কলকাতা

সল্টলেকের বস্তিতে এখন শ্মশানের হাহাকার, বিধ্বংসী আগুনে সব খুইয়ে দিশেহারা বাসিন্দারা

বিধাননগর: সল্টলেকের ফাল্গুনী বাজার সংলগ্ন বস্তিতে রবিবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ আগুন লাগে। এর জেরে গোটা বস্তি পুড়ে ছায় হয়ে গিয়েছে। গোটা বস্তিতে এখন শ্মশানের মতো অবস্থা। ওই বস্তিতে ৮০টি পরিবারের বাস ছিল। কিন্তু বস্তি পুড়ে ছারখার হওয়ায় এই পরিবারগুলি গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। পুরসভার তরফে স্থানীয় কমিউনিটি সেন্টারে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল গৃহহীন পরিবারগুলিকে। সকাল হতেই ঘটনাস্থলে আসে বস্তির বাসিন্দারা। আগুনে অধিকাংশ জিনিসই ভস্মীভূত হলেও তার মধ্যে থেকে যদি কিছু উদ্ধার হয়, সেই আশাতেই আসেন তাঁরা। আগুনের গ্রাসে সর্বহারা হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। রবিবার সন্ধ্যায় আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের ১০টি ইঞ্জিন। দমকলকর্মীদের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। তবে সোমবার সকালেও বস্তির কিছু জায়গায় পকেট ফায়ার রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দমকলের ২টি ইঞ্জিন এখনও রয়েছে ঘটনাস্থলে। পকেট ফায়ারও নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ চলছে।

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে পুড়ে ছায় সল্টলেকের ফাল্গুনী বাজার সংলগ্ন বস্তি। আগুন লাগার পর একাধিক সিলিন্ডার বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে। দমকল এসে বস্তিতে বসবাসকারী পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যান। পুরসভার একটি কমিউনিটি সেন্টারে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল গৃহহীনদের। রবিবারেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও বিধাননগর পুর চেয়ারম্যান কৃষ্ণা বসু। তবে আগুনের জেরে সব খুইয়ে সর্বস্বান্ত হওয়া পরিবারগুলির পুনর্বাসনের দাবি উঠেছে।

সোমবার সকাল হতেই বস্তির বাসিন্দারা আসেন ঘটনাস্থলে। যদিও কিছু অবশিষ্ট থাকে, তা উদ্ধারের আশা নিয়ে এসেছেন তাঁরা। চোখের সামনে ঘর-বাড়ি জ্বলে যেতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বস্তিবাসীরা। পরিচারিকার কাজ করা ওই বস্তির বাসিন্দা এক মহিলা চোখের জল ফেলতে ফেলতে বলেছেন, “আমাদের সবকিছু চলে গেল। আমরা এখন কী করব।” ওই বস্তিতেই থাকতেন পেশায় ভ্যানচালরক সুকুমার গারু। ৩ মে তাঁর মেয়ের বিয়ে। মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা-পয়সা, গয়না তিলে তিলে জমিয়েছিলেন সুকুমার। বিয়ের জোগাড় শেষ হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে সর্বস্ব খুইয়েছেন তিনি। এখন মেয়ের বিয়ে কী ভাবে দেবেন তা ভেবে পাচ্ছেন পেশায় ভ্যানচালক ওই ব্যক্তি।

Related Articles

Back to top button