মতামত

ন্যায় কর্মফল দাতা শনি দেব

—-:মৃত্যুঞ্জয় সরদার:—-

যত মত তত পথ’ নিয়ে। আজকাল নানা স্থানে এই মতবাদ নিয়ে সমালোচনা দেখতে পাই। তাই দু’চার কথা আমারও বলার ইচ্ছে হল। ‘যত মত তত পথ’ দিয়ে শ্রীরামকৃষ্ণদেব বুঝিয়েছেন জগতের সব ধর্মমতগুলো সত্য। কি কারণে সত্য? কারণ তারা প্রত্যেকে সত্যকেই অনুসন্ধান করছে। সেই অর্থে তিনি সত্য মেনেছেন। এখন অধুনা প্রাজ্ঞগন সেটা অস্বীকার করেন এই বলে যে সমস্ত ধর্মগুলোতে আচারগত বৈপরীত্য এত বেশী যে একসঙ্গে সব ক’টাকেই সত্য বলাটা উন্মাদের কাজ!আজকের যুগে আমরা কোন জাতি এই কথাগুলো মেনে নিতে বাধ্য নয়, তাই এত অরাজকতা!আর এই অরাজকতার মূলে আমার আপনার মত কিছু ব্যক্তি যুক্ত। আর সেই কারণেই মানব জাতি র সঙ্গে দেবতা কুলের মধ্যে ভীষণ ফারাক রয়ে গেছে, মানব জাতির সঠিক কর্ম দেবতার রূপ নেয়। কর্মই হচ্ছে মূল ধর্ম এ কথাটি মেনে চলা উচিত, কর্ম যদি খারাপ হয়েছে শনি তাকে ছেড়ে কথা বলে না। কর্মফল দাতা শনি দেব কে নিয়ে বহু বিতর্ক রয়েছে জ্যোতিষ বিজ্ঞান বলছে শনি একটি গ্রহ ,আর আমাদের সনাতন ধর্মের মানুষ শনিদেবকে সবার বড় ঠাকুর জানে। শনি যেমন একটি গ্রহ অন্যদিকে শনি দেব একজন ঈশ্বর ইতিহাস আমাদের অনেকেরই জানা। তবে আমরা নবগ্রহের একটি গ্রহ শনি, না শনিদেব কে ভয় পায় ।শনি শব্দটির মধ্যে ভয়-ভীতি ও শ্রদ্ধা সবকিছু যেন লুকিয়ে রয়েছে আর মানুষ সেটাকে প্রাচীনকাল থেকেই মেনে এসেছে।আর এসব উত্তর খুঁজে পেতে বহু পত্র-পত্রিকা রাতের মধ্যে পড়ে শেষ করতে হলো।শনিদেব আসলে কে এটা নিয়ে আজ আমার কলমে আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।সৌর মণ্ডলে স্থিত পৃথিবী থেকে ৮৯০০০০০০ মাইল দূরে অবস্থিত এবং সূর্য থেকে এর দুরত্ব ৮৮৬০০০০০০ মাইল দূরে শনি গ্রহের স্থিতি । তুলনামূলক পৃথিবী থেকে ৯৫% গুন অধিক চৌম্বকীয় শক্তি সম্পন্ন । সূর্য পরিক্রমা করতে ২৯ বছর লাগে ।তবে আমরা জানি শনি’ নবগ্রহের একটি অন্যতম গ্রহ, শনি গ্রহকে গ্রহরাজ-ও বলা হয়ে থাকে। শনিদেব সনাতন ধর্ম মতে একজন দেবতা। শনি উগ্র দেবতা বলে কুখ্যাত। জ্যোতিষীদের মতে শনির কুদৃষ্টি অশুভ ফল নিয়ে আসে। সৌরজগতের শনি গ্রহ ও সপ্তাহের শনিবার দিনটি শনিদেবেরর নামে নামকরণ করা হয়। শনিদেব কে শনিশ্চর বা শনৈশ্চর নামেও ডাকা হয়। শনি সনাতন হিন্দু ধর্মের একজন দেবতা যিনি সূর্যদেব ও তাঁর পত্নী ছায়াদেবীর পুত্র, এজন্য তাঁকে ছায়াপুত্র-ও বলা হয়।তবে এ নিয়ে অনেক সন্দেহ হয়ে গেছে মানুষের মনের মধ্যে, শনিদেব কে নিয়ে প্রচুর বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে বহু ক্ষেত্রেই। শনি সবার বড় ঠাকুর হলেও তিনি তাহলে শনি গ্রহ হলেন কিভাবে? প্রশ্নর উত্তর নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে আজও! আসলে শনি গ্রহদেবতা হিসেবে সবিশেষ পরিচিত।জ্যোতিষশাস্ত্রে জন্মছকে এর অবস্থান বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়। শনি দ্বাদশে, জন্মরাশিতে ও দ্বিতীয়ে অবস্থানকালে সাড়ে সাত বছর মানুষকে প্রচণ্ড কষ্ট দেয়। শনিদেবকে নিয়ে বিভিন্ন পুরাণে বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ আছে।স্কন্দ পুরাণ বলে শিপ্রা ও ক্ষাতা নদীর সংযোগস্থলে জন্মগ্রহণ করেই শনি ত্রিলোক আক্রমণ করেন। আতঙ্কিত ইন্দ্র ছুটলেন ব্রহ্মার কাছে। নিরুপায় ব্রহ্মা সূর্যের কাছে। এর আগেই শনি দ্বারা আক্রান্ত সূর্য ব্রহ্মাকেই শনিকে সংযত করার অনুরোধ করলেন। ব্রহ্মা গেলেন বিষ্ণুর কাছে। বিষ্ণু গেলেন শিবের কাছে। শিব শনিকে ডেকে অত্যাচার করতে বারণ করলেন। তখন শনি শিবকে তাঁর জন্য খাদ্য, পানীয় ও বাসস্থানের উপায় করতে বললেন। শিব শনিকে মেষ থেকে মীন রাশিচক্রে ভ্রমণ করার ব্যবস্থা করে দিলেন। নিয়ম মত জন্মরাশি, দ্বিতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও দ্বাদশে শনি সর্বদাই ক্রুদ্ধ হবেন। কিন্তু তৃতীয়, ষষ্ঠ বা একাদশ স্থানে এলে তিনি উদার। পঞ্চম বা নবম স্থানে এলে তিনি উদাসীন।সেই কারনে অধিকাংশ মানুষের ধারণা শনিদেব দুঃখদায়ী, সম্পত্তি ও বিত্তনাশক, পীড়াদায়ক, ক্রূর, অশান্তি ও অমঙ্গলকারী গ্রহ। কিন্তু বাস্তবে তা নয়, স্বভাবে শনিদেব গম্ভীর, কঠোর তপস্বী, কূটনীতিজ্ঞ, অত্যন্ত নিষ্ঠা ও ন্যায়প্রিয়, দয়ালু, কৃপালু ও অতি শীঘ্র প্রসন্ন হওয়া দেবতা। পূর্বজন্ম কিংবা বর্তমান জন্মের কর্মানুসারে তিনি ভালো বা মন্দ ফল প্রদান করে থাকেন। যদি কোনও ব্যক্তি অজ্ঞানতাবশত পাপ করে তাহলে শনিদেব ক্ষমা করে পাপকারীর অজ্ঞাতেই তাকে সুকর্মের প্রতি পরিচালিত করেন। তিনি হচ্ছে ন্যায় কর্ম প্রতিষ্ঠাতা,তিনি কর্মফলদাতা ন্যায় কর্ম যিনি করেছেন তা না প্রতিদিনই খুশি হয়েছেন ।যে অন্যায় করেছেন তার প্রতিদিনই রুষ্ট হয়েছেন ইনি হচ্ছেন শনি দেবতা।অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার ক্ষমতা শনিদেবের মধ্যে ছিল চিরন্তন ভাবে। একজন মানুষকে যেভাবে অত্যাচার, অবিচার অনাচার, করলে তার ভিতরে যেমন ক্রোধ তৈরি হয়। সুখ দুঃখে ক্ষোভে গম্ভীর হয়ে ওঠে এবং একটা সময় ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে । তেমনি শনিদেবের প্রতি অবিচার, অনাচার হয়েছিল আর সেই রাগে নিজেকেই , শক্তিশালী হয়ে মনের ভেতর থেকেই। তাই তিনি সবার শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করেছিলেন। তবে এসব সম্ভাব্য এযুগেও মানুষ যতই তাকে বঞ্চিত করুক না কেন, সে নিজে একদিন ঘুরে দাঁড়ায়। তেমনই ইতিহাস শনিদেবের।শনির ক্রূরতা সম্পর্কে সকলেই অবহিত । এমন লোক খুব কমই আছে যে শনির নাম শুনে ভীত হয় না । সূর্য দেবের নয় পুত্র এর মধ্যে শনির নাম বিশেষ উল্ল্যেখযোগ্য । সূর্য দেবের পত্নী ছায়ার পুত্র শনি দেবের গায়ের বর্ণ কালো । শনি ছোট বেলা থেকে বদ মেজাজি । সূর্য দেব নিজের রাজ্য তার পুত্র দের মাঝে ভাগ করে দিলেন । প্রত্যেক সন্তান কে এক এক লোকের অধিপতি করে দিলেন । শনি দেব এক লোকের অধিপতি হয়ে খুশি ছিলেন না । তাই তার ভাইদের কাছ থেকে রাজ্য কেড়ে নেবার পরিকল্পনা করলেন । অধিক শক্তি লাভের জন্য তিনি বন্মভা তপস্যা বসলেন তার তপস্যা সন্তুষ্ট হয়ে দেখা দিলেন । তিনি তাকে বর চাইতে বললেন । শনি দেব তখন বললেন ঃহে ভগবান ,আমার শুভ দৃষ্টি পড়লে যেমন কারো ধন সম্পত্তি ঘর সন্তান ইত্যাদি সুখি ও সম্পন্ন হয় তেমনি কু দৃষ্টি পড়লে যেন যার উপর পড়বে তার যেন সব ছারখার হয়ে যায় । ব্রন্মভা তাকে বর দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলেন । শনিদেবের ক্রোধের ফলে মানুষকে একদম নিস্তেজ করে দেয়, শনিদেবের নিজের ভাইয়ের উপর পড়েছিল।শনি দেব শক্তি প্রাপ্ত হবার পর শনি দেব তাঁর ভাইদের রাজ্য ছিনয়ে নেওয়ার জন্য তৎপর হলেন । তখন অন্যান্য ভাইরা সবাই পিতা সূর্য দেবের স্মরণাপন্ন হলেন হলেন । সূর্য দেব তখন ভগবান শিবের স্মরণাপন্ন হলেন এবং প্রার্থনা করলেন । সূর্য দেবের প্রার্থনা শুনে শনি দেব কে মারার জন্য নন্দী ও বীরভদ্র কে পাঠালেন । এরা সবাই শনি দেবের কাছে পরাজিত হয়ে ফিরে এলেন । তখন শিব ক্রুদ্ধ হয়ে নিজেই শনির সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য তৃতীয় নয়ন খুললেন । শনি তার মারক দৃষ্টি দিয়ে শিব কে দেখলেন । উভয়ের দিব্য দৃষ্ট জ্যোতিঃ সারা মহাকাশ আচ্ছাদিত হল । এবার শিব তাঁর ত্রিশূলের প্রহারে শনি অবচেতন করলেন । নিজ পুত্র কে মৃত ভেবে শোক গ্রস্ত হলেন এবং শনির জীবন দানের জন্য প্রার্থনা অনুনয় বিনিময় করতে লাগলেন । সূর্যের প্রার্থনা শুনে শিব শনির মুরচ্ছা ভঙ্গ করলেন ।  শনিদেবে অভিমান ভঙ্গ হল এবং ভগবানের পাদপদ্মে নিজেকে সমরপন করে ক্ষমা চাইলেন ।আসলে অসহায় শনি ভাই-বোনের থেকে দূরে সরে আরও ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন। এ সব কিছুর দায় সন্ধ্যার ওপর চাপিয়ে তাঁকে একদিন লাথি মারেন তিনি। সেই রাগে শনিকে খোঁড়া হয়ে যাওয়ার অভিশাপ দেন সন্ধ্যা। এই ঘটনার কথা জেনে হতবাক হয়ে যান সূর্য। মা-কে লাথি মারার জন্য শনির ওপর তিনি ক্রুদ্ধ হলেও বেশি অবাক হন সন্ধ্যার ভূমিকায়। একজন মা কী করে তাঁর সন্তানকে এমন অভিশাপ দিতে পারেন, তা ভেবে পান না সূর্য্য। সন্ধ্যার কাছে সব জানতে চান তিনি। সূর্যের জেরায় ভেঙে পড়ে তাঁকে সব জানান সন্ধ্যা।শনির ওপর এতদিন এত অন্যায় হয়েছে বুঝতে পেরে নিজের ভুল স্বীকার করেন সূর্য্য। শনিকে সৌরমণ্ডলে স্থান দেন তিনি। কর্মফলের দেবতা হিসেবে শনিকে উন্নীত করা হয়। কেউ কোনও অপকর্ম করলে শনির নজর এড়ায় না। শনির হাতে তার শাস্তি নিশ্চিত। তবে কোন মানুষের উপরে যদি শনিদেব রুষ্ট হয়ে থাকে, তখনই
মানুষের বুদ্ধিভ্রষ্ট হয় সেইসময়, যখন শনিদেব শকুনের উপর বসে অশুভ প্রভাব ফেলেন। কোনও নারী-পুরুষের অত্যন্ত কষ্টকর মৃত্যুযোগ থাকলে ভগবান সূর্যপুত্র হরিণে চড়ে আসেন। দেহ থেকে প্রাণবায়ু নির্গত হয় সীমাহীন কষ্টভোগের মাধ্যমে।
ছায়ানন্দনের কুকুরের পিঠে চড়ে বাড়িতে আগমন ঘটলে সেই সময় গৃহে নানান রকমের অশান্তি ও ভয়ভীতির সৃষ্টি হয়। একই সঙ্গে হয় চুরি।
পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সোনা রুপো লোহা ও তামা, এই চারটি ধাতুকে শনিদেব চরণ হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন। যেমন – যখন কোনও নারী বা পুরুষের ধনসম্পত্তি ইত্যাদি সমস্ত কিছু নাশ করেন তখন ছায়ার সুপুত্র শনিদেব আসেন লোহার চরণে অর্থাৎ ওই চরণে অশুভ প্রভাব ফেলেন তিনি। কারও উপর শুভ প্রভাব বিস্তারের সময় তিনি আসেন তামা ও রুপোর চরণে। এই সময় মানুষের জাগতিক সমস্ত শুভ কর্মে সুখ ও সাফল্য আসে। যখন সূর্যতনয় শনিদেব নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কারও উপর অপার করুণা করেন তখন তিনি আসেন সোনার চরণে। এই সময় মানুষের ধনে-জনে লক্ষ্মীলাভ, সম্মান যশ অর্থ খ্যাতি ও প্রতিপত্তিলাভ হয়ে থাকে। সুখ ও সৌভাগ্য বৃদ্ধি হয় যেন দিনে দিনে।তবে,শনিদেব মৃত্যু ও ন্যায় বিচারের দেবতা যমদেব বা ধর্মরাজের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে এবং বাংলাদেশের হিন্দু অধ্যুষিত অঞ্চলে শনিদেবের ছোটবড় মন্দির দেখা যায়, এবং সেখানে সপ্তাহান্তে শনিবার বড় ঠাকুরের সাপ্তাহিক পুজার্চনা হয়ে থাকে। এছাড়াও সারা ভারতে বেশকিছু বড় বড় শনি মন্দির ও তীর্থস্থান উল্লেখযোগ্য, যেমন তিরুনাল্লার শ্রী শনিশ্চর কোইল ,দেওনার-এর শনি দেবালয়ম, মহারাষ্ট্রের শনি-সিঙ্গাপুর মন্দির, তিতওয়ালার শনি মন্দির, মাদুরাই এর নিকটে কুচানুর-এর শনি মন্দির। শনিদেব সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা যতই ভয়ভীতিমিশ্রিত হোক না কেন, মৎস্য পুরাণ কিন্তু শনিদেবকে লোকহিতকর গ্রহের তালিকাতেই ফেলেছে। প্রতি শনিবার সন্ধ্যায় শনিদেবের পূজার্চনা করার বিধান আছে। সাধারনত শনিদেবের মন্দিরে অথবা গৃহের বাইরে খোলা জায়গায় শনিদেবের পূজা হয়। নীল বা কৃষ্ণগ বর্ণের ঘট, পুষ্প, বস্ত্র, লৌহ, মাষ কলাই , কালো তিল, দুগ্ধ, গঙ্গাজল, সরষের তেল প্রভৃতি বস্তু শনিদেবের ব্রতের জন্য আবশ্যিক। নির্জলা উপবাস বা একাহারে থেকে এই ব্রত পালন করতে হয়।ভগবান শনিদেবের নাম দশটি – শনি, ছায়ানন্দন, পিঙ্গল, বভ্রু, রৌদ্র, সৌরী, মন্দ, কৃষ্ণা (কৃষ্ণবর্ণের কারণে হয়তো) দুঃখভঞ্জন, কৌনস্থ্য। শনিদেবের গুরু কৈলাসপতি শিবশঙ্কর আর বৃন্দাবনবিহারী ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। শনিদেবের একমাত্র আরাধ্য দেব মহাযোগী হনুমানজি। অন্যদিকে ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের গণেশের
জন্মকাহিনির সঙ্গে শনির যোগের কথা
অনেকেই জানেন। তবু সেটার উল্লেখ না
করলে এই রচনা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
উক্ত পুরাণ মতে, শনি আদৌ কুদৃষ্টি নিয়ে
জন্মাননি; বরং স্ত্রীর অভিশাপই তাঁর
কুদৃষ্টির কারণ। একদিন শনি ধ্যান
করছিলেন, এমন সময় তাঁর স্ত্রী সুন্দর
বেশভূষা করে এসে তাঁর কাছে সঙ্গম
প্রার্থনা করলেন। ধ্যানমগ্ন শনি কিন্তু
স্ত্রীর দিকে ফিরেও চাইলেন না।
অতৃপ্তকাম শনিপত্নী তখন শনিকে
অভিশাপ দিলেন, “আমার দিকে ফিরেও
চাইলে না তুমি! যাও, অভিশাপ দিলুম,
এরপর থেকে যার দিকেই চাইবে, সে-ই
ভষ্ম হয়ে যাবে।” এরপর ঘটনাচক্রে
গণেশের জন্ম হল। সকল দেবদেবীর সঙ্গে
শনিও গেলেন গণেশকে দেখতে। কিন্তু
স্ত্রীর অভিশাপের কথা স্মরণ করে
তিনি গণেশের মুখের দিকে তাকালেন
না। পার্বতী শনির এই অদ্ভুত আচরণের
কারণ জিজ্ঞাসা করলে শনি
অভিশাপের বৃত্তান্ত খুলে বলেন। কিন্তু
পার্বতী সেকথা বিশ্বাস করলেন না।
তিনি শনিকে পীড়াপীড়ি করতে শুরু
করলেন। বারংবার অনুরোধের পর শনি শুধু
আড়চোখে একবার গণেশের দিকে
তাকিয়ে ছিলেন। তাতেই গণেশের মুণ্ড
দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

Related Articles

Back to top button