বিনোদন

স্বস্তিকার ফ্যানেদের দিয়ে দোকান বন্ধের অভিযোগ, ‘শিবপুর’ কাণ্ডের হালহকিত

শিবপুর ছবির ভবিষ্যৎ এখনও অন্ধকারেই। ছবির মুক্তি কবে না নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্চাই নেই। তবে অন্দরমহলের তরজা এখন কোন পর্যায় তা খোলসা হল সোমবার ১৭ এপ্রিল, ২০২৩। এদিন বিকেলে এক সাংবাদিক বৈঠকে ছবি ও বিতর্ক প্রসঙ্গে মুখ খুলল শিবপুর ছবির প্রযোজক, হাওড়ার অজন্তা সিংহ রায়। ছবির অপর প্রযোজক দমদমের সৃজিত সরকারকে অজন্তা ছবি থেকে সরিয়েছেন অভিনেত্রীর মুখ চেয়েই। বর্তমানে অজন্তাই সমস্ত বিষয়টা একা সামলাচ্ছেন। এদিন সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন তিনি, তাঁর স্বামী ও তাঁর উকিল। তাঁর আঙুল এবার ছবির পরিচালকের দিকে। ছবির পরিচালনা করেছিলেন অরিন্দম ভট্টাচার্য, তবে তাঁকে নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন এবার প্রযোজক। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, ছবির বাজেটের থেকে বেশি পরিমাণ টাকা খরচ করেও ছবির কাজ যথা সময় শেষ করতে পারেননি। এখানেই শেষ নয়, অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপৃতীকর ঘটনাকে কেন্দ্র করেও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।

এই বিষয় তাঁরা নাকি কিছুই বুঝতে পারেননি প্রাথমিভাবে। কারণ তাঁরা কোনওদিন সরাসরি অভিনেত্রী সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। ছবি প্রযোজনার ক্ষেত্রে এটাই তাঁদের প্রথম কাজ। তাই পরিচালককেই প্রাধান্য দিয়েছিলেন তাঁরা। যা কাজ হতো সবটাই ম্যানেজার ভিত্তিক। তাঁদের বিষয়টা থেকে দূরেই রেখেছিলেন ছবির পরিচালক বলেই এদিন দাবি করেন অজন্তা। তাঁদের কথায়, ছবির পরিচালক অরিন্দম তাঁদের বুঝিয়েছিলেন, এই চলচ্চিত্র জগতে পরিচালকের কথাই শেষ কথা। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের কথা মেনে চলতে হয় শ্রীকান্ত মেহেতাকেও। স্বস্তিকার ফ্যানেদের দিয়ে দোকান বন্ধের হুমকিও দেখায় তাঁদের অরিন্দম। যার ফলে ছবির কোনও বিষয় তাঁরা ঢোকেননি প্রাথমিকভাবে।

প্রথমিকভাবে দুই প্রযোজকের নামেই অভিযোগ এনেছিলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তবে এখন তাঁদের মধ্যে মিটমাট হয়ে গিয়েছে বিষয়টা। ছবি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথাও বলেছিলেন স্বস্তিকা। তবে এখন আর সেই সিদ্ধান্তে অনঢ় নেই অভিনেত্রী। তিনি ছবির প্রচার করবেন। ছবির বাকি স্টারদের সঙ্গেও কথা বলেছেন অজন্তা। তাঁদেরও কোনও সমস্যা নেই। ফলে ছবিটা মুক্তি করানোই এখন মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রযোজনার কাছে।

তবে যে মেইল মারফত হুমকির প্রসঙ্গ উঠেছিল, সেই বিষয় ইতি টানতে প্রযোজক স্পষ্ট জানান, তাঁরা এই নামে কাউকে চেনেন না। তাঁদের কাছে স্বস্তিকার কোনও যোগাযোগেন নম্বর বা মেইল আইডি নেই। কার মারফৎ এই মেইল করা হয়েছে তা বর্তমানে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে হুমকির ঘটনায় বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে টলিপাড়ায়। স্বস্তিকার ‘বিকৃত ছবি’ ইমেল করে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। সেই বিকৃত ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও আসছিল অভিনেত্রীর কাছে। এই নিয়ে আগেই সরব হয়েছেন অভিনেত্রী। শুধু ইন্টারনেটে বিকৃত ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিই নয়, অভিনেত্রীর প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে গল্ফগ্রিন থানায় একটি জেনারেল ডায়েরিও করা হয়েছিল। সেই অভিযোগ পেতেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পুলিশ সূত্র মারফত জানা গিয়েছিল, অরিন্দম ভট্টাচার্যের পরিচালিত একটি সিনেমায় মুখ্য মহিলা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য হাওড়ার অজন্তা সিংহ রায় এবং দমদমের সৃজিত সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল স্বস্তিকার। অজন্তা ও সৃজিত ছিলেন প্রোডিউসার।

 

কেশপুরে সুকান্তর সভা, ঘোষিত কর্মসূচির ২৪ ঘণ্টা আগে সভাস্থলে আপত্তি পুলিশের

 

 

প্রযোজক অজন্তা সিং ও সন্দীপ সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছিলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। থানায় জিডি করেন, এমনকি ইম্পাতেও দেন লিখিত অভিযোগ। স্বস্তিকার অভিযোগের পরেই এই ঘটনায় সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে ইম্পা। কতদূর এগোল সেই প্রক্রিয়া? তা জানতেই  যোগাযোগ করেছিল ইম্পার কাছে। তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অজন্তা সরকার (প্রযোজক)কে আমাদের তরফে এক ইমেল করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই স্বস্তিকা ও অজন্তাকে মুখোমুখি বসিয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল ছবিটির প্রযোজক অজন্তা সিংয়ের সঙ্গেও। যদিও তাঁর ফোন বেজে গিয়েছিল।

তবে এবার নিজের পক্ষে সরব হলেন প্রযোজক। তাঁদের কথায়, স্বস্তিকার বিরুদ্ধে লিপিবদ্ধ যে তালিকাটি প্রকাশ্যে আনা হয়েছিল, সেখানে টাকা নিয়ে প্রচার প্রসঙ্গে যে সকল মন্তব্য করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। অজন্তার কথায়, তিনি নিজেই ছবির ডিজিটাল প্রচারের বিষয় উৎসাহী। নিজেই তা করতেন, তার জন্য পরিচালককে আলাদা করে দায়িত্ব নেওয়ার কথাও বলা হয়নি। এভাবে বহু ভূল তথ্য দিয়ে পরিচালক তাঁদের বোকা বানিয়েছে বলেই এদিন অভিযোগ করা হয়। এদিন সন্ধ্যায় ছবির পোস্টারে পরিচালকের নাম ঢাকতে সাদা কাগজও চাপা দেওয়া হয়েছিল। যদিও ছবির মুক্তিতে তাঁরা পরিচালককে ডাকবেন বলেই দাবি করেন। কারণ এখন যে ব্যক্তির নামে মেইল গিয়েছে তাঁর পরিচয় উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

Related Articles

Back to top button