জেলা

রয়েছে পাকা বাড়ি, তবু আবাসে নাম পঞ্চায়েত প্রধানের, তালিকায় TMC নেতার স্ত্রী-কন্যাও

নিজস্ব সংবাদদাতা: রাজ্যে আবাস যোজনার  প্রকল্পের কাজে জেলায় জেলায় বেনিয়মের অভিযোগ উঠছে। অনেক জায়গাতেই দেখা গিয়েছে, যাঁদের পাকা বাড়ি রয়েছে, তাঁদের নাম বা পরিবারের কারও নামও রয়ে গিয়েছে তালিকায়। জেলায় জেলায় তাই তালিকা যাচাইয়ের কাজ চলছে। আর তাতেই উঠে আসছে এমনই একের পর এক ঘটনা। এবার সেই ঘটনা দেখা গেল বাসন্তী ব্লকের চুনাখালি গ্রাম পঞ্চায়েতে।

সেখানে আবাসের তালিকায় নাম পাওয়া গিয়েছে পঞ্চায়েতের প্রধানের। এলাকার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির স্ত্রী-কন্যার নামও রয়েছে আবাসের তালিকায়। এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, যাঁদের সত্যিই ঘর পাওয়ার দরকার, তাঁরা ঘর পাচ্ছেন না। যাঁদের পাকা বাড়ি রয়েছে, তাঁরাই পাচ্ছেন।

এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দীপালি বৈরাগী সর্দার। তাঁর পাকা বাড়ি রয়েছে। অথচ সেই পঞ্চায়েত প্রধানেরও নাম রয়েছে আবাস প্লাসের তালিকায়। কেন এই ঘটনা? জানতে প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “২০১৮ সালে যখন সমীক্ষা হয়েছিল, তখন আমি প্রধান ছিলাম না। তখন আমি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলাম। সেই সময় আমার কাঁচা বাড়ি ছিল। আমি নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে, আমার বাড়িটা ভেঙে পড়েছিল। ধার-দেনা করে, অনেক কষ্টে আমি একটা ঘর বানিয়েছি। সেই ঘর এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।

বছর দুয়েক হল, আমি সেই ঘরে বাস করছি। যাঁরা সমীক্ষা করতে এসেছিলেন, তাঁরা দেখে ভেবেছিলেন আমি ঘর পাওয়ার যোগ্য। সেই কারণে তাঁরা আমার নাম নথিভুক্ত করে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে নৈতিক কারণে আমি আমার নাম নিজের নাম কেটে, সই করে বিডিওর কাছে জমা দিয়ে এসেছি।”

এলাকার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি অমৃত সরকারও থাকেন পাকা বাড়িতে। তাঁর আবার বক্তব্য, তিনি ও তাঁর ভাই যৌথভাবে এই বাড়িটি তৈরি করেছেন। অঞ্চল সভাপতি বলছেন, “এটি আগে সমীক্ষায় উঠে এসেছিল। আমি তো আর নতুন করে দরবার করিনি। আমার নামে কোনও ঘর নেই। মেয়ে ও স্ত্রীর নামে। মেয়ের বাড়ি তো আর এখানে নয়, সে তো আলাদা থাকে। সেখানেই তাঁর ঘর হবে।

মুখ্যমন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেখানে যাঁদের থাকার ঘর রয়েছে , তাঁদের ঘর না নেওয়াই ভাল। এটা নিয়ে আমার আর নতুন করে কিছু বলার নেই। এটা যদি না হয়, আমার তাতে কোনও আপত্তি নেই। আমি বিডিওকেও এই বিষয়টি লিখিত জানাব।”

তিনি বর্তমানে যে বাড়িতে থাকছেন, সেটির বিষয়ে বললেন, “আমার ছোট ভাই কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি করে। ও আলাদা থাকে। ভাই কিছু টাকা দিয়েছে, আমিও জমি বিক্রি করে কিছু টাকা দিয়ে এই বাড়িটি করেছি। আমি কোনওদিন কোনও সরকারি অনুদান আজ পর্যন্ত নিইনি। প্রশাসন যদি মনে করে এটি বাতিল করা দরকার, তাতে আমার কোনও আপত্তি নেই।”

যদিও এই বিষয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতা বিকাশ সর্দার বলছেন, “শুধু বাসন্তী নয়, সারা রাজ্যেই খুঁজলে দেখা যাবে পঞ্চায়েতের প্রধান ও সদস্যরা নিজেদের ও আত্মীয়দের নাম তালিকায় ঢুকিয়েছেন। উপযুক্ত তদন্ত করে প্রকৃত প্রাপকদের দেওয়া উচিত।”

Related Articles

Back to top button