ভোটের মুখে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে চাঞ্চল্য
বঙ্গের দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের মধ্যে শাহজাহান গড়ে উদ্ধার হয় বিস্ফোরক। উল্লেখ্য গত ৫ই জানুয়ারি সন্দেশখালির সরবেড়িয়া গ্রামে তল্লাশি চালাই ইডি। সেখানে শাহজাহান অনুগামীদের হামলার মুখে পড়তে হয় তাদের। তারপর আবার ফেব্রুয়ারীর শুরুতে শাহজাহানসহ তার অনুগামীদের করা অত্যাচারের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে সন্দেশখালির মহিলারা। ঘটনায় তোলপাড় হয়ে পড়ে রাজ্য রাজনীতি। পরবর্তীতে দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে মিনাখা থেকে রাজ্য পুলিশের তৎপরতায় গ্রেফতার হয় সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শাহজাহান। তারপর কিছুদিন শান্ত থাকে এলাকা। কিন্তু শুক্রবার একদিকে দেশের দ্বিতীয় দফার ভোট, অন্যদিকে ফের সন্দেশখালিতে অ্যাকশন মোডে সিবিআই। দিনভর তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় একের পর এক অস্ত্রশস্ত্র, পরিচয় পত্র এবং নথি। প্রসঙ্গক্রমে বলতে হয়, শাহজাহান ঘনিষ্ঠ আবু তালেব মোল্লার বাড়িতে শুক্রবার তল্লাশি চালায় সিবিআই এবং এনএসজি আধিকারিকেরা। উদ্ধারকৃত অস্ত্র গুলি হল তিনটি বিদেশী রিভলভার, ১ টি ভারতীয় রিভলভার, কোল্ট সংস্থার তৈরি পুলিশের ব্যবহার করা ১ টি রিভলভার, বিদেশে তৈরি ১ টি পিস্তল, ১ টি দেশি বন্দুক, ১২০ টি বুলেট, ৫০ টি কার্তুজ, ৯ কিলোমিটার ক্যালিবার ১২০ টি কার্তুজ, পয়েন্ট ৩৮০ কার্তুজ ৫০ টি, পয়েন্ট ৩২ কার্তুজ ৮ টি, এরপর আবু তালেব এর বাড়ি থেকে খানিক দূরে একটি নির্জন জায়গায় চারটি বোমা নিষ্ক্রিয় করে এনএসজি। তারপর উদ্ধার হওয়া অস্ত্র নিয়ে যায় এনএসজি। প্রসঙ্গত বলতে হয়, সন্দেশখালির অস্ত্র এসেছিল মার্কিন মুলক থেকে, এর পেছনে কি আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্র কোন ভাবে যুক্ত? নাকি বিদেশে অস্ত্র উদ্ধারের নেপথ্যে কোন জঙ্গি সংগঠনের হাত রয়েছে? এই অস্ত্রের উৎসই কি? প্রশ্ন থেকেই যায়। এমন আবহে আবার হাসনাবাদে বিস্ফোরক! বিজেপি নেতা নিমাই দাসের ভাইয়ের বাড়িতে মজুদ বোমা বিস্ফোরণ! ঘটনায় আহত হয় বাড়ির বাসিন্দারা। ঘটনায় বিজেপি নেতার ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তৃণমূলের বিরুদ্ধে বোমা রেখে যাবার অভিযোগ সামনে এনেছে বিজেপি। ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে তুমুল বচসা হয় বিজেপি কর্মীদের। একদিকে ভোটের মরশুমে উদ্ধার হয় একের পর এক অস্ত্রশস্ত্র। অন্যদিকে ঘটনা গুলিকে সামনে রেখে তৃণমূল বিজেপি একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ বর্তাতে ব্যস্ত। আবার সন্দেশখালি তে অস্ত্র উদ্ধার প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির আইটি সেল এর প্রধান অমিত মালব্য। যেমন, সন্দেশখালির বেতাজ বাদশার বাড়িতে কিভাবে উদ্ধার হল কোল্ট অফিসিয়াল পুলিশের রিভলভার? রিভলভারটি কি রাজ্যের অস্ত্রাগার থেকে চুরি হয়েছে? যদি চুরি হয়ে থাকে সেই রিপোর্ট কি করা হয়েছিল? রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। এমন সব প্রশ্নে সরব বিজেপির আইটি সেল এর প্রধান। সন্দেশখালিতে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা সন্দেশখালি থেকে যে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে তা আদৌ সেখান থেকে পাওয়া গেছে কিনা সেই নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। হাসনাবাদের বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন কুনাল ঘোষ। সব মিলিয়ে রাজ্যে বোমা উদ্ধারের ঘটনায় সরগরম রাজ্য রাজনীতি।