ভ্রমন

আড়াই লক্ষ হাজার কোটি টাকার ট্যুরিজ়ম-ব্যবসার পিছনে ইচ্ছে ধ্বংসস্তূপে বেড়াতে যাওয়ার?

পাহাড় না সমুদ্র—এই প্রশ্নের উত্তর আর কেউ খোঁজে না। এখন মানুষ শুধু বেড়াতে যাওয়ার ছুতো খোঁজে। অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় মানুষ এমন জায়গায় ঘুরতে যেতে চায়, যেখানে গেলে সে অনন্য অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারে। আর তা-ই তো ভ্রমণ ও অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় বাড়ছে ডার্ক ট্যুরিজমের চাহিদা। কোনও এক সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা মানুষের হিংসা ও রাজনীতির কারণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে গোটা এলাকা অর্থাৎ যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল, সেখানেই হয়ে থাকে এই ধরনের ট্যুর-এর বন্দোবস্ত। যদিও ভারতে এই ধরনের ট্রিপকে ‘ভূতুড়ে জায়গা’ বা ‘ঐতিহাসিক স্থান’-এ ভ্রমণ বলা হয়। কিন্তু পাশ্চাত্যের দেশগুলোয় ব্যাপক চাহিদা ডার্ক ট্যুরিজমের।

নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমেরিকার ৮০ শতাংশ মানুষ ডার্ক ট্যুরিজম সাইটে বেড়াতে যেতে ভালবাসে। আমেরিকাবাসী জীবনে অন্তত একবার এই ডার্ক ট্যুরিজম সাইটে বেড়াতে যেতে চায়। এর জন্য তাঁরা হাজার-হাজার ডলার খরচ করতেও রাজী। কিন্তু কেন মানুষের মধ্যে এত বেশি ডার্ক ট্যুরিজমের চাহিদা, চলুন জেনে নেওয়া যাক।

এই ডার্ক ট্যুরিজম থেকে বিশ্বজুড়ে ট্যুরিজম সেক্টরের আয় ৩০ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ২ লক্ষ ৪৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা। যে স্থান অতীতে ভয়াবহ কোনও ঘটনার সাক্ষী থেকেছে, যে জায়গার ইতিহাস বইয়ের পাতায় ঠাঁই পেয়েছে, সেই স্থানের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি। ৩০ শতাংশ আমেরিকান পর্যটক ইউক্রেনের চেরনোবিল বেড়াতে যেতে চান। ইউক্রেনের চেরনোবিল হল সেই জায়গা, যা পারমাণবিক বিপর্যয়ের ফলে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

এই খবরটিও পড়ুন

বাবা অ্যাথলিট, মা ফিটনেস ট্রেনার; আইপিএলে ঝড় তুলেছেন গুজরাটের নয়া তারা

 

 

যদিও ১৯৯৬ সালের আগে পর্যন্ত ‘ডার্ক ট্যুরিজম’ শব্দের প্রচলন ছিল না। ১৯৯৬ সালে ‘ডার্ক ট্যুরিজম’ ধারণার প্রচলন করেন গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান ইউনিভার্সিটির দুই অধ্যাপক জন লেনন এবং ম্যালকম ফোলি। তাঁদের লেখা ‘ডার্ক ট্যুরিজম’ বইও রয়েছে। সেখানে উত্তর ও দক্ষিণ ইউরোপের বিভিন্ন ডার্ক ট্যুরিজম সাইট সম্পর্কেও উল্লেখ রয়েছে। এখন সেই তালিকা অনেক বেশি বিস্তৃত হয়েছে। নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার থেকে শুরু করে সেখানে জায়গা করে নিয়েছে জাপানের হিরোশিমা।

ভারতে যদিও ডার্ক ট্যুরিজমের খুব বেশি চাহিদা নেই। বরং ভারতে মানুষ বেড়াতে যেতে ভালবাসেন ঐতিহাসিক স্থানে। এমন জায়গা বেছে নেন ভারতীয়রা যেখানে গেলে পাওয়া যায় গা-ছমছমে অনুভূতি। ‘ডার্ক ট্যুরিজম’ শব্দটা হয়তো জনপ্রিয় নয় সেই কারণে। কিন্তু ভারতের ‘ডার্ক ট্যুরিজম সাইট’গুলো পর্যটকদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। যেমন অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালা বাগ, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সেলুলার জেল, গুজরাতের ভুজ, দিল্লির গান্ধী স্মৃতি, উত্তরাখণ্ডের রূপকুণ্ড লেক ইত্যাদি। ‘ডার্ক ট্যুরিজম’ না হলেও আপনি অ্যাডভেঞ্চারের খোঁজে ভারতের এই জায়গাগুলো ঘুরে আসতে পারেন।

 

Related Articles

Back to top button