সুন্দরবনের আদিবাসীদের মাতৃভাষা সাদরির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে স্বপন।
মৃত্যুঞ্জয় সরদার: পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণতম প্রান্তে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবন অবস্থিত।২৪ পরগনা জেলা ভেঙে দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে উত্তর এবং দক্ষিণ।আর এই দুই জেলায় বহুকাল ধরেই আদিবাসীরা বসবাস করছে ওরা ও সুন্দরবন বাসি হয়ে।আর সে ইতিহাস আজ আমাদের অনেকের কাছে অজানা রয়ে গেছে।তবে আদিবাসী নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে বহুত চাঞ্চল্যকর তথ্য আমার সামনে উঠে এসেছে। আর সেই তথ্য আজ আমি পরিবেশন করব।১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের পর এখানে ইংরেজদের প্রভুত্ব কায়েম হয় এবং জমিদারের রাজত্ব আদায় করার জন্য দুই পরগনার সুন্দরবন অঞ্চলের জঙ্গল হাসিল করার চেষ্টা হয়।সুন্দরবনের জঙ্গল হাসিল করার জন্য কৃষিজীবী, শ্রমজীবী মানুষ ও বাংলার বাইরে থেকে সমজিবি মানুষদেরও নিয়ে আসার চেষ্টা ব্যবহার হয়।তাছাড়াও মেদনীপুর, হাওড়া, হুগলি থেকে অসংখ্য কৃষিজীবী মানুষ দলে দলে এসে জঙ্গল হাসিনা উচ্ছেদের কাজে লিপ্ত হয়।জঙ্গল হাসিল আবাদি কোন কাজে বিশেষ উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে আমাদের প্রতিবেশী রাজ্য বিহারের ছোটনাগপুর রাচি হাজারীবাগ থেকে আগত অসংখ্য আদিম ভারতীয় অস্ট্রিক জনগোষ্ঠীর মানুষেরা। যারা আদিবাসী বা উপজাতি নামে পরিচিত।এইসব আদিবাসী মানুষদের মধ্যে আছে সাঁওতাল, মুন্ডা, খাসিয়া, ওরাং, হো, সবিও ও ভূমিজ প্রভৃতি মানুষেরা।এইসব আদিবাসীরা সুন্দরবন এসে আশ্রয় নিয়ে জঙ্গল হাসিল করে, চাষযোগ্য জমিতে পরিণত করে।তখনকার জোরদার জমিদার এই সম্পদ তাদের নিশানায় নিয়ে তাদের জমি বলে নিয়ে নিত।আর আদিবাসীরা বোকা সরল সাদাসিদে মানুষগুলো ভাত চাষ করতে দিত, এই জমিতে। পরবর্তীকালে এরাই সুন্দরবনকে শস্য-শ্যামল করে তোলে এবং বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের লোকায়ত জীবনের প্রবাহে অনেকটাই মিশে যায়।আদিবাসীদের ইতিহাস আজ যদি লিখতে বসি তাহলে রামায়ণ ও মহাভারত হয়ে যাবে, তাই তার কিছুটা চটকা এখানে তুলে ধরলাম। যখন এরা জঙ্গল হাসিল করতে আসে তখন এদের মধ্যে কেউ লেখাপড়া জানতো না লেখাপড়া ধার ধারে না। বরং এরা অশিক্ষিত লোকের থেকে বারবার দূরত্ব বজায় রেখে চলতে।জমিদারদের অনুগত প্রজা হিসেবে এরা বসবাস করত, এদের জীবনধারা ছিল অত্যন্ত সহজ সাদাসিদে। বর্তমান যুগে এরা লেখাপড়ায় শিক্ষিত হয়েছে।সারা ভারতবর্ষে এখান থেকে উঠে এসেছে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আদিবাসীদের মধ্যে, যার কথা বাদ দিলেই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে এই লেখাটি। তিনি আদিবাসী সমাজের ভাষা আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ও সমাজের কাছে ভগবান স্বপন সরদার মুন্ডা। অল আদিবাসী সাদরি সুশার অ্যাসোসিয়েশনের জন্মদাতা। সারা ভারতবর্ষে একই সূত্রে গাঁথা মালা বেঁধে রেখেছে ভাষার বাঁধনে তিনি।তাই তাদের ভাষা সাদরি নিয়ে সাংবিধানিক স্বীকৃতির কথা বলছে আদিবাসী সংগঠনগুলিকে নিয়েই ।স্বপন বাবু নিজেই মাতৃভাষা সাদরি নিয়ে জাতীয় সত্ত্বা হিসাবে বাঁচতে গেলে ভাষার বন্ধনে ওরা পরস্পরকে বাঁধতে চান ভারতবর্ষজুড়ে।এই বন্ধনে সবাই স্বাগত জানিয়েছে ভারতবর্ষের আদিবাসী সমাজ স্বপন বাবুকে। প্রাচীন ধাত্রী স্বরূপ এই সাদরি ভাষা।অনেকেই এই প্রজন্মের আদিবাসী তরুণ-তরুণীদের আদিবাসী, সত্তা ,ভাষা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি ইত্যাদি পরস্পর সম্পর্কে উদাসীন এর শেষ নেই বলে জানিয়েছেন স্বপন সরদার।পিছিয়ে পড়ে থাকা নিজেদের সমাজ সংস্কৃতি ভাষা নিয়ে এমন কৌতুহল নেই এদের। কিন্তু স্বপন সরদার মাতৃভাষা সচেতনতা কাজে এদেরকে বুঝতে শিখিয়েছে, জানতে শিখিয়েছে, আজকের সমাজের এদের কেউ প্রকৃতি ভাষা জানা নেই। তাদের ভাষা জানার চেষ্টা করছে স্বপন সরদারের অ্যাসোসিয়েশনের সমস্ত প্রতিনিধিরা। তাই ভাষাভিত্তিক আদিবাসী সমাজ। আমার কলমে তুলে ধরতে গবেষণামূলক কিছু তথ্য নিয়ে আজ এই লেখাটি লিখতে বসেছি।
ভারত বর্ষ এই ভারতবর্ষকে এক কথায় চেনা কোন ভারতীয় পক্ষে বা ভারতভিত্তিক কোন বিজ্ঞানীর পক্ষে এক লহমায় চেনা বাস্তবতাঃ সম্ভব নয়।এর জন্য চাই অসংখ্য সময়, মানুষ ও তাদের অপার মণীষা ।তার মাঝে ভারতের
আদিবাসী জনসমাজকে যথেষ্ট পরিমাণে জানতে হলে প্রকৃতিগত ভাবে তাদের ভাষা, ভাষার বুৎপত্তিগত দিক এবং তাদের জীবন ধারার মধ্যে বেয়ে চলা কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে গভীর ভাবে অনুধাবন করা ও তাদের স্বভাব চরিত্রের প্রতি গভীর ভাবে নজর দেওয়া । সেই কাজটি করে চলেছে স্বপন সরদার এর নেতৃত্বে সমস্ত কর্মী বৃন্দরা।প্রাচীন ভারতীয় এক একটি জনপদ একটি ভাষা ভিত্তিক পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়েছিল ।কারণ ভাষার মধ্যেই তারা তাদের জীবনের নানা চাহিদা পূরণ করা থেকে সামাজিক ব্যক্তিত্ব গুলোকে ধরে রাখতে পারতেন।এবং ভাষাভিত্তিক আদিবাসী জনসমাজকে যথেষ্ট পরিমাণে জানতে হলে প্রকৃতিগত ভাবে তাদের ভাষা, ভাষার বুৎপত্তিগত দিক এবং স্বভাব চরিত্রের প্রতি গভীর ভাবে নজর দিতে হবে । প্রাচীন ভারতীয় এক একটি জনপদ একটি ভাষা ভিত্তিক পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়েছিল ।কারণ ভাষার মধ্যেই তারা তাদের সামাজিক ব্যক্তিত্ব গুলোকে ধরে রাখতে পারতেন। পরবর্তীকালে আর্থসামাজিক পরিবর্তন এবং ঐতিহাসিক পরিবর্তন প্রভৃতির কারণে আদিবাসী জনসমাজ বারবার নিজেদের পরিবর্তন করেছে এবং তাদের বাসস্থান কত ও জন্মগত একটা বিশাল পরিবর্তন একসময়ে এসেছে। আদিবাসী সমাজ মূলত বহু গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের সমষ্টি । একক কোনো গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় নয়। । সারা ভারতবর্ষে অগণিত রাজ্যে যেমন রয়েছে তেমনি অগনিত জনসমাজের মধ্যে অসংখ্য আদিবাসী জনসমাজ রয়েছে। এই আদিবাসী যেন সমাজের মধ্যে ভাষাগতভাবে যদি পরিচয় খোঁজা যায় তবে ভাষাভিত্তিক বিভাগে মুন্ডারী গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের আধিপত্য বেশি পাওয়া যাবে। এই ভাষা গভীরে যাওয়ার প্রয়োজন এজন্যই এ এই ভাষার মধ্য দিয়ে সমস্ত জনগোষ্ঠীগুলোর ভাষার মূল সূত্র গুলি পাওয়া সম্ভব। ভাষাভিত্তিক মৌলিকতা যদি ঠিকমত অনুধাবন করা না যায় তাহলে আদিবাসী সমাজ কে চেনা এবং জানা ও তাদের অবদানকে জানা সম্ভব হবে না। কারণ ভারতবর্ষের যেকোন ভাষা মন্ডলী মানুষজনকে সামাজিকভাবে চিনতে গেলে তাদের মূল যে সুর সেটি হলো তাদের মুখনিসৃত ভাষা। সেটি না জানা পর্যন্ত সেই গোষ্ঠীর গভীরে যাওয়া সম্ভব হয় না। এটা যেমন ভাষার নৃত্যতত্ত্ব বা ইতিহাস তত্ত্বের সাথে জড়িত। তেমনি ভাবে সমাজ বিন্যাস এবং সামাজিক অবদানকে স্মরণে রেখে এবং আজকের দিনের সামাজিক পরিকাঠামো সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। এই দিকে যদি আমরা ঠিকমতো আজও অনুভব না করি তবে ভারতবর্ষের এবং দেশের এবং প্রতিটি জনসমাজের প্রাথমিক তথ্যটি খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। বড় সুন্দরবন তথা ভারতবর্ষের প্রত্যন্ত গ্রামে আদিবাসীরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবাস করে তাদের মাতৃভাষা সাদরি, প্রত্যেকের একটি করে আঞ্চলিক ভাষা বিদ্যমান আদিবাসী সমাজে।সাঁওতাল ভাষার পাশাপাশি সাদরি ভাষাটা আদিবাসীদের মাতৃভাষা আর যে ভাষার উৎপত্তি স্থান ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত জুড়ে রয়েছে এর থেকে বাদ যায়নি সুন্দরবন।
এবং এই মৌলিকতা ধরতে না পারলে আমরা যে একটি গঠনমূলক ও সংস্কারমূলক কাজ করব তার মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক মূল্য কে এবং সংস্কৃতি এবং সতমুল গভীরতাকে অনুধাবন করতে পারবোনা ।এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে ভাষা এবং ভাষাভাষীর মানুষ এবং ভাষিক জনসমাজ তাদের বৈশিষ্ট্য গুলি কিন্তু যুগ যুগ ধরে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ নানাভাবে একেকটা শ্রেণীর ভাষিক জনসমাজকে একেক রকম ভাবে পরিষেবা যেমন দিয়েছে। তেমনই একটি জন সমাজের সাথে আরেকটি জনসমাজের পারস্পারিক সম্পর্ক , আত্মিক সম্পর্ক, তথা ঐতিহাসিক সম্পর্ক এর সাথে কিভাবে জড়িত হয়ে আছে যেটা আজকের দিনে কোন সমাজবিজ্ঞানী , বিজ্ঞান ভিত্তিক সমাজ জিজ্ঞাসা করে জানা চেষ্টা করেন নি ,এটা তাঁরা কেউই অস্বীকার করতে পারবেন না। ঠিক এই জায়গা থেকেই স্বপন সরদার চাই যে আজও পর্যন্ত ভারতবর্ষের সত্তিকারের আদিবাসী বলতে যাদেরকে চেনা ও জানা হয় ,পরিচয় দেয়া হয় ,এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে সাংবিধানিক পরিধির মধ্যে তাদেরকে বিভিন্ন রকম ভাবে সুরক্ষা দেওয়া হয় এবং প্রয়োজনের ক্ষেত্রে তাদেরকে সমাজ বিন্যাস এর একটা পর্যায়ে রাখা হয়, এবং জনজাতির বৃহত্তর সমাজের মূল কাঠামোকে ধরে রাখতে সে মূল বৈশিষ্ট্য গুলোকে ধরে রাখতে চেয়ে তাদেরকে সংরক্ষণ এর আওতায় রাখা হয়েছে । আদিবাসীদের উন্নয়নের কথা, এবং মূল যে বৃহত্তর জনসমাজ তাদের উন্নতির কথা একই সাথে আমাদেরকে চিন্তা করতে হয় ,কেন কি ভিত ছড়া যেমন ঘর করা সম্ভব নয়, গাছের কান্ড ছাড়া যেমন গাছের শাখা-প্রশাখা সম্ভব নয় ,তেমনি ভাবে আর্থ-সামাজিক,আর্থ ‘-সাংস্কৃতিক, ভাষাভিত্তিক সেই বিকাশের মূল সূত্রগুলো ভাষাভিত্তিক জনসমাজের মধ্য থেকেই গভীর ভাবে অনুধাবন করা এবং তাদের বাঁচিএরাখার তাগিদ বারবার উঠে এসেছে এবং তার প্রতিফলন ঘটেছে সমাজের বিভিন্ন স্তরে ।আর সেই চিন্তায় ধ্যানমগ্ন আদিবাসী সমাজের প্রাণপুরুষ স্বপন সরদার নিজেই।তার না আছে কোন চাওয়া, না আছে কোন পাওয়া, নিরব নিশিতে সাদরি ভাষার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে চিরটা জীবন।সেই কারণেই আমার গবেষণায় তার নামটি বারবার উঠে এসেছে সুন্দরবনের চিরাচরিত ইতিহাসের সঙ্গে মিশে থাকা নাম টি স্বপন সরদার। সুন্দরবন আদিবাসী সমাজের সাদরি ভাষাভাষী ভগবান তিনি।তাই আজকের বৃহত্তর সমাজের শাখা-প্রশাখা প্রজবলিত হয়ে বিস্তার লাভ করে দেশকে তথা ভারতবর্ষকে বহুবিধ ভাবে প্রভাবিত করছে,বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে সহায়তা করছে। এসব কিছুর পেছনে কিন্তু আদি জনগোষ্ঠী এবং তার আদিবাসী সংস্কৃতির দান অবদান এগুলো অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রয়েছে। একে অস্বীকার করা মানেই ভারতীয় সত্তাকে অস্বীকার করার সমতুল্য। ভারতবর্ষকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে গেলে, সঠিকভাবে জানতে গেলে, সেখানেও কিন্তু একেবারে বৈশিষ্ট্যগুলোকে ধরে রেখে আগানো টাই একমাত্র সঠিক উপায়। এ নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের ক্ষমতায় থাকা কালীন শোষন নিপীড়ন সহ বার বার বিতাড়নের মধ্যে ও ভাষাকে যথাযথ ভাবে অনুধাবন করা এবং তাদের বাঁচিয়ে ও রক্ষনা বেক্ষনের কাজ বহু সময় আগিএ থেকেছে। স্বাধীনতার পরবর্তীকালে ভারতের আর্থসামাজিক পরিবর্তন এবং ঐতিহাসিক পরিবর্তন প্রভৃতির কারণে আদিবাসী জনসমাজ বারবার নিজেদের পরিবর্তন করেছে এবং তাদের বাসস্থান কত ও জন্মগত একটা বিশাল পরিবর্তন একসময়ে এসেছে। সারা ভারত বর্ষ তথা পৃথিবীজুড়ে নৃতত্ত্ব গতভাবে আদিবাসী সমাজ মূলত বহু গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের সমষ্টি । একক কোনো গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় নয়। । সারা ভারতবর্ষে অগণিত রাজ্যে যেমন রয়েছে তেমনি অগনিত জনসমাজের মধ্যে অসংখ্য আদিবাসী জনসমাজ রয়েছে। এই আদিবাসী যেন সমাজের মধ্যে ভাষাগতভাবে যদি পরিচয় খোঁজা যায় তবে ভাষাভিত্তিক বিভাগ টি আগেই চোখে পড়বে।তার মধ্যে মুন্ডারী গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের আধিপত্য বেশি পাওয়া যাবে। এই ভাষা গভীরে যাওয়ার প্রয়োজন এজন্যই এ এই ভাষার মধ্য দিয়ে সমস্ত জনগোষ্ঠীগুলোর মূল সূত্র গুলি পাওয়া সম্ভব। ভাষাভিত্তিক মৌলিকতা যদি ঠিকমত অনুধাবন করা না যায় তাহলে আদিবাসী সমাজ কে চেনা এবং জানা ও তাদের অবদানকে জানা সম্ভব হবে না। কারণ ভারতবর্ষের যেকোন ভাষা মন্ডলী মানুষজনকে সামাজিকভাবে চিনতে গেলে তাদের মূল যে সুর সেটি হলো তাদের মুখনিসৃত ভাষা। সেটি না জানা পর্যন্ত সেই গোষ্ঠীর গভীরে যাওয়া সম্ভব হয় না। এটা যেমন ভাষার নৃত্যতত্ত্ব বা ইতিহাস তত্ত্বের সাথে জড়িত। তেমনি ভাবে সমাজ বিন্যাস এবং সামাজিক অবদান স্মরণে রেখে এবং আজকের সামাজিক পরিকাঠামো সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। এই দিকে যদি সমাজে ঠিকমতো আজও অনুভব না করি তবে ভারতবর্ষের এবং দেশের এবং প্রতিটি জনসমাজের প্রাথমিক তথ্যটি খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। এবং এই মৌলিকতা ধরতে না পারলে আমরা যে একটি গঠনমূলক ও সংস্কারমূলক কাজ করব তার আমরা মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক মূল্য কে এবং সংস্কৃতি এবং সতমুল গভীরতাকে অনুধাবন করতে পারবোনা ।এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে ভাষা এবং ভাষাভাষীর মানুষ এবং ভাষিক জনসমাজ তাদের বৈশিষ্ট্য গুলি কিন্তু যুগ যুগ ধরে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ নানাভাবে একেকটা শ্রেণীর ভাষা কিভাবে জনসমাজকে একেক রকম ভাবে পরিষেবা যেমন দিয়েছে তেমনই একটি যেন সমাজের সাথে আরেকটি জনসমাজের পারস্পারিক সম্পর্ক আত্মিক সম্পর্ক তথা ঐতিহাসিক সম্পর্ক এর সাথে কিভাবে জড়িত হয়ে আছে যেটা আজকের দিনে কোন সমাজবিজ্ঞানী , বিজ্ঞান ভিত্তিক সমাজ জিজ্ঞাসা করে নি ,এটা তাঁরা কেউই অস্বীকার করতে পারবেন না। ঠিক এই জায়গা থেকেই আদিবাসী সমাজ চাই যে আজও পর্যন্ত ভারতবর্ষের সত্তিকারের আদিবাসী বলতে যাদেরকে চেনা জানা হয় ,পরিচয় দেয়া হয় ।এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে সাংবিধানিক পরিধির মধ্যে তাদেরকে বিভিন্ন রকম ভাবে সুরক্ষা দেওয়া হয়, এবং প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সামাজিক প্রয়োজন এ ক্ষেত্রে তাদেরকে সমাজ বিন্যাস এর একটা পর্যায়ে রাখা হয়।এবং আদিবাসী সমাজের মূল কাঠামোকে ধরে রাখতে সে মূল বৈশিষ্ট্য গুলোকে ধরে রাখতে চেয়ে তাদেরকে সংরক্ষণ এর আওতায় রাখা হয় , তাদের উন্নয়নের কথা ভাবতে শুরু করেছে সমস্ত আদিবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। সমস্ত সাংগঠনিক ভাবেই বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছেন স্বপন সরদার নিজে, স্বপন সরদার এর উদ্দেশ্য বৃহত্তর জনসমাজ তাদের উন্নতির কথা একই সাথে সাদরি ভাষা কে চিন্তা করতে হয় ।কেন ভিত ছড়া যেমন ঘর করা সম্ভব নয়, গাছের কান্ড ছাড়া যেমন গাছের শাখা-প্রশাখা সম্ভব নয় ,তেমনি ভাবে সামাজিক-সাংস্কৃতিক ভাষাভিত্তিক সেই বিকাশের মূল সূত্রগুলো ভাষাভিত্তিক জনসমাজের মধ্য থেকেই বারবার উঠে এসেছে এবং তার প্রতিফলন ঘটেছে বিভিন্ন স্তরে । আদি জনগোষ্ঠী এবং তার আদিবাসী সংস্কৃতি এগুলো অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রয়েছে ।একে অস্বীকার করা মানেই ভারতীয় সত্তাকে অস্বীকার করা। ভারতবর্ষকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে গেলে, সঠিকভাবে জানতে গেলে, সেখানেও কিন্তু একেবারে বৈশিষ্ট্যগুলোকে ধরে ধরে আগানো টাই একমাত্র উপায় ,,,, ।আদিবাসীদের মাতৃভাষা সাদরি সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি না পেলে, আগামী দিনে ভয়ঙ্কর আন্দোলনে শামিল হবে সারা ভারতবর্ষের আদিবাসী সমাজ।আর সেই ক্ষেত্রে বহু মানুষকে ভাবাচ্ছে ভাষায় শুধু নয় সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ নিয়ে ,যারা আদিবাসী সমাজের হয়ে কাজ করেন তাদের কাছেও এই বার্তাটি মোটেই সুখকর হতে পারে ।সমস্ত আদিবাসীরা চায় তাদের নিজের ভাষায় লেখাপড়া করতে, নিজেদের মধ্যে আদান-প্রদান করতে। তাই ভাষার আন্দোলনে পিছিয়ে নেই ভারতবর্ষের আদিবাসী সমাজ।
এছাড়াও ভাবনার বিষয়টি আরো গভীরে তা হল যাদের জন্য এই বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের সারা বিশ্বের কোন না উপায় নির্ধারণ করবার দায়িত্ব দিল, সেই জন সমাজ তাদের নিজেদের ভাষা ও তার ভবিষ্যৎ নিজেদের সামাজিক অস্তিত্ব বজায় রাখা পারছিনা। ভাষা সাংবিধানিক স্বীকৃতি না পাওয়ার কারণে, হাজার হাজার বছর ধরে আনা পূর্বপুরুষদের অভিজ্ঞতা জ্ঞান সামাজিক শিষ্টাচার সংস্কার শিক্ষা রীতিনীতি বিশ্বাস সেই ভাষাটি আজ বিলুপ্তির পথে। এই ভাষাকে বাঁচাতে বা রক্ষা করার জন্য নিজেরা কিছু ভাষাভিত্তিক কাজ করে চলেছে। সেই ভাবনার বশবর্তী হয়ে আদিবাসী সাদরি ভাষা উন্নয়নকারী সংস্থা অল আদিবাসী সাদরি সুষার এসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে নিজেদের জনসমাজের কাছে নিজেদের সামাজিক পরম্পরা, ঐতিহ্য, সংস্কার ও সংস্কৃতি প্রকৃতিকে যাতে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সাবলীল ভাবে রেখে যাচ্ছে। সেই কারণেই সমস্ত আদিবাসীদেরকে১৫৩ টি মাতৃভাষার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে, তেমনি ভাবে এটাও মনে রাখতে হয়েছে। সেই সাদরি ভাষার ভগ্নাংশকে অবলম্বন করে সাথী পথ চলা শুরু, সেই আদি ভাষা মুন্ডারী তাকে সমানভাবে সম্মান দিতে প্রস্তুত নয়। কারণ আদিবাসী ভাষা গোষ্ঠীর মূল ভাষা মুন্ডারী এনসাইক্লোপিডিয়া সংকলন করার কথা এই লেখাতে বারবার স্মরণ করা হয়েছে, আগামী দিনে ভাষার বাঁধনে মুন্ডারী ভাষা কে মাদার ল্যাঙ্গুয়েজে তুলে আনা অত্যন্ত প্রয়োজন , সাদরি ভাষা আন্দোলনের প্রাণপুরুষ স্বপন সরদার এর মুখে এ কথা প্রকাশ পাচ্ছে।