রাজ্য

ভাবতা আল ইকরা মিশনের প্রথম মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ কৃতি ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা।


মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মানার্থে এক সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয় রবিবার ভাবতা আল ইকরা মিশনে।
সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে এবং মাস্ক পরে উক্ত অনুষ্ঠানে মোট ১৫ জন কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে শংসাপত্র মেমেন্টো ইত্যাদি পুরস্কার স্বরূপ তুলে দেওয়া হয়। ভাবতা আল ইকরা মিশন প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালে । বিদ্যালের পিছুনে প্রথম থেকেই সহযোগিতায় আছেন কিছু প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং কিছু রাজনৈতিক নেতানেত্রী সহ গ্রামের জন সাধারণ। প্রশাসনিক কর্মকর্তার মধ্যে সব থেকে যার বেশি অবদান তিনি হলেন সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ২০০৯ সালে বেলডাঙ্গা বিডিও পদে থাকাকালীন সব থেকে বেশি সহযোগিতা করেছিলেন। প্রথমে উনার সহযোগিতা না থাকলে হয়তো ভাবতা আল ইকরা মিশনের নাম চিরতরেই ডুবে যেত। তারপর একের পর এক বেলডাঙ্গা বিডিও এবং কিছু পুলিশ অফিসার সহযোগিতা করে চলেছেন। বর্তমানে সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদ জেলা পঞ্চায়েত উন্নয়ন আধিকারিক।

অনেকের মনে প্রশ্ন ছিল ভাবতা আল ইকরা মিশন কি পারবে দীর্ঘ পথ হাটতে? অনেকেই মনে করেছিলেন ভাবতা আল ইকরা মিশন হয়তো এক সময় বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ এখানে নেওয়া হয়না অতিরিক্ত কোনো ডোনেশন ফী। পাননা কারোর কাছ থেকেে অর্থনৈতিক সাহায্য অদম্য ইচ্ছে থাকলে অনেক কিছুই করা যায় এবং সফলতাও পাওয়া যায়। সেটাই প্রমান করে দিল ভাবতা আল ইকরা মিশনের কিছু ছাত্রছাত্রী, যারা চতুর্থ শ্রেণী পাশ করে বিভিন্ন হাই স্কুলে এবং হাই মাদ্রাসায় ভর্তি হয় এবং এ বছর প্রথম মাধ্যমিক দেয়। এ বছর কয়েকজন ছাত্রছাত্রী ভাবতা আজিজিয়া হাই মাদ্রাসা থেকেও দেয় মাধ্যমিক । এ বছর মাধ্যমিকে ভাবতা আজিজিয়া হাই মাদ্রাসায় ১-১০ নম্বর র‍্যাংক এর তালিকায় আছে ভাবতা আল ইকরা মিশনের ৪ জন ছাত্রছাত্রী । আসিফ মাসুদ, আসিকুর জামান, সাইফুর রহমান, সাউনি আরজু। বাকিরা প্রথম বিভাগ সহ ভালোভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে । রবিবার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যে সব ছাত্রছাত্রীদের পুরস্কৃত করা হয় , আসিফ মাসুদ, আসিকুর জামান, সাইফুর রহমান, ফাহিম সেখ, ইমরান সেখ, মাফিকা খাতুন, সাউনি আরজু, আয়েসা সিদ্দিকা, রাহিল আলম, ওয়াসিকা তামান্না, ফিরোজা সালমা, সেফা খাতুন, মিজানুর জামান, রোমানা সুলতানা সহ অনেকেই।

ভাবতা আল ইকরা মিশনে নেওয়া হয় সামান্য ভর্তি ফি এবং মাসিক বেতন। যাতে করে সহজেই সকল গরীব এবং সাধারণ পরিবারের ছেলেমেয়েরা ভর্তির সুযোগ পায়। সামান্য বেতনের মধ্য দিয়ে টিম টিম করে চলা ভাবতা আল ইকরা মিশন আজ কিছুটা আশার আলো খুজে পেয়েছে এই সব কৃতি ছাত্রছাত্রীর মাধ্যমে । ভাবতা আল ইকরা মিশনের প্রধান শিক্ষক মো বাসিরুল হক বলেন ” আমাদের বিদ্যালয় ভাবতা আল ইকরা মিশন অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে উন্নতি হয়েছে এবং এগিয়ে চলছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি কবির হোসেন মোল্লা, সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় (DPRDO), গোলাম মোস্তফা ( ক্যাসিয়ার) এবং মৃত্যুঞ্জয় সরদার (বিদ্যালয় প্রশাসনিক প্রধান), উনাদের আন্তরিক সহযোগিতা না থাকলে এই বিদ্যালয় কোনো দিন আশার আলো দেখতে পেতনা। আমি আশা করি ভবিষ্যতেও একই ভাবে আমাদের বিদ্যালয়ে এই ভাবেই সহযোগিতা করে যাবেন। আমাদের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন এই এই বিদ্যালয় থেকে IPS, WBCS এবং ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এবং বিভিন্ন অফিসার হওয়ার জন্য এখান থেকে কোচিং এর ব্যবস্থা করা। যদি আমরা প্রশাসনের আরও সহযোগিতা পাই তাহলে আগামী দিনে আমাদের বিদ্যালয় হয়তো অনেকটাই এগিয়ে যাবে। এই কৃতি ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা আগামীদিনের দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। পাশাপাশি আমি সকল ছাত্র-ছাত্রীর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কামনা করছিএবং প্রধান শিক্ষক হিসেবে  সবসময় ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিচ্ছি “।বিদ্যালয়ের ছাত্র আসিফ মাসুদ বলেন ” আমরা মাধ্যমিকের প্রথম ব্যাচ। আমরা ভাবতা আল ইকরা মিশন থেকে যত্ন সহকারে ইংরেজি শিখেছি, তাই আমার ইংরেজি বিষয়ে আগ্রহ বেশি। সেইজন্যই আমি বি এ ক্লাসে ইংরেজি নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই।এবং আমার সপ্ন ডাব্লিউ বি সি এস পরিক্ষায় বসে বিডিও হওয়া ।”

Related Articles

Back to top button