MY CATAGORY

বাংলার বুকে লাগাতার মহড়া বায়ুসেনার, মাঠে আমেরিকাও, চাপ বাড়ছে চিনের উপর?

কলকাতা: গত ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছিল ‘কোপইন্ডিয়া ২০২৩’। এই প্রথম ভারতের সঙ্গে সামরিক মহড়ায় অংশ নিল মার্কিন বায়ুসেনার (US Air Force) স্ট্র্যাটেজিক বম্বার বা বোমারু বিমান ‘বি-১বি ল্যান্সার’। এদিন যৌথ মহড়া হয়ে গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুন্ডা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে। প্রসঙ্গত, বি-১বি আদপে একটি সুপারসনিক (শব্দের চেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন) দূরপাল্লার মাল্টি-মিশন বম্বার। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে এরো ইন্ডিয়া শো-তে দেখা গিয়েছিল ল্যান্সার বিমানকে। সঙ্গে ছিল মার্কিন এফ-৩৫ ও এফ-১৬ যুদ্ধবিমানও (Fighter Jet)। এবার যৌথ মহড়ায় ল্যান্সার আসায় তার গুরুত্ব আরও বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে ২০২২ সালে নভেম্বরে ভারতীয় বায়ুসেনা (IAF) এবং সিঙ্গাপুর এয়ার ফোর্সের (SAF) মধ্যে ১১তম বার্ষিক যৌথ সামরিক মহড়া হয়েছিল কলাইকুন্ডায় শুরু হয়েছে। পাশাপাশি কোপ ইন্ডিয়া ২০১৮ তেও এক যোগে যৌথ মহড়ায় অংশ নিতে দেখা গিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা ও মার্কিন বায়ুসেনাকে।

এদিনের মহড়ায় দেখা গিয়েছে এমসি-১৩০জে কমান্ডো-২ পণ্যবাহী বিমান। ভারতে পা রেখেছেন মার্কিন এয়ার ফোর্সের কমান্ডোরা। প্রসঙ্গত, ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা সম্পর্ক মজবুত করতে ২০০৪ সালে শুরু হয়েছিল কোপ ইন্ডিয়া। বর্তমানে ভারতের সঙ্গে চিনের যে সম্পর্ক, আবার রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার যে সম্পর্ক, তারই মাঝে এই ধরনের বিরাট মাপের একটি মহড়া আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা মহলকে যে অন্য বার্তা দেবে, তা নিয়ে কোন সংশয় নেই বলে দাবি প্রতিরক্ষা বিশারদদের।

কেন বাছা হল বাংলাকে? 

পাশাপাশি তাঁদের এও দাবি, ভারত ও চিনের মধ্যে সম্পর্কে যে সীমা সংক্রান্ত এবং আনুষঙ্গিক বিষয়ে নানান টানাপোড়েন লেগেই রয়েছে, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গ ভূ-কৌশলগত ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। সেই কারণেই পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড় এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুন্ডাকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

সোমবার কলাইকুন্ডা বায়ু সেনাঘাঁটিতে সাংবাদিক বৈঠকে ভারতীয় পক্ষের কলাইকুন্ডা বায়ুসেনা ঘাঁটির এয়ার অফিসার ইন কমান্ডিং কমোডর রণ সিং বলেন, “দু’দেশের বায়ুসেনা কর্মীদের যৌথ মহড়া আমাদের কার্যক্ষমতা তো বাড়াবেই, পাশাপাশি একে অন্যের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও দেবে এই যৌথ মহড়া।”

 

ছেলে আরিয়ানের পরিচালনায় এবার শাহরুখ, ক্যামেরার পিছন থেকে বাবাকে দিলেন নির্দেশ

 

 

চাপ বাড়ছে চিনের উপর?

বায়ুসেনার শীর্ষকর্তাদের কথায়, এই দুটি বায়ু সেনা ঘাঁটি চিন সীমান্ত থেকে অনেকটাই ভিতরে। কিন্তু কৌশলগতভাবে দেশের মধ্যে যে কটি বায়ুসেনা ঘাটিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়, তার মধ্যে প্রথম পাঁচেই রয়েছে কলাইকুন্ডা এবং পানাগড়। কলাইকুন্ডা থেকে চিন সীমান্ত যতটা দূর, পানাগড় থেকে তার কিছুটা কম। পানাগড় অর্জুন সিং বায়ুসানা ঘাঁটি থেকে পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের সীমান্ত প্রহরায় থাকা ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়া হয়। পানাগড় থেকে নাথু লা সীমান্ত সড়কপথে ৬৮৮ কিমি। আকাশপথে আরও কম। অন্যদিকে, কলাইকুন্ডা থেকে সড়ক পথে নাথু লা সীমান্ত ৮২৪ কিমি। আকাশপথে অবশ্যই দূরত্ব অনেকটাই কম।

দেশের প্রতিরক্ষা বিশারদদের কথায়, সাম্প্রতিক অতীতে, ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে এই মহড়ায় অংশ নিতে বিপুল উৎসাহ ও উদ্যোগ দেখিয়েছে আমেরিকা। এ ধরনের যুদ্ধ মহড়ায় তারা ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন নতুন সামরিক কৌশল থেকে শুরু করে তথ্য ও অত্যাধুনিক সামরাস্ত্রের ব্যবহার ও কার্যপ্রক্রিয়া ভাগ করে নিয়েছে। এবারের এই মহড়া অনেক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক এক সপ্তাহ আগেই শেষ হয়েছে তাইওয়ানের জল-সীমান্তের কাছে চিনের তিন দিন ব্যাপী সামরিক মহড়া। তাইওয়ান উপকূলের কাছে নিজেদের পেশী-শক্তি দেখিয়েছে ড্রাগনের দেশ। তার ওপর কিছুদিন আগেই, অরুণাচলের কয়েকটি জায়গার নাম বদলের ঘোষণা করেছে চিন, যা নিয়ে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে নতুন চাপানউতরের সৃষ্টি হয়েছে। তাই এসবের মধ্যে চিনকে বার্তা দিতে মার্কিন ও ভারতীয় বায়ুসেনা এই মহড়া চালাচ্ছে বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।

Related Articles

Back to top button