গ্রামের পাতায়

চওড়া সিঁড়ি উঠছে দোতলায়, সাজছে প্রাসাদোপম বাড়ি, তবু প্রধানের স্ত্রী আবাসের তালিকায়

নিজস্ব সংবাদদাতা: তৈরি হচ্ছে পাকা বাড়ি। তবু পঞ্চায়েত প্রধানের স্ত্রীর নাম উঠে এসেছে আবাস যোজনার  তালিকায়। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের  গলসিতে। সেখানে পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শাহজাহান শেখ। তাঁর একটি বাড়ি তৈরি হচ্ছে গ্রামে। সেই বাড়ির বহর দেখলে অবাক হবেন অনেকেই। বাড়ির সামনে থেকে চওড়া সিঁড়ি সোজা উঠে গিয়েছে দোতলায়। সেখান থেকেই বাড়ির মূল অংশ। সেটি অবশ্য এখনও নির্মীণমান অবস্থায় রয়েছে।

তবে একতলার কাজ ভিতরে অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। প্লাস্টার অবশ্য হয়নি। তবে মাস খানেক ধরে একতলাতেই পরিবার নিয়ে বাস করছেন পঞ্চায়েত প্রধান শাহজাহান শেখ। এমন পেল্লায় বাড়ি তৈরি করছেন যিনি, সেই প্রধানের স্ত্রী ববিতা বেগমের নামও উঠে এসেছে আবাসের তালিকায়। আর এই নিয়েও তীব্র চাপানউতর শুরু হয়েছে জেলার অন্দরে। ক্ষোভ প্রকাশ করছেন গ্রামবাসীরাও।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, “প্রধানের একটি বাড়ি ইতিমধ্য়েই হচ্ছে। ২০-৩০ লাখ টাকার বাড়ি। আন্ডারগ্রাউন্ড সিস্টেমে বাড়ি করছে। তারপরও বাড়ি পাচ্ছে। আমাদের গ্রামে অনেক গরিব মানুষ আছেন, তাঁরা বাড়ি পাচ্ছেন না। কিন্তু প্রধান আগে আগে বাড়ি পেয়ে যাচ্ছেন। উনি গ্রামের প্রধান, তাই উনি নিজের সিস্টেমে নিজে করে নিচ্ছেন। বাকি গ্রামের কে পাচ্ছে, কে পাচ্ছে না… সেসব ওনার দেখার প্রয়োজন নেই। আমরা চাই গরিব মানুষ বাড়ি পাক। ওনার কোনও আয়ের উৎস নেই। তারপরও কীভাবে এত বড় বাড়ি বানালেন, তা জানি না।”

পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ শাহজাহান অবশ্য বলছেন, “২০১৮ সালে আমার মাটির বাড়িটি ভেঙে গিয়েছিল। তখন পঞ্চায়েতের স্টিয়ারিং কমিটি আমার নামটি পাঠিয়েছিল। এখন আমি ব্যাঙ্ক লোন নিয়ে বাড়ি শুরু করেছি। সাড়ে সাত লাখ টাকার ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়েছি। এছাড়া স্ত্রীর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ঋণ রয়েছে। যা অবশিষ্ট আছে তা, আমি আস্তে আস্তে করে নেব।

বর্তমানে আমার ওই সরকারি বাড়িটার প্রয়োজন নেই। খোঁজখবর নিতে আসা সরকারি কর্মীদের আমি আমার নামটি লিস্ট থেকে বাদ দিতে বলেছি। আমি চাই ওই বাড়িটা কোনও গরিব মানুষকে দিক সরকার।” প্রধানের স্ত্রী ববিতা বেগমও একই কথা বলছেন। সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের মুখে বললেন, “আমি সরকারের দেওয়া ওই বাড়িটি চাই না।”যদিও ইস্যুটি নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিজেপি শিবির। পদ্ম শিবিরের জেলা কমিটির সদস্য জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা অবাস্তব কিছু নয়। চুরি করাই তো তৃণমূলের ছোট বড় সব নেতার কাজ।”

Related Articles

Back to top button