আন্তর্জাতিক

করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে দিশাহারা বিশ্বজুড়ে!

মৃত্যুঞ্জয় সরদার:শিক্ষা-দীক্ষা মানুষের থেকেও অনেকেই অশিক্ষিত আচারণ বাংলার বুকে। গুজবের পিছনে দৌড়ে বেড়াচ্ছে সবাই।বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে গুজব রটাচ্ছে, সারাদেশের মানুষ ভ্যাবাচেকা মেরে যাচ্ছে।কেবা সত্যি বলছে আর কে মিথ্যা বলছে বুঝা বড় দায় হয়ে গেছে।গতকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে চিন নাকি ভাইরাস তৈরি করে ছেড়েছে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের মারার জন্য।সত্যতা যাচাই করার ক্ষমতা আমাদের এই মুহূর্তে নেই। বাংলার মানুষ সবাই ইতিবাচক-নেতিবাচক এর মধ্যে রয়ে গেছে। যেভাবে বিশ্বজুড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা৷ এদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৪০ ৷ ইতিমধ্যেই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে দেশে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ ভারতে প্রথম করোনা ভাইরাসের বলি কর্ণাটকের ৭৬ বছরের এক বৃদ্ধ৷ ৭৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল৷ কিছুদিন আগেই তিনি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছিলেন বলে জানা গিয়েছে৷দেশে করোনায় দ্বিতীয় মৃত্যু হয় দিল্লিতে৷ জনকপুরীতে মারণ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ৬৯ বছর বয়সি এক বৃদ্ধার৷ ওই বৃদ্ধার ছেলে কিছুদিন আগেই সুইৎজারল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছিলেন৷ তিনিও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত।ছেলের শরীর থেকেই করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে বৃদ্ধার শরীরে। এমনই মনে করছেন চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভারতে তৃতীয় মৃত্যু হয় মাহারাষ্ট্রে৷ মুম্বইয়ের কস্তুরবা হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ৬৪ বছরের এক বৃদ্ধের৷অন্য রাজ্যগুলির পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় সচেষ্ট উত্তর প্রদেশ সরকার৷ করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ৷ অন্যদিকে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের নিচে এই ভাইরাস ফেললে মনে হয় এরা মাথায় মুকুট পরে আছে। ল্যাটিন ভাষায় একে বলে ‘করোনাম’ (Coronam)। গুগলে করোনার ছবি সার্চ করলে নিশ্চয়ই ছবি দেখতে পাচ্ছেন। যে খোঁচাগুলি দেখছেন সেগুলি আসলে স্পাইক গ্লাইকোপ্রোটিন (spike glycoproteins)। এদের মূল কাজ হল মানুষের শরীরে বন্ধু প্রোটিনকে খুঁজে নেওয়া। বাহক কোষের প্রোটিনের সঙ্গে জুটি বেঁধে এরা কোষের মধ্যে ঢুকতে পারে। তবেই বিশেষজ্ঞ ডঃ জিওঘেঘানের মতে, বন্য প্রাণী থেকে এই ভাইরাস এসেছে। তাঁর অনুমান, বাদুরের শরীর থেকে এই ভাইরাস এসে থাকতে পারে। কারণ তাদের শরীরে থাকা ভাইরাসের সঙ্গে করোনা ভাইরাসের সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞের মতে, অন্য কোনও জন্তুর শরীর থেকেও এটি এসে থাকতে পারে। এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায়নি। কোথা থেকে করোনা আসছে জানলে এর প্রতিষেধক তৈরিও সহজ হয়ে যাবে। করোনাভাইরাস নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে গুজবের খবর রটাচ্ছে সে কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের মধ্যে। করোনাভাইরাস কে নিয়ে ক’দিন ধরে পড়াশোনা করে যায় বুঝতে পারলাম সেটি আমি আপনাদের সামনে আমার কলমে তুলে ধরছি। আমরা যদি নিজেরাই সচেতন থাকি করো না আমাদেরকে ছুঁতে পারবেন না।করোনা হাঁচি সর্দি কাশি মধ্যে দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে মানব শরীরে, হাত থেকে রেহাই পেতে নিজেরাই সুষ্ঠু জীবনে থাকতে সর্তকতা অবলম্বন করুন। প্রয়োজনে নিজের বাড়িতে থেকে সমস্ত কাজ করুন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভয়েস রেকর্ড ঘুরে বেড়াচ্ছে চীন দেশের করোনাভাইরাস নাকি পরিকল্পিতভাবে ছড়িয়েছে এটা সত্য মিথ্যা যাচাই করার ক্ষমতা আজ আমাদের নেই। তবে আসল সত্যটা কি? এটা নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে সারা বিশ্বব্যাপী! যাইহোক ফিরে আসি ভাইরাসের বিষয় নিয়ে।মারণ করোনা আতঙ্ক বাড়িয়েই চলেছে৷ এবার খাস কলকাতায় করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে৷ জানা গিয়েছে, রাজ্যের পদস্থ এক আমলার ছেলে মারণ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে কাবু৷ ১৫ মার্চ ইংল্যান্ড থেকে কলকাতায় ফেরেন ওই তরুণ৷ বিমানবন্দরে স্ক্রিনিংয়ের সময় করোনার কোনও উপসর্গের দেখা মেলেনি৷ পরে বেলেঘাটা আইডি-তে যেতে বলা হয় তাঁকে৷সোমবার হাসপাতালে গেলে তাঁকে বাড়িতে কোয়েরান্টাইনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়৷ মঙ্গলবার ওই তরুণকে ফের আইডি হাসপাতালে ডাকা হয়৷ এদিনই তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়৷ সন্ধেয় তরুণের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে৷ শুধু ওই তরুণই নন৷ তাঁর মা-বাবা ও গাড়িচালককেও আইডি হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে৷এবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর আরও সচেষ্ট হয়েছে৷ ওই তরুণ যে বিমানে কলকাতায় ফেরেন, সেই বিমানে থাকা বাকি যাত্রীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর৷ ইতিমধ্যেই ওই বিমান সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের৷ ওই বিমানে যাত্রীদের ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়েছে৷ এবার তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া শুরু করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এরফলেই করোনার জেরে টলিউডে কী কী ছবির মুক্তি পিছল এবং শুটিং বাতিল হল কিংবা তাদের ভবিষ্যতই বা কী হবে? রইল তালিকা।যে সমস্ত বাংলা ছবিগুলো মার্চ মাসে মুক্তি পেয়েছিল, সেগুলো কি আবার মুক্তি পাবে কিনা, সেই প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠেছে। কারণ, গত ১ সপ্তাহে করোনা সংক্রমণ এড়াতে প্রেক্ষাগৃহে লোক কম আসছেন, ফলে আশাতীত সাফল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে সেসব ছবির নির্মাতারা। উল্লেখ্য, শিবপ্রসাদ-নন্দিতার ছবি ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ আবার মুক্তি পাচ্ছে। অন্যদিকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে শিবু-নন্দিতার ‘হামি টু’ ছবির শুটিং। পিছিয়েছে রাজ চক্রবর্তী প্রযোজিত এবং পরিচালিত ‘ধর্মযুদ্ধ’-র মুক্তির তারিখ। প্রসঙ্গত, এপ্রিল মাসেই মুক্তি পাওয়ার কথা কোয়েল মল্লিক অভিনীত ‘রক্তরহস্য’ এবং পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তর ‘আগন্তুক’ও। যে ২টি ছবির ট্রেলার-টিজার ইতিমধ্যেই সিনেদর্শকদের মধ্যে উন্মাদনার সৃষ্টি করেছে। কিন্তু করোনার জেরে এই ছবিগুলোর মুক্তি পিছবে কিনা, তা এখনও ঘোষণা করা হয়নি। আগামী ৩১ মার্চ অবধি রাজ্যের সব প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ। নির্দেশিকার দিন যদিও আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয় অদূর ভবিষ্যতে, তাহলে যে মুক্তি পিছবে, নিঃসন্দেহে বলাই যায়। উল্লেখ্য, তাপস পালের শেষ ছবি ‘বাঁশি’ও ২৭ মার্চ মুক্তি পাচ্ছে না। নতুন মুক্তির দিন ঘোষণা হবে পরে।  দেব প্রযোজিত ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’ ও ‘টনিক’-এর মুক্তি নিয়েও চিন্তিত দেব।আর এসব কারণেই করোনাভাইরাস কে নিয়ে চিন্তিত রাজ্যের মানুষ। কখন কি যে ঘটে যাবে, আর এই আতঙ্ক রাজ্যবাসী । চেনা অচেনার মাঝে কখন যে আক্রমণ হবে করোনাভাইরাস এই ভয়ে ভীতু কলকাতাবাসী । বিশ্বজুড়ে মানুষ আতঙ্কে দিশাহারা,এর মাঝেই চাঞ্চল্যকর তথ্য ভয়েস রেকর্ড সোশ্যাল মিডিয়াতে। কি সেই তথ্য জানার ইচ্ছা আপনার আমার সবার আছে, তবে জেনে নেওয়া যাক।করোনা ভাইরাস সম্পূর্ণ একটা ম‍্যানমেড ভাইরাস।এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।যাদের অনেকেই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।সোস‍্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এই সব মতামত ক্রমেই আরো আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠছে জনমনে।যেখানে বলা হচ্ছে চিন সরকার জেনে বুঝেই এই মারণ ভাইরাস ছেড়েছে।বিশেষজ্ঞদের মতে এই ভাইরাসের আক্রান্ত মানুষদের মধ‍্যে বেশিরভাগ বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের মৃত‍্যু হচ্ছে।যা জেনে বুঝেই চিন সে দেশের বিশাল জনসংখ‍্যা থেকে বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের ছেঁটে ফেলতেই এই মারাত্মক খেলা খেলেছে।এখনো পর্যন্ত চিনের মৃত মানুষের অধিকাংশই যাটের উর্ধে।যারা বেশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা পড়ছে।এর পিছনে মুল উদ্দেশ‍্য হল দেশ থেকে বয়স্ক কর্মক্ষমতা হারানো মানুষের সংখ‍্যা কমানো।কারণ এই দেশটা একটা কমিউনিষ্ট কান্ট্রী।যে দেশে মানুষের বাক স্বাধীনতা বলতে কিছুই নেই।ওদের কাছে আগে দেশ তারও আগে পার্টি।যেকারনে দেশের বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের বিভিন্নরকম সুযোগ সুবিধা দিতে গিয়ে চিনের কমিউনিষ্ট সরকারকে প্রচুর অর্থ খরচ করতে হয়।এইসব মানুষদের জন‍্য স্বাস্হ‍্য পরিষেবা থেকে ট্রাভেল সবটাই সরকারকে ফ্রিতে দিতে হয়।এর উপর আছে বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের জন‍্য পেনশন স্কিম।যেটা করতে গিয়ে চিন সরকারের বহু টাকা বছরে খরচ করতে হয়।অথচ চিনের সমাজে এরা এখন একরকম বোঝাই বলা যায়।তাই ষাটোর্দ্ধ মানুষদের মেরে ফেলতেই এই ভাইরাস ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।যার পিছনে আমেরিকা রাশিয়ার মদতও থাকতে পারে বলে ওই বিশেষজ্ঞের মত।যেখানে এই ভাইরাসের বলি চিনে প্রায় এক কোটি ছাড়িয়েছে যাদের বেশিরভাগ হল ষাটোর্দ্ধ মানুষ।যাদের জন‍্য পেনশনের যে টাকা এতদিন কমিউনিষ্ট চিন সরকার খরচ করতো সেটা আর করতে হবেনা।যেখানে এত বড় বিপর্যয়ের পরেও চিনের অর্থনীতি এখনো এক ইঞ্চি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।যাই প্রমাণ করছে করোনার ম‍্যানমেড তথ‍্য।সম্প্রতি জানুয়ারী মাসে চিন থেকে ঘুরে আসা ওই বিশেষজ্ঞের মতে গোটা পৃথিবীতে এর প্রভাব থাকবে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত।যেখানে এই ভাইরাসকে নির্মুল করার এন্ট্রিড্রোপ প্রক্রিয়াও যথা সময় ছাড়া হবে।যে তথ‍্য সম্পর্কে এদেশের রাষ্ট্র নেতারাও অবজ্ঞত এমনটাই তার ধারণা।এখন প্রশ্ন সোস‍্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এই অডিও বার্তাটি যদি কিয়দাংস সত‍্য হয় তাহলে বলতেই হয় আমাদের জীবন এখন কিছু পাষন্ড নরাধামের হাতে যাদের আত্মকেন্দ্রীক উচ্চ্বাভিলাষের স্বীকার গোটা দুনিয়া।যাদের কাছে জীবনের মুল‍্য তুচ্ছ।যদিও এই তথ‍্য সম্পূর্ণ সোস‍্যাল মিডিয়ার একটি ভাইরাল হওয়া অডিও বার্তা থেকে তুলে ধরা,যার কোন সত‍্যতা যাচাই করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।একদিকে করোনাভাইরাস নিয়েও অতিষ্ঠ পৃথিবীর মানুষ, আর ইতিমধ্যে সে তথ্য জল ঢালতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে অন্য এক তথ্যর ভয়েস রেকর্ড।সত্য মিথ্যা আসলে কি হতে চলেছে এটা বোঝা বড় দায় হয়ে যাচ্ছে মানুষের কাছে। তবে সবদিক থেকে সতর্ক পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজেই।তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে সচেতন করছে অতি সক্রিয় তার সাথে। বাংলার প্রথম আতঙ্কে রয়েছে বাংলাভাষীরা, ভয়ে অনেকে গ্রামগঞ্জ থেকে কলকাতার কর্মস্থলে যাওয়ার ভয় পাচ্ছে। কারণ কি জানেন করোনাভাইরাস আতঙ্কে। তবে রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা করতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তৈরি হচ্ছে রোগীদের কোয়ারেন্টিন। সে বিষয়েমহকুমা স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, কোয়ারেন্টিন–এর অর্থ একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পৃথক থাকা। যদি কারও করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়, তা হলে তাকে জনবহুল এলাকা থেকে দূরে রাখতে এবং ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে অন্তত ১৪ দিন আলাদা থাকতে বলা হয়। এই কর্তা আরও জানান, কোয়ারেন্টিনে সর্বোচ্চ চার থেকে ছয়জনকে একসঙ্গে রাখা যায়। এর বেশি হলে সেটা আর কোয়ারেন্টিন হবে না। অবজারভেশনে রাখা না হলে এই রোগ আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই কর্মতীর্থে একাধিক ঘর থাকলেও, তা ছোট। যে কারণে ওয়ার্ড করা সুবিধে হবে। মহকুমা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এই পরিদর্শনে কর্মতীর্থে কিছু সময়ের জন্য আপাতত ৫৫টি শয্যার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যার জন্য মোট ১৪টি ঘর, প্রতি ঘর পিছু বাথরুম, একটি রান্নাঘর নেওয়া হয়। ৫০টি শয্যার জন্য ২০ জন নার্স এবং ১৪ জন ডাক্তার থাকবেন। অবজারভেশন এর জন্য আলাদা কর্মী ওয়ার্ডে রাখা হবে। কোয়ারেন্টাইন ওয়ার্ড দুই ধরনের হতে পারে, একটি হোম কোয়ারেন্টিন অন্যটি সেন্টার কোয়ারেন্টিন। বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের যদি করোনা ভাইরাসের উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা না যায়, সেক্ষেত্রে তঁারা বাড়িতে ১৪ দিন অবজারভেশনে থাকতে পারেন। সেটি হোম কোয়ারেন্টিন। তেহট্ট মহকুমার দীঘলকান্দি, বেতাই নাজিরপুর, ইলশেমারি–সহ এলাকার একাধিক জায়গার বহু মানুষ বিদেশে কাজকর্মে যুক্ত। তাঁদের মধ্যে ঘরে ফেরাদের করোনা ভাইরাসের উপসর্গ লক্ষ করা গেলে তঁাদের অবজারভেশনে রাখার জায়গা হিসেবে তেহট্টর কর্মতীর্থে কোয়ারেন্টিন–এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিদেশ থেকে আসা মানুষের সর্দি, কাশি ইত্যাদি থাকলে, তঁাদের এই কর্মতীর্থ কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিন রাখা হবে। এর পাশাপাশি সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির লালা পাঠানো হবে কলকাতার আইডি হাসপাতালে। সেখানে পরীক্ষা করে রিপোর্ট নেগেটিভ এলে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হবে। 
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের মাতৃ সদনে ইতিমধ্যেই ১০০ শয্যার কোয়ারেন্টিন খোলা হয়েছে। বহরমপুর শহর লাগোয়া এলাকায় আরও ১০০ শয্যার কোয়ারেন্টিন কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই বৈঠক করে এই কোয়ারেন্টিন খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত রবিবার জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা ও জেলার স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভিন্ন কর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে কোয়ারেন্টিন কেন্দ্র খোলা হলেও প্রশাসন মনে করছে আরও একটি কেন্দ্র খোলা দরকার। তাই সেটি খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বাংলার মানুষ কিভাবে গুজবে কান দিচ্ছে সেটা শুনলে অবাকই হবেন।বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে যেভাবে বারবার বলছে গুজবে কান দেবে না, তারপরেও রাজ্যবাসী ভরসা হারাচ্ছে।গুজবে পিছনে দৌড়াচ্ছে উত্তর 24 পরগনা জেলার বসিরহাটের মানুষজন।বসিরহাট মহকুমার মাটিয়া থানা এলাকার দক্ষিণ মথুরাপুর গ্রামের বাসিন্দা ঋতুপর্ণা মণ্ডল। চিন ফেরত এই চিকিৎসক এখন কর্মরত দিল্লির কস্তুরীবাগ হাসপাতালের ট্রেনিং সেন্টারে। মা রেণুকা মণ্ডল ধান্যকুড়িয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সুপারভাইজার। বাবা এবং বোন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। এমন শিক্ষিত, সম্ভ্রান্ত পরিবারই এখন প্রায় একঘরে।কারণ, ঋতুপর্ণা যে দিল্লির হাসপাতালে চিকিৎসা করছেন, তা শুনেই প্রতিবেশীরা ভেবেছেন যে মেয়ে নিজেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। তাই দিনরাত ফোন করে সবাই ঋতুপর্ণার খোঁজ নিচ্ছেন। কথা বলার সময়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও তাঁর পরিবারের সংস্পর্শ যে এড়িয়ে যাচ্ছেন প্রতিবেশীরা, তা বেশ টের পেয়েছেন মা, বাবা, বোন। বারবার তাঁদের সেই ভুল ধারণা ভাঙানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকী একথা শোনার পর ঋতুপ্রণা নিজে ভিডিও বার্তায় সকলের উদ্দেশে জানিয়েছেন, “গুজবে কান দেবেন না। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি, আমার কর্মস্থলে রয়েছি। তাও বিশ্বাস করতে পারছে না স্থানীয় গ্রামবাসীরা। মানব জীবনে চলার পথে ভুল ভ্রান্তি বহু ইতিহাস রয়েছে ভারতবর্ষের বুকে। প্রাচীনকালের অলা উঠা নামক ব্যাধিকে যেভাবে ভারতবর্ষে মহামারী আকার ধারণ করেছিল, পশ্চিমবাংলায় ও বাদ পড়েনি। তৎকালীন যুগে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ওলাউটো বাবা কলা নামে আক্রান্ত মানুষদের কে নিয়ে চিকিৎসা করেছিল। তাহলে করোনাভাইরাস এর যুগে এত আতঙ্ক কিসের?বিদ্যাসাগরের মতন কি কোন ব্যক্তি করোনাভাইরাস এর দিকে এগিয়ে আসবে না। অনেকেই বলছে এই যুগে তা সম্ভব নয়। তবে মাতৃমন্দির কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এখানে আসা দর্শনার্থীরাও। একাংশের পর্যটক বলছেন স্বামী বিবেকানন্দ দেশে প্লেগ মহামারির সময় নিজে দাঁড়িয়ে তার মোকাবিলা করেছিলেন। কিন্তু রামকৃষ্ণ মঠ বর্তমানে সেবিষয়ে উদ্যোগী নয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও অখুশি। পর্যটক না আসার কারণে ব্যবসায় মন্দা চলছে বলেও জানান তাঁরা।জয়রামবাটি মাতৃমন্দিরের মহারাজ স্বামী যুগেশ্বরানন্দ এবিষয়ে বলেন, করোনা সতর্কতা হিসেবে বেশ কিছু পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। ভক্ত সাধারণকে ভিড় না করার আবেদন জানিয়েছেন।যে, ‘মাক্স নয়, সাবান দিয়ে হাত ধুলেই করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে অনেকখানি রক্ষা পাওয়া সম্ভব।’ মঙ্গলবার বাঁকুড়া পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার তেলিগোড়া বস্তিতে সাবান বিলি করতে গিয়ে একথা বলেন, উপ পুরপ্রধান দিলীপ আগরওয়াল। তিনি আরও বলেন, এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী মাক্স নিয়ে কালোবাজারি শুরু করেছেন। সেই কালোবাজারি রুখতে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার নিদান দেন তিনি।অন্যদিকে করোনা ভাইরাস কে নিয়ে আবার বিতর্ক।স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভোর ৪ টে ২১-এ ট্রাম্প টুইট করে বলেন, মার্কিন এয়ারলাইন্স ও অন্য সংস্থাগুলির মতো যে সমস্ত সংস্থা চাইনিজ ভাইরাসের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের সবরকমের সাহায্য করবে আমেরিকা। আগের থেকেও শক্তিশালী হয়ে উঠব আমরা।’ মার্কিন রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্যে চিন-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্কে ফের সংঘাতের পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।আমেরিকায় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। প্রাণ হারিয়েছেন ৮৭ জন। আর এরপরেই এই ভাইরাস নিয়ে সতর্ক হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি আমেরিকা জুড়ে জারি হয়েছে জরুরি অবস্থা।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত ১ লক্ষ ৬৫ হাজার উড়ান বাতিল হয়েছে বিশ্বজুড়ে। তাতে একাধিক বিমান সংস্থা ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। আগামী দিনে অন্যান্য শিল্পক্ষেত্রও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন অর্থনীতিবিদরা। সেই প্রসঙ্গেই এবার ‘চিনা ভাইরাস’ বলে চিনকে কটাক্ষ করল আমেরিকা।সারা পৃথিবী জুড়ে করোনাভাইরাস কে নিয়ে বহুৎ চর্চায় চর্চিত হচ্ছে । ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিভিন্ন পর্যটক কেন্দ্র, বিমান ও রাজ্যে তথা ভারতবর্ষের রেলের।রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’দিন ধরে মালদহ টাউন স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে বিভিন্ন দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিট বাতিলের লম্বা লাইন পড়ছে। ট্রেনের আসন সংরক্ষণ কাউন্টারের কর্মীরা জানিয়েছেন, সোমবার ২ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র মালদহ টাউন স্টেশনের কাউন্টারেই টিকিট বাতিলের লাইন পড়ছে না, ইংরেজবাজার শহরের অতুল মার্কেট এলাকায় থাকা রেলের ‘সিটি বুকিং কাউন্টারেও’ একই ছবি ধরা পড়েছে।এ দিন ‘সিটি বুকিং কাউন্টারে’ টিকিট বাতিল করতে গিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে অনেককে। পরে তাঁদের মালদহ টাউন স্টেশনের কাউন্টারে যেতে হয়। কারণ অতুল মার্কেট এলাকার রেলের সিটি বুকিং কাউন্টারে দুপুরের মধ্যেই টাকা ফুরিয়ে যায়। ওই কাউন্টারের কর্মীদের বক্তব্য, যত না টিকিট বিক্রি হচ্ছে। তার কয়েকগুণ বেশি সংরক্ষিত আসনের টিকিট বাতিল হওয়ায় টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে।ইংরেজবাজার  শহরের এক স্কুলশিক্ষিকা বাসবী দাসের হায়দরাবাদে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার কথা ছিল ২৩ মার্চ। কিন্তু সেই যাত্রা তিনি বাতিল করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কোনও ঝুঁকি নিচ্ছি না। টিকিট বাতিল করতে এসেছি।’’ মায়াপুর হয়ে কলকাতা যাওয়ার টিকিট কেটেছিলেন ইংরেজবাজারের এক পরিবার। সেই পরিবারের সদস্য আনন্দ কেশরী বলেন, ‘‘মা, বোনের সঙ্গে মায়াপুর হয়ে কলকাতা যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা-আতঙ্কে ওই সফর বাতিল করেছি। ট্রেনের টিকিট বাতিল করতে এসেছি।’’গাজলের যদুনন্দন দাস বলেন, ‘‘আমার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল কন্যাকুমারী যাওয়ার। টিকিট কেটে রেখেছিলাম এক মাস আগে। ২৫ মার্চ আমাদের সপরিবার ট্রেন যাত্রা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস আতঙ্কে আর যাওয়া হচ্ছে না। তাই টিকিট বাতিল করলাম।’’

Related Articles

Back to top button