জেলা

‘কর্মসূচি না করেই পালিয়ে গেলেন ব্লক নেতৃত্ব’, তৃণমূল বনাম তৃণমূলের ফ্যাসাদে ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’

নিজস্ব সংবাদদাতা: ‘দিদির রক্ষাকবচ’ কর্মসূচিকে ঘিরে এবার তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এল বাঁকুড়ার  কোতুলপুরে। সোমবার কোতুলপুর ব্লকের সিহড় অঞ্চলে তৃণমূলের এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতৃত্বের প্রতি সামাজিক মাধ্যমে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন দলেরই এক জেলা পরিষদ সদস্যা ও স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান। এরপরই প্রকাশ্য সভামঞ্চ থেকে দলীয় নেতৃত্ব ওই দু’জনের নাম না করে ঘাড় ধরে দল থেকে বের করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে কার্যত উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোতুলপুরের রাজনীতি।

তৃণমূলের কোতুলপুর ব্লকের নব নির্বাচিত ব্লক সভাপতি তরুন নন্দিগ্রামী ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার মহিলা তৃণমূল সভানেত্রী সঙ্গিতা মালিকের বিরুদ্ধে এর আগে সামাজিক মাধ্যমে বারবার সরব হতে দেখা গিয়েছে। তৃণমূলেরই স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যা শম্পা পণ্ডিতকে। এবার দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করেও দলের নেতা নেত্রীদের ওই অংশের প্রতি জেলা পরিষদ সদস্যার ক্ষোভ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ল। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিয়োতে জেলা পরিষদ সদস্য শম্পা পন্ডিত দাবি করেন, দলীয় কর্মীদের একাংশকে কিছু না জানিয়ে সোমবার সিহড় অঞ্চলে দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি পালনের ডাক দেয় তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্ব।

শম্পা পণ্ডিতের আরও অভিযোগ, সিহড় অঞ্চলে দলের ব্লক নেতৃত্ব কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে গেলেও দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি না করেই পালিয়ে যান। এমনটা চলতে থাকলে আগামী দিনে কোতুলপুর ব্লকের প্রতিটি পঞ্চায়েত বিরোধীদের হাতে চলে যাবে বলেও নিজের বক্তব্যে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ওই জেলা পরিষদ সদস্য। শম্পা পণ্ডিতের সুরে সুর মিলিয়ে সিহড় অঞ্চলের তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান সন্ধ্যা সাঁতরা কোতুলপুরের ব্লক সভাপতি তরুণ নন্দিগ্রামী ও জেলা মহিলা সভানেত্রী সঙ্গীতা মালিককে দলীয় পদ থেকে অপসারণের দাবি তোলেন।

এরপরই সিহড় অঞ্চলে আয়োজিত একটি প্রকাশ্য সভায় নাম না করে শম্পা পণ্ডিতের নাম না করে তাঁকে একহাত নেন আইএনটিটিইউসির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে কারও কিছু বলার থাকলে তিনি দলের মধ্যে তা আলোচনা করতে পারতেন। প্রকাশ্যে সামাজিক মাধ্যমে বললে তাঁকে তৃণমূল বলে আমি মনে করিনা। তিনি বিজেপির এজেন্টের মতো কাজ করছেন।” এরপরই দলের ব্লক সভাপতির প্রতি আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতির নির্দেশ, “দলের ভেতর কেউ গোষ্ঠীবাজি করার চেষ্টা করলে তাকে ঘাড়টা ধরে দল থেকে বের করে দিন।” সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োতে জেলা পরিষদ সদস্য শম্পা পণ্ডিতের তোলা অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তরুন নন্দিগ্রামী।

তিনি বলেন, “শম্পা পণ্ডিতের অভিযোগ মিথ্যা। সিহড় অঞ্চলে সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নিয়ম মেনে কয়েকশো তৃণমূল কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে দিদির সুরক্ষাকবচ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।” ব্লক নেতৃত্বের তরফে দলের স্থানীয় নেতা কর্মী সকলকেই এই কর্মসূচির খবর দেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি ব্লক সভাপতির।

Related Articles

Back to top button