1932 সালের পর ৮৮ বছর পর বন্ধ মেদিনীপুর এর মহিষাদল এর রথযাত্রা।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল রাজ পরিবারের ২৪৪ বছরের রথ করোনা মহামারীর জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেও নিয়ম মেনে আগেরদিন লেথ উৎসব পালন করা হয় মহিষাদল রাজ পরিবার এর তরফ থেকে। মন্দির থেকে শালগ্রাম শিলা নিয়ে এসে রথ সাজিয়ে পূজার্চনা করা হয়।
আজ সকাল থেকে নিয়ম মেনে মাঙ্গলিক পক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে । রাজ পরিবার থেকে মদন গোপালজিউ, জগন্নাথদেব কে নিয়ে আসা হয়েছে রথে। সেখানে চলছে পূজোঅর্চনা। বিকেলে 4 তে নাগাদ রথ থেকে রাজবাড়ীর পালকী তে করে গুন্ডিচা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া যাওয়া হবে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার ঘোষণা করা হয় অযথা ভিড় না করে দূরত্ব বজায় রেখে সমস্ত কিছু সম্পন্ন হয়।
জগন্নাথ দেব ঘাঘরা গ্ৰামের মাসির বাড়ি যাবেন রাজবাড়ীর পালকি চড়েই। সঙ্গে যাবেন মদনগোপাল জিউ। 7 দিন পর আবার পালকী করে নিয়ে আসা হবে।
রাজা আনন্দলাল উপাধ্যায়ের সহধর্মিনী ধর্মপ্রাণ রানী জানকি দেবী মহিষাদলের রথের শুভ সূচনা করেছিলেন ছোট্ট একটি রথ দিয়ে। এরপর ১৮০৪ সালে জানকি দেবীর মৃত্যুর পর অল্পকালের জন্য মতিলাল পাঁড়ে মহিষাদলের রাজত্ব ভার গ্রহণ করেন। সেই সময় তিনি রানীর রথ যাত্রার রীতিকে বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সুবিশাল একটি ১৭ চূড়োর রথ তৈরি করান। তারপর থেকেই সেই রথ বৃহৎ আকারে মহিষাদলের উৎসবে পরিণত হয়। সময়ের সাথে সাথে রথ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা ফের ১৮৫২ সালে রাজা লছমন প্রসাদ গর্গ বাহাদূর কলকাতা থেকে চীনা মিস্ত্রি আনিয়ে প্রায় চার হাজার টাকা খরচ করে সতেরো চূড়ো রথের সংস্কার করান। এরপর ১৯১২ সালে স্থানীয় শিল্পী মাধব চন্দ্র দে রথের সামনের শ্বেত শুভ্র দুটি কাঠের ঘোড়া দায়িত্ব পেয়ে স্থাপন করেন। যা বর্তমানে এখনো বিরাজমান । প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে একের পর এক রথের চূড়া ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ১৭চুড়ার রথ নেমে এসেছে ১৩ চুড়ায়।৩৪টি চাকা বিশিষ্ট মহিষাদল রাজবাড়ির প্রাচীন এই রথের নাম পুরী, মাহেশের পরই জনপ্রিয়তার শিখরে স্থান করে নিয়েছে।