আন্তর্জাতিক

আত্মসমর্পণ-গ্রেফতার পঞ্জাবে, তবে অসমে কেন নিয়ে যাওয়া হল অমৃতপালকে?

গুয়াহাটি:  মার্চ মাসের ১৮ তারিখ থেকে খালিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিং(Amritpal Singh)-কে গ্রেফতার অভিযানে নেমেছিল পঞ্জাব পুলিশ(Punjab Police)। প্রায় টিকি ছুঁয়ে ফেললেও, শেষ মুহূর্তে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যান অমৃতপাল। এরপর কেটে গিয়েছে এক মাসেরও বেশি সময়। একাধিকবার অমৃতপালকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হলেও, প্রতিবারই পুলিশকে ধোঁকা দিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছিলেন খালিস্তানি নেতা(Khalistani Leader)। সেই অমৃতপালই কি না ৩৬ দিন পালিয়ে বেড়ানোর পর নিজেই আত্মসমর্পণ করলেন? রবিবারই পঞ্জাবের মোগা জেলার একটি গুরুদ্বারে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন খালিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিং। গ্রেফতারির পর এক মুহূর্তও সময় নষ্ট করেনি পঞ্জাব পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে অমৃতপালকে নিয়ে যাওয়া হয় ভাতিন্ডা এয়ারবেসে, সেখান থেকে বিশেষ কপ্টারে করে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় অসমে (Assam)। সেখানের ডিব্রুগড় জেলেই (Dibrugarh Jail) ঠাঁই হয়েছে খালিস্তানি নেতার। ওই জেলেই আগে থেকে বন্দি রয়েছেন অমৃতপালের আট সঙ্গী। কিন্তু কেন হঠাৎ অসমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পঞ্জাবের হাই প্রোফাইল বন্দিদের? শুধুই কি নিরাপত্তা নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ?

ডিব্রুগড় জেল উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্য়তম সুরক্ষিত ও বড় জেল। তবে অমৃতপালের নিরাপত্তা নয়, তাঁকে উত্তর-পূর্বের জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্য় কারণে। সূত্রের খবর, উত্তর-পূর্ব ভারতের জেলগুলিতে বন্দি গ্য়াংস্টার ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে খালিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংয়ের যোগ থাকার প্রবল সম্ভাবনা। তদন্তে যাতে সুবিধা হয়, তার জন্যই অমৃতপালকে পঞ্জাব থেকে সরাসরি অসমের জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, ভাষার প্রতিবন্ধকতাকেও হাতিয়ার করছে পুলিশ। পঞ্জাবের কোনও জেলে থাকলে অন্যান্য বন্দি বা জেল আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলতে কোনও অসুবিধা হত না অমৃতপালের। কথা বলার সুযোগ পেলেই অমৃতপাল ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে মগজ ধোলাই করতে পারে, এমনটাই আশঙ্কা ছিল পুলিশ ও গোয়েন্দাদের। সেই কারণেই অমৃতপালকে ডিব্রুগড়ের জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যেখানে তাঁর অন্যান্য বন্দিদের সঙ্গে কথা বলতে অসুবিধা হবে ভাষার বিভিন্নতার কারণে। পাশাপাশি অসমের শিখ সম্প্রদায়ও খালিস্তানের সমর্থক নন বলেই জানা গিয়েছে।

 

ঋণ পুনরুদ্ধারের জন্য ভুয়ো এজেন্টরা হুমকি দিচ্ছে? অভিযোগ করুন এখানে, জেনে নিন আরবিআই-এর নিয়ম

 

 

১৭০ বছর পুরনো ডিব্রুগড় জেলে এখনও অবধি জেল ভেঙে পালানোর মতো বড়সড় ঘটনা কখনও ঘটেনি। এই জেলের নিরাপত্তা অত্য়ন্ত কঠোর, পাশাপাশি শহরের একদম কেন্দ্রস্থলে জেলের অবস্থান হওয়ায় জেল ভেঙে বন্দি নিয়ে পালানোও প্রায় অসম্ভব। ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ সংগঠনের প্রধান অমৃতপালের গ্রেফতারি ঘিরে যাতে কোনও প্রকার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, তার জন্য়ই তাঁকে ত্রী স্তরীয় নিরাপত্তা সহ ডিব্রুগড়ের জেলে রাখা হয়েছে।
বাকি বন্দি, বিশেষ করে নিজের সহকারীদের সঙ্গে যাতে কথা বলতে না পারেন অমৃতপাল, তার জন্য আলাদাভাবে আইসোলেশন সেলে রাখা হয়েছে অমৃতপালকে। তাঁর সেলে বসানো হয়েছে সিসিটিভিও। এছাড়া গোটা জেল জুড়ে মোট ৫৭টি সিসিটিভি রয়েছে।

Related Articles

Back to top button