দূরদৃষ্টি

বাজল তোমার আলোর বেণু

শুভাশিস ঘোষ

“দেখিতে গিযাছি পর্বতমালা,
দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু,
দেখা হয় নাই দু চোখ মেলিয়া,
ঘর হাইতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ঘাসের উপর একটি শিশির বিন্দু”।

বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বলি আমরা গত প্রায় বারো বছর শারদোৎসব উপলক্ষে রাজ‍্যের বিভিন্ন প্রত‍্যন্ত অঞ্চলে অসহায় গরীব শিশুদের হাতে তুলে দিয় এসেছিলাম পুজোর নতুন পোশাক।কারণ দুর্গা পুজোর আনন্দঘন দিনে ওই ছোট ছোট ছেলে মেয়েগুলোর মুখে হাসি ফোটানোটাই ছিল আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য।আর সেই জন‍্য পাহাড় থেকে সাগর ,কখনো পুরুলিয়ার অযোধ‍্যা পাহাড়ের আদিবাসীদের মধ‍্যে আবার কখনো সাগরের মৌসুনী দ্বীপে আমরা আমাদের পসরা নিয়ে ছুটে গিয়েছি।বাদ যায়নি এই শহর কলকাতার লাগোয়া বিভিন্ন গ্রাম,পাড়া কিংবা ফুটপাথের পথশিশুরা।কিন্তু প্রতিবারেই আমাদের চোখের আড়ালে থেকে গিয়েছে আমাদের শহর কলকাতার সেই দিকটা যা প্রদীপের নীচে অন্ধকারের মত আমাদের মানব সভ‍্যতাকে অহরহ বিঁধে চলেছে।সেই মায়েরা বোনেরা যারা রোজ আদিম লালসার শিকার হয়েও নিরুত্তর থেকে শহরকে পরিচ্ছন্নতা দেবার মহান দায় নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন।হ‍্যা,আমি সেই “রেড লাইট” এলাকার কথা বলছি।যা শতাব্দীকাল সোনাগাছি বলে খ‍্যাত। রোজ রাতে বাবুদের আদিম প্রবৃত্তির শিকার হতে যে মা বোনেরা শুধু দু মুঠো অন্নের খোঁজে নিজেদের জীবন জীবিকাকে বাজি ধরেণ ,যাকেই স্বয়ং শ্রীশ্রী রামকৃষ্ন বলেছেন,”ডুব ডুব ডুব ডুব সাগরে আমার মন”,আমরা এবার সেখানেই আমাদের বঞ্চিত,নিপীড়িত,সমাজের সেই পতিতালয়ের মা দূর্গাদের মুখে হাসি ফোটাব।মা উমার লক্ষী গণেশ সরস্বতী কর্তিকরা যাতে এবার চুটিয়ে আনন্দ করতে পারে তারই চেষ্টা করব আমরা।কারণ আমরা জানি করোণার করাল গ্রাসে মহামারির মহা সংক্রমণের ভয়ে এই এলাকায় এখন রাতের রাজাদের আনাগোনা কম।তাই পেশায় ভাটার টান পড়েছে। এরকম কঠিন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বে কায়দায় আমাদের মতই রক্তমাংসের এই মানুষগুলো।আর তাই তাদের দুঃখের ভাগ নিতে আমরা এবার সোনাগাছির পুর্ণ‍্যভুমিতে।আপনিও আসুন,শুদ্ধ মতে শুদ্ধ মনে।

Related Articles

Back to top button