।। শুধরে নিও ভুলটাকে।।
—————————–
তুমি কি এখন ভয় পাচ্ছ?
মৃত্যুভয়?
তোমার হৃদপিণ্ড কি আর কিছুদিনের মধ্যেই স্তব্ধ হয়ে যাবে?
তুমি কি তোমার সেই বন্ধুদের খুঁজে পাচ্ছ না,
যারা তোমার মৃতদেহ বহন করবে?
ভেবে দেখো, পৃথিবীর সর্বোচ্চ বুদ্ধিমান জীব তুমি!
তোমার হাতেই রয়েছে সমস্ত শক্তির সূত্র।
একটা শুঁয়োপোকার বাঁচা-মরা নির্ভর করে,
তোমার খামখেয়ালি মানসিকতার উপর।
সুদূর মহাকাশ থেকে গভীর সমুদ্র,
অবাধ বিচরণ তোমার।
তোমার হাতেই রয়েছে পরমাণু।
এক লহমায় ধ্বংস করে দিতে পারে সবকিছু।
একমাত্র তুমিই সেই জীব যে প্রার্থনা করতে পারে, ভগবানের কাছে।
আর কারোর অধিকার নেই,
তার চরণামৃত পান করার।
তুমিই সেই মহান শক্তিধর মানবজাতি।
তুমি আজ ভয় পাচ্ছ?
মৃত্যুভয়?
তোমার মৃত্যুভয় আমাকে কিছুটা আনন্দ দেয়।
আমি তোমার মৃত্যু কামনা করি না ঠিকই,
কিন্তু আমি চাই তোমার মৃত্যু ভয় থাকুক।
মনে আছে কিছুদিন আগে অ্যামাজনের জঙ্গলে আগুন লাগিয়েছিলে তুমি!
পার্থিব সম্পদের আদিম লালসা গ্রাস করেছিল তোমাকে!
নির্বিচারে ধ্বংস করেছে অগনিত প্রাণ।
তুমি কি জানো না যে তোমার কারনেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিলুপ্ত আর লুপ্তপ্রায় জীব?
তুমি তো সেই কারিগর, যে আগুন লাগিয়ে দিলে অস্ট্রেলিয়ার নিবিড় অরণ্যে!
স্তব্ধ করে দিলে লক্ষ লক্ষ অবলা প্রাণীর হৃদপিণ্ড!
তোমার কি মনে পড়ে সেই অসহায় ক্যাঙ্গারু টার কথা?
যে তার সদ্যোজাত শিশুকে বুকে আগলে রেখে,
নিজেকে সঁপে দিয়েছিল সেই আগুনে।
বাকিদের বিপদে ফেলে তুমি সেদিন ব্যস্ত ছিলে নিজের কাজে।
আজ কোথায় তোমার ব্যস্ততা? কোথায় তোমার কাজ?
কোথায় তোমার অহংকার?
কোথায় তোমার আস্ফালন?
আজ তুমি অসহায়, মৃত্যুভয় তোমাকে গ্রাস করেছে।
তুমি খুঁজে পাচ্ছো না সেই লোকটাকে,
যে তোমার মৃতদেহ বহন করবে।
আমি প্রকৃতি।
তুমি তোমরা সকলেই আমার সন্তান।
যা চেয়েছো তাই দিয়েছি,
বুক চিরে রাস্তা করেছ,
বাঁধা দিইনি।
বুলডোজার চালিয়ে গর্ত করেছ,
মেনে নিয়েছি।
আমার বুকের উপর যুদ্ধ করেছ,
তোমাদের রক্তে আমি স্নাত হয়েছি,
মুখ বুঝে সহ্য করেছি, প্রতিবাদ করিনি।
কিন্তু আর কত? কত পরীক্ষা চাও তোমরা আমার কাছে?
হয়তো এ মৃত্যুভয় তুমি জয় করবে।
কারণ তোমরা আমার সন্তান।
আমি চাইনা তোমরা পরাজিত হও।
তোমরা জয়ী হও, ফিরে আসো পুরনো ছন্দে।
কিন্তু ভুলে যেওনা এই স্মৃতি।
বাঁচিয়ে রেখো এই মৃত্যুভয়।
তা না হলে আবারো কিন্তু……
নতুন সকাল।