেকে মাস্ক না পরে যাচ্ছেন বাহিরে যদিও রাজ্য সরকারের কড়া নির্দেশ মাস্ক পরার জন্য। কিন্তু রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার বারবার মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কেউ যেন অযথা বাড়ির বাইরে না যায়। অত্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে কেউ যাবেনা। প্রয়োজনে বাহিরে গেলে মাস্ক অপরিহার্য। কিন্তু সমস্যা হলো কে কার কথা শুনে? সেই কঠিন পরিস্থিতিকে সামাল দিতে হলে প্রয়োজন এখন পুলিশের সাধারণ মানুষেদের বোঝানো । তাছাড়া মুর্শিদাবাদের সালারে ধরা পড়েছে করোনা ভাইরাস।খুবই ভয়ংকর। আর সেই ভয়ংকর পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। সেই উদ্দেশ্য নিয়ে কড়া হস্তে দমন করতে শুরু করে দিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সমিত তালুকদার। লকডাউনে অনবরত কাজ করে চলেছেন তিনি।মানুষের মধ্যে মিশে থেকে কিভাবে কাজ করতে হয় সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন সাধারণ মানুষকে। তিনি জানেন প্রত্যেক মানুষের সম্মান আছে, হোক ছোট কিংবা বড়ো। তাই এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে যেভাবে দাঁড়িয়েছেন সেটা নজিরবিহীন। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্নভাবে গরীব-দুঃস্থদের দেওয়া হচ্ছে চাল,ডাল ইত্যাদি। কিন্তু প্রতিনিয়ত মানুষ দেখতে পাচ্ছে সেই ছবিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে ব্যতিক্রমী হলেন সমিত তালুকদার। তিনি ছবি না দেখিয়ে বুঝিয়ে দিলেন যে, মানুষের পাশে থাকার ইচ্ছা থাকলে, পাশে থাকা যায়। দরকার হয়না কোন ক্যামেরা বা মিডিয়া। তিনি জানেন পেটের জ্বালা বড়ো জ্বালা। তাই বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি চাল-ডাল, ওষুধ ইত্যাদি। সেটাও কিন্তু আবার গোপনে। ফোন করলে পৌঁছে দিবে আপনার বাড়িতে। জানবে না কেউ। উঠবে না ছবি। খাবার থেকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিস। এমন কি ওষুধও। এই মানসিকতা দেখে রানীনগর থানা এলাকার বাসিন্দাগন খুবই খুশি। তবে সমিত তালুকদার শুধু রাণীনগর থানায়ই নয়, বিভিন্ন থানায় পোষ্টিং এ থেকে মানুষের পাশে এইভাবে কাজ করে আসছেন। পেয়েছেন সবার আশীর্বাদ। দিনের পর দিন রানীনগর বাসীকে যেভাবে সচেতন করে আসছেন, তা দেখার মতো। লক ডাউন এর সময় তিনি সকলকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানান। বাজারে বাজারে মাইকিং প্রচার থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় নজর রাখছেন এবং চলছে তার নেতৃতে টহলদারি। পাশাপাশি অনুরোধ করছেন সকলকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে। বাজারে কেনাকাটা থেকে শুরু করে মুদি, রেশন, ব্যাঙ্ক, মসজিদ সহ অন্যান্য জায়গাগুলোতে। সকলের নিরাপত্তার স্বার্থে যাতে লোক ডাউন সফল করা যায়, সেইজন্যই তার এই অক্লান্ত পরিশ্রম। কারণ যে কেউ যে কোন সময় হতে পারে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত।লক ডাউন এর সময় সব কিছুই বন্ধ। তার মধ্যে খোলা আছে কিছু অত্যাবশ্যকীয় পণ্য। যেমন পাণীয় জল, খাদ্য, মুদিখানা, সবজি, হাসপাতাল, মেডিক্যাল সেন্টার, টেলিফোন, ওষুধের দোকান।খোলা থাকবে রেশন দোকানও। কিন্তু এই সব অজুহাত দেখিয়ে অকারণে বাহির হচ্ছে এক শ্রেণীর মানুষ। রানিনগর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সমিত তালুকদার এক দিকে যেমন কড়া হস্তে দমন করছে, অন্য দিকে অসহায় সাধারণ মানুষদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রতিদিন চলছে বাজারে গিয়ে মাইকিং, অযথা ঘোরাঘুরি করবেন না। মাস্ক পরে চলাফেরা করুন। রাস্তা চলতি ভব ঘুরেদের দিচ্ছেন খাবার, টাকা। ইমাম, মোয়াজ্জেমদের ডেকে করছেন মিটিং। বোঝাচ্ছেন এই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ংকরতা। সমিত তালুকদার, তিনি মাঝে মধ্যে ঘুরে দেখছেন কুয়ারেন্টাইন সেন্টারও। তিনি নিজের ব্যস্ততার মধ্যেও সব দায়িত্ব এক সঙ্গে সামলে চলেছেন। রানিনগর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সমিত তালুকদারের এই কাজে খুসি বলে জানান এলাকাবাসী। সমিত তালুকদার বলেন, ” আমদের ফোন করলেই তার বাড়িতে চাল, ডাল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পৌছে দিচ্ছি। কিন্তু এটাও গুপ্তভাবে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে রানিনগর থানার পুলিশ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে আছে “।

Related Articles

Back to top button