প্রযুক্তি

কুমিরের মতো আওয়াজ করত ডাইনোসররা, এমনই সংকেত পেলেন বিজ্ঞানীরা

নিজস্ব সংবাদদাতা: ডাইনোসর নামটি শুনলেই যা মনে পরে, তা হল এটি পৃথিবীর অন্যতম আদিম একটি প্রাণী। যাদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে একের পর এক গবেষণা করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। শুধুমাত্র জীবাশ্মের ভিত্তিতে ডাইনোসর সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়। যে কারণে ডাইনোসর সম্পর্কে অনেক কিছুর তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তবে সবসময়ই একটি প্রশ্নের উত্তর অজানা রয়ে গিয়েছে যে, তারা কেমনভাবে আওয়াজ করত বা ডাকতো? সেই শব্দের সূত্রই পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। একটি নতুন গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, 2005 সালে বিজ্ঞানীরা একটি ক্রিটাসিয়াস যুগের ডাইনোসরের জীবাশ্ম পেয়েছিলেন। আর তারপর থেকেই এই দীর্ঘ গবেষণা চলছে যে, তারা কেমনভাবে ডাকতো।

2005 সালে, মঙ্গোলিয়ার গোবি অববাহিকায় জীবাশ্ম আকারে আঙ্কলাসোর প্রজাতির অন্তর্গত পিনাকোসরাস গ্রেঞ্জি নামে একটি ক্রিটেসিয়াস কার্পেট ডাইনোসরের দেহ পাওয়া গিয়েছিল। এই জীবাশ্মটির বিশেষ বিষয় হল, এর ঘাড়ের হাড়টি সম্পূর্ণ ছিল। যা সাধারণভাবে ঘটে না। এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা ওই ডাইনোসরের শ্বাস-প্রশ্বাসের তথ্য পেতে পারেন বলে তারা জানাচ্ছেন।

জাপানের হোক্কাইডো ইউনিভার্সিটি মিউজিয়াম এবং আমেরিকান মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রির প্যালিওন্টোলজিস্টরা জানিয়েছেন যে, 2005 সালে পাওয়া একটি ডাইনোসরের জীবাশ্মে ভয়েস বক্স পাওয়া গিয়েছে। তার তা দিয়েই বিজ্ঞানীরা গবেষণা করেছেন। গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা বলছেন, “মানুষ এবং পাখি উভয়ের স্বরযন্ত্রের মধ্যেই অনেক মিল রয়েছে। আসলে, ভোকাল ফিজিওলজি সরীসৃপ এবং পাখির ভয়েস বক্সের একটি অদ্ভুত মিল পাওয়া গিয়েছে। 250 মিলিয়ন বছর আগে, পৃথিবীতে সরীসৃপ-সদৃশ প্রাণীরা আর্কোসর নামক দলে বিভক্ত হয়েছিল। একটিকে ডাইনোসর বলা হয় এবং অন্যটিকে কুমির এবং অ্যালিগেটর বলা হয়। তবে এখনই কোনও বিশেষ সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না যে, ডাইনোসররা কেমন আওয়াজ করত।”

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, “স্তন্যপায়ী প্রাণী, উভচর এবং সরীসৃপরাও তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের টিউব দিয়ে শব্দ করে। কিন্তু এখানে পাখিরা ব্যতিক্রম। তবে এটি ধরে নেওয়া যেতে পারে যে, ডাইনোসররা কুমিরের মতো আওয়াজ করত।”

অন্য়দিকে সম্প্রতি, চিলি উপত্যকাতেও মিলেছে পৃথিবীর এই বিশালাকায় বিলুপ্ত প্রাণীর হদিশ। চিলির প্যাটাগোনিয়ায় একসঙ্গে চার প্রজাতির ডাইনোসরের জীবাশ্মের হদিশ মিলেছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন গত কয়েক দশকের মধ্যে চিলিতে ডাইনোসরের জীবাশ্মের খোঁজ পাওয়া অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বলে। বছর দুয়েক আগে, 2021 সালে আর্জেন্টিনা সীমান্তের কাছে দক্ষিণ চিলির লাশ চিনাস উপত্যকার সেরো গুইডোতে ডাইনোসরের জীবাশ্ম মিলেছে। সেগুলি কার জীবাশ্ম জানতে পরীক্ষাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর দীর্ঘ দু’বছর ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অবশেষে গবেষকরা নিশ্চিত করেছেন যে, এগুলি অবলুপ্ত ডাইনোসরের জীবাশ্ম।

Related Articles

Back to top button