সংশোধনাগারে বন্দী অসহায় পরিবারের পাশে SDPO খড়্গপুর।
পুলিশের ভুলভ্রান্তি নিয়ে মাঝেমধ্যেই উঠে আসে অনেক প্রশ্ন। কিন্তু সেগুলো পেশাগত দায়িত্ব পালনে সহায়ক ভূমিকা রাখে। আবার অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের ইতিবাচক ভুমিকা, ভালো কাজের প্রশংসাও উঠে আসে, যে গুলো সমাজে তার সুন্দর প্রভাব পড়ে এবং পুলিশ সদস্যরাও অনুপ্রাণিত হয়। এটা প্রমাণ করে দেখালেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর এস.ডি.পি.ও. শ্রী সুকোমল দাশ। এবং খড়্গপুর রেল স্টেশনের প্লাটফর্ম ইন্সপেক্টর(জি আর পি) শ্রী সঞ্জয় বিশ্বাস। করোনা ভাইরাস এর জন্য সরকারের নির্দেশে রাজ্যে ও দেশে চলছে লক ডাউন। এই রোগ থেকে দূরে থাকার একমাত্র পথ হলো এটাই । সেইজন্যই সাধারণ দরিদ্র মানুষের চরম ভোগান্তি। দুবেলা-দুমুঠো খাবার পেতে গরিব মানুষগুলো একেবারে নাজেহাল। এই পরিস্থিতিতে দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুরের এস.ডি.পি.ও. শ্রী সুকোমল দাশ এবং খড়্গপুর রেলস্টেশনের প্লাটফর্ম ইন্সপেক্টর (জি আর পি) শ্রী সঞ্জয় বিশ্বাস। বুধবার সুকোমল দাশ নিজস্ব উদ্যোগে জেলবন্দি কিছু অসহায় পরিবারের জন্য খাবার বিতরণ করেন। সাধারণ মানুষ জানে পুলিশ জেলে ভরা ছাড়া কিছুই জানেনা। কিন্তু বাস্তব তো অন্য কথা বলছে। পুলিশ কি পারে আর পারেনা সেটা কাজেই প্রমান করে দেখিয়ে দিলেন শ্রী সুকোমল দাশ। আর এই বাস্তবটাকে সবার সামনে তুলে ধরেছেন যে পুলিশরাও মানুষ, কারণ মানুষ মানুষের পাশে থাকে। তিনি উপলব্ধি করেন যে, জেলবন্দি পরিবারের সবাই অপরাধী নয়। ওদের অনেকের পরিবার খুবই দরিদ্র। সেইভেবে জেলবন্দি অপরাধীদের পরিবারের পাশেও দাঁড়ান এই মহা মানবিক পুলিশ অফিসার।
আজও কিছু মানুষ যারা সংশোধনাগারে বন্দি আছেন, তাদের অসহায় পরিবার এর হাতে ১০/১২ দিনের খাদ্য টাউন থানার অফিসার দের মাধ্যমে তুলে দিয়েছেন । তাঁর আশা, এই রত্নাকরেরা আবার বাল্মিকী হয়ে এ যুগের রামায়ন লিখবেন। শুধু তাইনা শুক্রবার সকালে মালঞ্চ, গেটবাজার, খরিদা, নিমপুরা, ডিভিসি বাজার প্রভৃতি এলাকায় লকডাউন সুনিশ্চিত করে বহু চা, ইডলি, পুরি দোকানে অকৃত্রিম আড্ডা চলছে। সেই রকম ৯ জন দোকানদারকে থানায় নিয়ে এসে বুঝিয়েছেন যে সবার ভালোর জন্যই সবাইকেই এই লক ডাউন মেনে চলা উচিত। তারপর তাদেরকে থানা থেকে ছেড়েও দেওয়া হয় এই বার্তা দিয়ে ‘ সাবধান হোন, সাবধান করুন’। সুকোমল দাশ বলেন ‘অপরাধ মূলত আর্থ-সামাজিক বৈষম্য থেকে আসে।যে অপরাধ করে তার অপরাধ কে ঘৃণা করা উচিত, সেইজন্যই তো জেলখানার নাম বদলে সংশোধনাগার হয়েছে’। এর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভালোর জন্যই তিনি লক ডাউনে তাদের বাহিরে না বেরনোর জন্য সর্বদাই অনুরোধ গেছেন। খড়্গপুরে পবিত্র হৃদয় চার্চে সত্তর পরিবারকে খাবার দিয়ে হাসি ফুটিয়েছেন। এছাড়া ১৪১ জন ড্রাইভার, ক্লিনার এবং অন্যান্য খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন এই মহা মানবিক পুলিশ অফিসার।
শুধু তা-ই নয়, আরেকজন পুলিশ অফিসার যার নাম মানুষের মুখে মুখে শুনতে পাই তিনি সত, মহা মানবিক, উদার। তিনি মনেও উদার, কাজেও উদার এবং ধৈর্যশীল অফিসার তিনি আর কেউ নন খড়গপুর রেলস্টেশন প্লাটফর্ম ইন্সপেক্টর (জি আর পি) শ্রী সঞ্জয় বিশ্বাস। তিনিও এই রকম পরিস্থিতিতে নিজ উদ্দ্যোগে, নিজের সাধ্যমতো অনেক অসহায় পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিয়েছেন। এমনকি রাস্তা চলতি মানুষদেরকেও নিজ হাতে খাবার দিয়েছেন। শ্রী সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, আমাদের সাধ্যমতো যতটা পেরেছি সাহায্য করেছি।