জেলা

সুন্দরবনে অসহায় মানুষের পাশে ফাউন্ডেশন ও থানার পুলিশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা; করোনার প্রভাবে লকডাউনের জন্য অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছিলেন বাংলার মানুষ। এবার থাইল্যান্ডের দেওয়া আমফান নামক ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলার মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমফানের বাংলা মানে হল আকাশ। ঝড়ের নামটা সুন্দর হলেও এই ঝড়ের প্রভাবে বাংলার মানুষ হারিয়েছেন মাথার ছাদ , ভেঙে পড়েছে বহু বাড়ি, ক্ষতির মুখে পড়েছেন অনেক অসহায় মানুষ। করোনার প্রভাবে বাংলার মানুষ রুজি-রোজগার হারিয়ে ছিলেন অনেক আগেই , কিন্তু আমফানের থাবায় আজ মানুষ হারিয়েছেন তাদের মাথার ছাদ। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নিরন্ন অসহায় মানুষের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের লিভার ফাউন্ডেশনের চিকিৎসকরা। গত ২৬ তারিখে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নারায়ণপুরের নামখানা অঞ্চলে নারায়ণপুর লক্ষীনারায়ণ মাধ‍্যমিক বিদ্যালয়ের ( হাইস্কুল) সন্নিকটে গৃহহীন নিরন্ন মানুষের মুখে দু-মুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার আশায় সোনারপুরের লিভার ফাউন্ডেশনের উদ্দ‍্যোগে ও সুন্দরবন জেলার পুলিশ প্রশাসন আধিকারিকদের সহায়তায় শুরু হয়েছে এক কমিউনিটি কিচেন। “নিরন্ন-গৃহহীন” নামাংকিত এই কমিউনিটি কিচেনে প্রায় ১০০০ জন গরিব এবং আমফানের ফলে গৃহহীন মানুষদের মুখে তুলে দেওয়া হচ্ছে এই রান্না করা খাদ‍্যদ্রব‍্যাদি। এই কর্মসূচি চলবে ৩০ দিন।সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হাত স‍্যানিটাইজ করে চলছে এই ত্রাণ বিলির কাজকর্ম। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের খ‍্যাতনামা চিকিৎসক ও লিভার ফাউন্ডেশনের সম্পাদক অভিজিৎ চৌধুরী, কলকাতা এস.এস.কে.এম হাসপাতালে অ্যাসিসটেন্স প্রফেসর চিকিৎসক সুজয় ঘোষ, লিভার ফাউন্ডেশনের পরিচালক পার্থসারথি মুখ‍্যোপাধ‍্যায়, সুন্দরবনের পেশাগত পুলিশ বিশেষত্ব মান্তুরাম পাকিরা, ভারতীয় পুলিশ শাখার তথা সুন্দরবন জেলার পুলিশ সুপার ভিয়াভ তেয়ারি, সুন্দরবন জেলার অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রক শাখার পুলিশ রাকেশ সিং, সুন্দরবন জেলার অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রক শাখার পুলিশ সুপার সন্তোষ কুমার মন্ডল, অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রক শাখার তথা কাকদ্বীপ মহুকমা শাখার পুলিশ আধিকারিক অনিল কুমার রায়, কাকদ্বীপের মহুকমা পুলিশ আধিকারিক সৌভিক ভট্টাচার্য, নামখানার ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক দেবশঙ্কর হালদার, কাকদ্বীপ থানার পুলিশ আধিকারিক সুদীপ সিং, কাকদ্বীপ পুলিশ সুব্রত ঘোষ, গোবিন্দপুর থানার পুলিশ আধিকারিক বারুন শীট সহ অন‍্যান‍্য পুলিশ এবং লিভার ফাউন্ডেশনের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
কাকদ্বীপ মহুকমা শাখার পুলিশ আধিকারিক অনিল কুমার রায় জানান, কোভিডের প্রভাবে রোজগার হারানো ও আমফানের থাবায় গৃহহারা বিপর্যস্ত মানুষদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন‍্যই সোনারপুরের লিভার ফাউন্ডেশনের চিকিৎসকরা এবং সুন্দরবন জেলার পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় সামাজিক দূরত্বকে মাথায় রেখেই শুরু হয়েছে রান্না করা খাদ্যদ্রব্যের এই ত্রাণ পরিষেবা। তিনি আরও জানান, কাকদ্বীপ থানার পুলিশেরা নিরন্ন মানুষের কাছে কুপন পৌঁছে দিচ্ছেন এবং কুপন প্রাপ্ত অসহায় মানুষেরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দুপুরে সংগ্ৰহ করছেন এই রান্না করা খাবার। তিনি জানান, এই ত্রাণ পরিষেবার কর্মসূচি চলছে কাকদ্বীপ থানার অন্তর্গত নারায়ণপুর লক্ষীনারায়ণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে (হাইস্কুল) এবং সীতারামপুর জি প্ল‍টের মিলন বিবেকানন্দ অন্তর্ভুক্ত গোবিন্দপুর থানার অন্তর্গত অঞ্চলে। নিরন্ন মানুষেরা এই খাদ্যদ্রব‍্যাদি পেয়ে খুবই খুশি বলেই জানিয়েছেন তিনি।তিনি সোনারপুরের লিভার ফাউন্ডেশনের এই অভাবনীয় প্রয়াসকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন লিভার ফাউন্ডেশনের এই কর্মসূচিতে সুন্দরবন থানার পুলিশের পক্ষ থেকে তিনি থাকতে পেরে খুবই খুশি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button